আমি অয়ন। প্রাইভেট ডিটেকটিভ হ্যাটম্যান আমার বন্ধু। তার একটি গোয়েন্দাগিরি কথা নিপুণা আমাকে বলেছে। ডিটেকশন যে কত দারুণ হতে পারে তা আপনাদের জন্য তুলে ধরলাম।...
১.
রয়া। বাসার সবচেয়ে আদুরে সে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রয়ার মা রাংতা একটু পরপর চিৎকার দিয়ে উঠছেন—আমার রয়া! চিৎকারের আগেপরে চিৎপটাং, জ্ঞান হারান।রয়ার মা—একহারা সুন্দরী। পেশায় ডাক্তার। মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এটা বড় বিষয়। ডাক্তারিবিদ্যা এখন কাজে আসছে না।
রয়ার বাবা আবু ইউসুফ পাখি। ফিটফাট স্লিম। ব্র্যান্ডের টি-শার্ট তার পছন্দ। একটি হাসপাতালের মালিক। সম্প্রতি একটি জাহাজ কিনেছেন। এই মুহূর্তে ধন-সম্পদ তার কাছে তুচ্ছ! মেয়েকে আমার চাই। খুঁজে পেতেই হবে।
২.
রাত প্রায় ১২টা। রয়ার মা কিছুটা স্বাভাবিক। বেহুঁশ হওয়ার রেশ কেটে গেছে। আবু ইউসুফ সোফায় বসে জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লেন। চোখ বন্ধ করে থাকলেন কিছুক্ষণ। ভাবছেন, কেউ কিডন্যাপ করেছে! কেন কিডন্যাপ করবে আমার মেয়েকে! আবার ভাবছেন, পালিয়ে গেছে হয়তো! পরক্ষণ ভাবছেন, মেয়ে আমার পালিয়ে যাবে না। পালিয়ে যাওয়ার মতো হলে একবার হলেও তা বুঝা যেত।
মাথায় এবার দারোগার কথাটি বারবার দোল খাচ্ছে। একটু আগে দারোগা এসেছিলেন। দারোগা বলেছেন, মেয়ের বয়স তের, ডেঞ্জারাস বয়স! বিষয়টা তাকে বিষিয়ে তুলছে।
ইউসুফ সাহেব সোফায় শরীর আরও এলিয়ে দিলেন। রাত গভীর হচ্ছে। নীরব সুনসান চারদিক। ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে—টুং... টুং... টুং...।
৩.
কলিংবেল বেজে উঠল।
বুয়া দ্রুত দরজা খুললেন।
দরজা খোলার পর নিপুণা ঢুকল। নিপুণা তিন টিকটিকির একজন। সে হ্যাটম্যানের হয়ে তথ্য কালেক্ট করে। নিপুণার মাথায় একটা হ্যাট।
আবু ইউসুফ এগিয়ে এসে বললেন, নিপুণা তুমি? এত রাতে?
নিপুণা হ্যাটম্যানের দিকে তাকিয়ে বলল, ডিটেকটিভ নিয়ে এসেছি। রয়াকে এখনই উদ্ধার করা হবে।
আবু ইউসুফ হাত বাড়ালেন হ্যান্ডশেক করার জন্য।
হ্যাটম্যানও হাত বাড়াল। আর তাকিয়ে বলল, মেয়ের জন্য খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে। চেহারায় তার ছাপ পড়ে গেছে।
তা হওয়াটা স্বাভাবিক নয় কি?
আপনার চিন্তা কিছুটা কমাতে চাই। তার আগে বলুন, পাহাড়ে উঠা নিশ্চয় আপনার একটা শখ?
আবু ইউসুফ একটু অবাক হলেন। পাহাড়ে উঠা! ব্যপারটা কীভাবে সে জানে!
বললেন, জী আমার শখ। কিন্তু আপনি সেটা জানলেন কীভাবে?
হ্যাটম্যান বলল, এটা খুবই সহজ। পাহাড়ে উঠার কারণে রোদটা গালে তির্যকভাবে বসে গেছে।
কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরের দিকে তাকাল। দেখল, একটা বিড়াল জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে। হ্যাটম্যান সামনে গিয়ে বিড়ালটা ঝপ করে ধরে ফেলল।
হ্যাটম্যান খেয়াল করল, বৃষ্টিতে বিড়ালটি ভিজে গেছে।
বিড়ালটি নিয়ে আগের রুমে ফিরে এলো। এসে আবার বলল—ইউসুফ সাহেব, আজই বুঝি এলেন পাহাড়ের দেশ থেকে?
আবু ইউসুফ আশ্চর্য হলেন। আজব, এ লোক এতকিছু কীভাবে জানে! বললেন, আচ্ছা আপনার সঙ্গে কী আমার নেপাল দেখা হয়েছে?
তা হবে কীভাবে? আমি তো নেপাল যাইনি।
তা না হলে এতকিছু কীভাবে জানেন?
আপনার পাহাড়ে উঠার রোদের কড়া ছাপটা গালে এখনো লেগে আছে। তাই বললাম।
আপনার আই কিউ ভেরি সার্প।
হয়তো! এবার বলুন তো এই বিড়ালটি কি রয়ার?
হুম রয়ার। এটা তার খুব আদরের।
কি রকম আদরের একটু ডিটেইলস বলবেন?
জী বলছি তাহলে—বিড়ালটি তার সবকিছুর সঙ্গী। যেমন পড়ার সময়, খেলার সময়, এমনকি ঘুমানোর সময় এটি সঙ্গে থাকবে।
বিড়ালটি সম্ভবত আপনার মেয়ের স্কুলের গাড়িতেও উঠে যেত স্কুলে যাওয়ার সময়।
জী, রাইট।
দারোগা মইনুল রুমে ঢুকলেন। এসে হ্যাটম্যানের দিকে তাকিয়ে বললেন—এই তো দেখছি প্রাইভেট ডিটেকটিভ সাহেব!
হ্যাটম্যান বলল, আর বলবেন না। শিশুদের কথা শুনলে আমার আর ভালো লাগে না।
কতক্ষণে উদ্ধার হবে তাই ভাবী।
আমিও শিশুদের ব্যাপারটা মানতে পারি না।
আমি একটা বিষয়ে একটু হেল্প চাইব।
কি হেল্প করতে পারি আপনাকে?
যারা টাকা চেয়ে ফোন দিয়েছিল, আপনি কি তাদের মোবাইল লোকেশনটি পেয়েছেন?
হুম, পেয়েছি।
ওকে, গুড।
হ্যাটম্যান মোবাইলের স্ক্রিনে কল লোকেশনগুলো দেখে নিল। তিন সেকেন্ডের মতো চোখ দুটি বন্ধ করল। তারপর পাশের রুমে ঢুকল।
৪.
হ্যাটম্যানের প্যান্টে একাধিক পকেট। পকেটে ডিটেকশন করার অনেক জিনিসপত্র থাকে। একটি সাদা কাগজ বের করল পকেট থেকে। কাগজটির ভাঁজ খুলে রাখল টেবিলের ওপর। বিড়ালটিকে সাদা কাগজের ওপর হাত দিয়ে ধরল। ধরে বিড়ালের পা থেকে মাটি নিল। মাটির কালার কিছুটা মরীচিকার মতো, কিছুটা লাল।
নিপুণা পাশে দাঁড়িয়ে দেখছে। দেখতে দেখতে বলল, একটা প্রশ্ন করতে পারি?
অবশ্যই করতে পার?
মাটির রংটা কি একটু লাল?
হুম লাল।
বিড়াল তো বাসায় থাকে। তো এর পায়ের মাটি লাল কেন?
এর কারণ হলো, তুমি নিজে একজন ডিটেকটিভ হতে যাচ্ছ, তাই।
রিয়েলি আমি একজন ডিটেকটিভ হব?
হুম, কারণ তুমি সন্দেহ করা শিখে গেছ।
হ্যাটম্যান মাটির নেচার দেখছেন। মাটি শুকনো নয়। নরম মাটি। ভিজা ভিজা। এর কারণ হলো একটু আগে বৃষ্টি হওয়া।
রুম থেকে বের হয়ে হ্যাটম্যান ড্রইংরুমে এলো।
বলল, ইউসুফ সাহেব, ডোন্ট-ওরি। আর দুই ঘণ্টা সময় নিব।
দুই ঘণ্টা! মানে কি?
হ্যাটম্যান কোনো উত্তর দিল না।
নিপুণা ডান হাত তুলে দুই আঙ্গুল দেখিয়ে জবাব দিল—বলল, জী দুই ঘণ্টা!
বিষয়টা এমন যে, তদন্ত করছে যেন নিপুণা, হ্যাটম্যান নয়।
রাংতা পাশে এসে দাঁড়ালেন। আবু ইউসুফ বললেন, আমরা এ নিয়ে খুবই চিন্তিত।
হ্যাটম্যান বললেন, চিন্তা করবেন না, হ্যাটম্যান আছে। চিন্তা হ্যাটম্যানের।
দারোগা মইনুলের দিকে তাকিয়ে বলল, নিশ্চয়ই টাকা দাবিকারীদের গ্রেফতার করার ব্যবস্থা নিচ্ছেন?
দেখি কি করা যায়।
এখানে আর দেরি না করে হ্যাটম্যান রওনা দিলো আসল উদ্দেশ্যে।
নিপুণা বলল, আমি?
হ্যাটম্যান বলল, ডিটেকটিভ হওয়ার প্রবল আগ্রহের কারণে তুমি আমার সঙ্গে যাবে।
নিপুণা হাত তুলে সবার দিকে ভিক্টরি চিহ্ন দেখাল।
৫.
হ্যাটম্যান বলল, নিপুণা তোমার সাহস কেমন?
আমার সাহস কখনো পরীক্ষা করার সুযোগ পাইনি। তবে তেলাপোকা আর টিকটিকি আমার খুব ভয়।
এখনো টিকটিকি তুমি ভয় পাও? যেখানে তুমি নিজে টিকটিকির কাজ কর!
আপনার সাহায্য পেলে আমি...।
ওকে, ভয়ের কারণ নেই। এখানে তেলাপোকা ও টিকটিকি কোনোটাই নেই। সুতরাং ধরে নিতে পারি তোমার সাহসের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে।
আমাকে কি কাউকে ঘুষি মারতে হবে?
শুধু ঘুষি নয়, প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকতে হবে।
ওকে, তাই হবে। তারপর হ্যাটম্যানের দিকে তাকিয়ে বলল, দেখেন তো আমাকে কেমন লাগছে?
একেবারে ভল্লুকের মতো দেখতে।
কিডন্যাপাররা কি ভল্লুক ভয় পায়?
ভয় পাইলেও পাইতে পারে। তবে আমি তোমাকে এই বক্সটি প্রেস করার জন্য বলব। এই বলে একটি ছোট বক্স দিল।
এটা কীভাবে করতে হয়?
খুব ইজি। তুমি শুধু এই বাটনটা চেপে ধরবে। আর তখনই দেখবে ভল্লুকের মতো করে ডাকছে। আর আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে ওরা তোমার দিকে মনোযোগ দিবে। আমরা তখন ওদের পেছন দিক দিয়ে এসে হিট করব।
খুবই এক্সাইটেড লাগছে নিজেকে!
অবশ্যই তাই। তুমি ডান দিকের পাহাড়টায় পেছনদিক দিয়ে উঠে বাটন টিপবে। আমরা তোমার ভল্লুকের ডাকের জন্য অপেক্ষা করব এবং একশনে যাব। আমরা সবাই তোমাকে ফলো করব। সুতরাং তুমি পাহাড়ে একা আছ, এটা মনে করে ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
আমার সঙ্গে কেউ না থাকলেও ভয় পাব না আশা করি। অলরেডি বুঝতে পেরেছি তোমার সাহস বেড়েছে। তুমি এখনই মুভ কর।
ওকে, আমি মুভ করলাম।
৬.
পাহাড়ে উঠে নিপুণার প্রথমে একটু ভয় করছিল। বাটন টিপতে পারছিল না। পরে ঠিক মতোই বাটন টিপে ধরে। বাটন টিপার সঙ্গে সঙ্গে হ্যাটম্যান দেখতে পেল কিডন্যাপার একজন ভল্লুকের ডাক শুনতে বের হয়েছে। চোখ বড় বড় করে ভল্লুকের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে।
হ্যাটম্যান আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে সামনে এগিয়ে গেল। আর সঙ্গে সঙ্গে প্যান্টের পকেট থেকে লোহার স্টিকটা বের করে হাতে নিল। পেছনদিক দিয়ে কিডন্যাপারদের ঠিক কাছাকাছি এলো। এসেই দেখল, সে ভল্লুকের দিকে পিস্তল তাক করছে। হ্যাটম্যান দেখল, গুলি করা হলে নিপুণা মারা পড়বে। তাই আর এক মুহূর্তও দেরি করল না। হ্যাটম্যান লোহার স্টিক দিয়ে ঠাস করে পিস্তল তাক করার মাথায় আঘাত করল। পিস্তলটি মাটিতে পড়ে গেল। হ্যাটম্যান সেটি তুলে নিল।
ওরা তিন জন। অন্য দুই জনের হাতে দুইটি চাকু ছিল। একজন চাকু ছুড়ে মারল। হ্যাটম্যান সতর্ক ছিল। এ রকম কিছু একটা ঘটতেই পারে। তাই চাকু মারার সঙ্গে সঙ্গে মাথাটা বাঁকিয়ে নিল বামদিকে। আর চাকুটা উড়ে চলে গেল পেছনে।
হ্যাটম্যান বলল, আর বৃথা চেষ্টা করে লাভ নেই। হ্যান্ডস আপ! একটুও নড়ার চেষ্টা কর না।
ওরা হাত উপরে তুলল।
এর মধ্যে নিপুণা চলে এলো। নিপুণার পেছনে এলো ডিবি পুলিশের একটা টিম। ডিবি পুলিশ ওদের গ্রেফতার করলেন। হ্যাটম্যান আগেই ডিবি পুলিশকে ইনফর্ম করেছিল। ওরা যেন সঠিক সময়ে এসে হাজির হতে পারে।
নিপুণা বলল, রয়া কোথায়?
হ্যাটম্যান সামনের পাহাড়টি দেখিয়ে বলল, পাহাড়ের ওই বাঁকটায় তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
অপেক্ষা!
হ্যাটম্যান এটা খুব ভালো পারে, চরম মুহূর্তে রসিকতা করা।
বলল, শত্রু যখন খাঁচায় বন্দী হয়, ভিকটিম তখন বান্ধবীর জন্যই অপেক্ষা করে।
নিপুণা এক লাফে বাঁকটায় চলে গেল। গিয়ে দেখল, রয়ার মুখ টেপ দিয়ে আটকানো। হাত দুটি পেছনে বাঁধা।
দ্রুত মুখের টেপটা খুলে দিল।
রয়া চিৎকার দিয়ে উঠে, নিপুণা আপি! ওরা আমাকে মেরে ফেলবে! আমাকে নিয়ে চল।
ডোন্ট-ওরি! কিডন্যাপাররা আমাদের হাতে ধরা পড়েছে। ওদের আর কিছুই করার ক্ষমতা নেই। বলতে বলতে রয়ার হাত দুটি খুলে দিল।
রয়া নিপুণাকে জড়িয়ে ধরল। তার চোখ দিয়ে আনন্দাশ্রু পড়ছে।
রয়া বলল, নিপুণা আপু তুমি কীভাবে জানলে ওরা আমাকে এখানে এনেছে?
আমি নই। জেনেছে হ্যাটম্যান।
হ্যাটম্যান!
ইয়েস ডিটেকটিভ হ্যাটম্যান।
হ্যাটম্যান এসে দাঁড়াল। বলল, এ কৃতিত্ব নিপুণারও।
রয়া বলল, আর ইউ হ্যাটম্যান?
নো, আই অ্যাম ম্যান। হিউম্যাম।
এরপর ঘড়ি দেখে বলল, আমাদের এখনই বাসায় ব্যাক করা উচিত। কারণ, দুই ঘণ্টা সময় শেষ হতে আর বেশি বাকি নয়। রয়া বলল, দুই ঘণ্টা!
হুম আমরা তোমার বাবাকে বলেছিলাম দুই ঘণ্টার মধ্যে তোমাকে হাজির করব।
নিপুণা বলল, ও তাই তো!
সবাই রয়ার বাসার দিকে রওয়ানা দিল।
৭.
রয়াদের বাসার ছাদে রয়ার বন্ধু অমিতা, টগর, আরিসা, নিপুণা এসেছে। হ্যাটম্যানকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু অন্য এসাইনমেন্ট থাকায় তার আসা হয়নি।
সবাই বসলে আরিসা প্রথমে জানতে চাইল, কেন তারা তাকে কিডন্যাপ করেছে?
রয়া বলল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে বিদেশ পাচার করে নিয়ে যাওয়া। সকাল হওয়ার আগেই আমাকে ওরা অন্য দেশে নিয়ে যেত।
ও মাই গড! সবাই চিৎকার দিয়ে উঠল।
নিপুণা পুরো অপারেশনটা হ্যাটম্যানের কাছ থেকে জেনে নিয়েছে। যদিও সে অনেককিছু প্ল্যানের সঙ্গে সে ছিল। নিপুণা সবাইকে কীভাবে উদ্ধার করা হলো তা বলল।
টগর জানতে চাইল, হ্যাটম্যান কীভাবে শিউর হলেন যে, রয়াকে কিডন্যাপ করে লালমাই পাহাড়ে রাখা হয়েছে? বৃষ্টি হওয়ায় বিড়ালের পায়ে পাহাড়ের লাল মাটি লেগেছিল।
তার মানে বিড়ালটা কি রয়ার সঙ্গে চলে এসেছিল?
ঠিক, বিড়ালটা রয়াকে এত পছন্দ করে যে রয়াকে কিডন্যাপ করার সঙ্গে সঙ্গে ওদের গাড়িতে বিড়ালটা লাফিয়ে উঠে পড়ে। যা কিডন্যাপাররা খেয়াল করেনি।
অমিতা বলল, তাহলে বিড়াল আবার বাসায় ফেরত এলো কেন? তখন খুব বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সঙ্গে তুফানও ছিল। তাই সেটি পাহাড়ের ওখানে না থাকতে পেরে বাসায় ফিরে আসে।
অমিতা আবার বলল, বিড়ালটা তাহলে কীভাবে বাসা চিনল?
সেটা একটা রহস্য! আমি হ্যাটম্যানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। বলল, এটা বিড়ালের আশ্চর্য রকম এক ক্ষমতা। বিড়ালকে নাকি বস্তায় ভরে কয়েক মাইল দূরে রেখে এলেও সে আবার বাসায় ফেরত আসে। তার মালিককে সে ঠিকই চিনে নিতে পারে।
অমিতা বলল, ভেরি ইন্টারেস্টিং!
আরিসা বলল, কিডন্যাপররা যে টাকা চেয়েছিল?
ওরা ছিল ভুয়া কিডন্যাপার। বিড়ালের পায়ের লাল মাটি আশপাশে শুধু লালমাই পাহাড়েই আছে। হ্যাটম্যান মোবাইল লোকেশন নিয়ে দেখেন, ওরা লালমাই পাহাড় থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে। তার মানে হলো ওরা আসল নয়। ওরা হয়তো কোনোভাবে জানতে পেরেছে রয়া কিডন্যাপ হয়েছে। আর এই সুযোগেই ওরা টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল।
সবাই বলল, ও মাই গড!
অমিতা বলল, হ্যাটম্যানকে একবার দেখতে যেতে হবে।
সবাই বলল, চল তাহলে একদিন যাই।
এরমধ্যে রয়ার বিড়াল এসে রয়ার কাঁধে লাফিয়ে উঠল।
সবাই চিৎকার দিয়ে উঠল। বলল, মিউর সঙ্গে সেলফি তুলব।
ক্লিক ক্লিক ক্লিক...।
আমার গল্প বলা শেষ। আমি এখন বাজারে যাব। ভাবছি, একটা মিউ কিনব। আমার সঙ্গে কে কে যাবে?