আমার বাবা মা এক ছাদের রৌদ্রের নিচে থাকে।
ইশু ছাড়া কথাই বলে না।
হঠাৎ কখনো দু’জনের একজন যদি বলে ফেলে
: দ্যাখো, সুন্দর সকাল, ঝকঝকে রোদ।
অন্যজন প্রকৃতির এই সংবাদ শুনে নড়ে না চড়ে না,
রোদ যদি সত্যি হয়!
সত্যের দুঃখ অনেক।
ইশুর অভাব হলে দুইজন ছটফট করে।
বাবা গ্লাস ভাঙে, মা ভাত পোড়ায়।
সেদিন খাবার টেবিলে একটি ইশু উড়ে এলো, খুব কড়া ইশু।
‘কোনটি সঠিক? ঐক্যমত্য নাকি মতঐক্য?’
শুরু হলো কথা দিয়ে কাঁটাতারের বুনন।
‘ঐক্য হলেই না মত তৈরি হবে?’
‘না না একমত না হলে কীভাবে ঐক্য হবে?’
সারা বাড়ি ভরে গেল কাঁটার স্তূপে। দরজা জানালা ভেঙে ‘ঐক্য’
আর ‘মত’ ছুটে গেল পথে পথে। তাদের ধাক্কায় মানুষরা প’ড়ে গেল
হাপরে ফাঁপরে। মতামতের ঝড়ে বাড়ির একটি চেয়ারের
দুই পা ভেঙে গেল। আমি উড়ে গেলাম মেঘের দিকে।
অনেক মিডিয়া কভারেজ হলো।
মধ্যরাতে অনেক টক শো হলো।
কখনো কখনো সারাদিন মৌনতার প্রকাশ্য উল্লাসে
বাড়িতে বরফ পড়ে। আমি শীতে কাঁপতে থাকি।
হিম নামে নাগরিক ধমনীতে।
মনে হয়, এখনই শুরু হবে প্রচণ্ড তুষার ঝড়।
আমি তন্ন তন্ন করে একটি পুষ্পিত ইশু খুঁজি।
শুনবার পর যদি দুইজন একসঙ্গে হেসে দেয়
আমি একটু উষ্ণ হতে পারি।