শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

চন্দন কাঠের চাবি

গল্প ♦ আফরোজা পারভীন

চন্দন কাঠের চাবি

লাল ফিতেয় বাঁধা কৌটোটার মুখ খোলে বীথি। একঝাঁক সুবাস ঝাঁপিয়ে পড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ওকে। ওর মনে পড়ে সেদিনটার কথা। যেদিন মা চাবিটা এনে ওর হাতে দিয়ে বলেছিল,

: শুকে দেখ বীথি কি সুবাস!

বীথি চাবিটা নাকের সামনে ধরেছিল ঠিকই কিন্তু সুবাস নেয়নি। ওর মন ছিল ভারাক্রান্ত। প্রথমবার বিদেশে গেল মা। হোক না ইন্ডিয়া, তবু তো বিদেশই। এর আগে মা প্লেনে চড়েনি। বীথি ভেবেছিল কত কিছু না জানি তার জন্য আনবে মা। জামা, জুতা, খেলনা, তা নয় আনল একটা চাবি। চাবি দিয়ে কি করবে সে? তার না আছে নিজের আলমারি, না সুটকেস। অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে কাপড় রাখতে হয় তাকে। কখনো আলমারিতে কখনো আলনায়। তা এ চাবির ওর কি দরকার। কিসের চাবি এটা?

অভিমানী কণ্ঠে বীথি বলেছিল,

: এটা কিসের চাবি মা, এ চাবি দিয়ে আমি কি করব। আমার তো আলমারি, সুটকেস কিছুই নেই?

মা হেসেছিল।

: আরে পাগল এটা সে চাবি না। এটা হলো সংগ্রহের জিনিস। মাঝে মাঝে দেখবি আর গন্ধ নিবি তুই। মার কথা মোটেও পছন্দ হয়নি বীথির। চাবির গন্ধ নিয়ে সে কি করবে। কি কাজে লাগবে এ চাবি!

তার! বড় বোন সিঁথি ততক্ষণে মার আনা কানের দুল আর মালা পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘুরে ঘুরে নিজেকে দেখছে। বীথি মনে মনে গুমরায়। ওর বেলায় মালা, কানের দুল আর তার বেলা চাবির রিং। এটা খুব খারাপ। মা এমন কেন!

বীথির মন খারাপ ছিল অনেক দিন। চাবিটা অবহেলায় পড়েছিল ড্রেসিংটেবিলের ওপর। ধুলা জমছিল চাবির গায়ে। তা দেখে দুই-একদিন মা বলেছেন,

: কত ঘুরে খুঁজে খুঁজে চাবিটা আনলাম তুই গন্ধ ভালোবাসিস তাই। আর তুই কিনা ওটা অবহেলায় ফেলে রাখলি।

মার কণ্ঠেও অভিমানের ছোঁয়া। একসময় মাও চাবির খোঁজ করা ছেড়ে দিয়েছেন। ততদিনে সিঁথির কানের দুলের একটা হারিয়ে গেছে, মালাও গেছে ছিঁড়ে। সেদিন ড্রেসিংটেবিল গোছাতে গিয়ে সিঁথি চাবিটা নাকের সামনে ধরে গন্ধ টেনে নিয়ে বলল,

: বাহ! কি সুগন্ধ। চন্দন কাঠের চাবিটা তো তুই ফেলে রেখেছিস। আমি নিই?

ছুটে আসে বীথি।

: কেন তুই নিবি কেন। মা তোর জন্য কানের দুল, মালা, কত কিছু এনেছে। আর আমার জন্য শুধু এই একটা চাবি। তাও তুই নিতে চাস কেন? তুই তো বড় খারাপ। দে, চাবিটা দে।

চাবিটা বড় বোনের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল প্রায়। আর ছিনিয়ে নিয়ে নাকের সামনে ধরে টান দিতেই একঝাঁক সুগন্ধ ভাসিয়ে নিয়েছিল তাকে। মাতোয়ারা হয়েছিল সে। এত সুগন্ধ এই চাবিটায়! মা-তো ভালো জিনিস এনেছে। রাতে মাকে জড়িয়ে ধরে বীথি বলেছিল,

: মা চাবিটা খুব ভালো, দারুণ সুগন্ধ!

মা অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। তারপর খুশি মুখে বলেছিল,

: এতদিনে বুঝলি তাহলে। তোর মন খারাপ হতে দেখে আমার যে কী খারাপ লেগেছিল। চন্দন কাঠের চাবি তো তাই অত সুগন্ধ।

: মা ওই গন্ধ চলে যাবে না তো?

: আরে না।

কিন্তু আশ্বস্ত হয়নি বীথি। বাইরে পড়ে থাকতে থাকতে যদি চাবির গন্ধ নষ্ট হয়ে যায়। ও মনে মনে খুঁজতে থাকে একটা কৌটা, যাতে চাবিটা আটকে রাখা যায়। একদিন মায়ের হাতে লাল ফিতেয় জড়ানো একটা মুখবন্ধ কাচের কৌটা দেখে বীথি চেয়ে নেয় কৌটোটা। মা হাসেন।

প্রশ্ন না করেও বোঝেন মেয়ে কেন কৌটোটা তার কাছ থেকে নিল। বীথি চাবিটা কৌটায় রেখে মুখ বন্ধ করে দেয়। মাঝে মাঝে কৌটার মুখ খোলে আর বুক ভরে সুবাস নেয়। আজও সে গন্ধ পেল বীথি, সেদিনের সেই সুবাস পেল। নস্টালজিক হতে হতে নিজেকে সামলালো বীথি। প্রবাসের এই জীবনে স্মৃতি নিয়ে সময় কাটানোর অবকাশ নেই। এখনই ছুটতে হবে কাজে, দেড়শ মাইল দূরের কর্মস্থলে। ঘড়ির কাঁটা ধরে গাড়ি থেকে নামবে, ট্রেনে উঠবে, কর্মক্ষেত্রে ঢুকবে, কাজ সারবে, আবার ঘড়ির কাঁটা ধরে অনেক রাতে বাড়িতে ফিরবে। এই তো জীবন। এর বিনিময়ে পেট্র ডলার, পাউন্ড, সুখ, শান্তি, স্বাচ্ছন্দ্য। আসলেই কি আসে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য? স্বাচ্ছন্দ্য আসে ঠিকই কিন্তু সুখ, শান্তি! সুখ, শান্তির সংজ্ঞা নিয়ে নাড়াচাড়া করার আগেই ওর মনে পড়ে গাড়িতে ওঠার কথা। হ্যাঁ, গাড়িতে চলার সময়টা নিজের, কিন্তু নিজে ড্রাইভ করতে হয় বলে মনোযোগ রাখতে হয় গাড়ি চালনার দিকে। ভাবনার কাছে নিজেকে সমর্পণ করার সুযোগ নেই। তবু ভাবে বীথি। বিয়ে করে নিউইয়র্কে এসে স্বামী-স্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করায় স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে জীবনে। কিন্তু আত্মপরিচয়টুকু গেছে চুকে। ঢাকার সেই জীবনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, ভালো লাগা-মন্দ লাগা নিয়ে নিজের যে একটা পরিচয় সে পরিচয়টা এখানে নেই। ঘরের তিনজন আর বাঙালি কমিউনিটির কিছু লোক ছাড়া কে চেনে তাকে, কে জানে। এখানে তার পরিচয় জীবন-জীবিকার সন্ধানে আসা একজন অভিবাসী। একসময় সে লেখক হতে চেয়েছিল, শিল্পী হতে চেয়েছিল কিংবা বড়সড় একটা চাকরি করে নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে চেয়েছিল। যেন ওকে দেখিয়ে সবাই বলে, ওই যে যায় বীথি আহমেদ, উনি একজন বিশিষ্ট... এ ভাবনার কোনোটাই পূরণ হয়নি। এখন এসব ভাবনা তার স্বপ্ন বা কল্পনায়ও নেই। সে এখন একজন ওয়ার্কার। সারা দিন একটা দোকানে কাজ করে আর তার বিনিময়ে ডলার পায় এই তো।

ঢাকায় গেলে অনেকেই তাকে সমীহের চোখে দেখে। বিদেশফেরত বলে আত্মীয়রা বাড়তি খাতির করে, দাওয়াত খাওয়ায় একবেলা। যাওয়ার সময় আত্মীয় আর বন্ধু-বান্ধবের জন্য দামি গিফট নিয়ে যায়। তাতে বীথির ওজন বাড়ে। ওরা ভাবে বীথি কত ভালো আছে, কত সুখে আছে। বিদেশে যানজট নেই। হরতাল, অবরোধ, বোমাবাজি নেই, নিরুপদ্রব নিশ্চিন্ত জীবন। বীথি ওদের কাছে আলগোছে তার লং আইল্যান্ডের ছবির মতো বাড়ি, সবুজ ঘাসে ছাওয়া লন, সুইমিংপুল আর গাড়ির গল্প করে। নিজেদের ভাগ্যকে দোষারোপ করে ওরা। কেন সময় থাকতে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল না, সে কথা ভেবে হাহুতাশ করে। মনে জ্বালা রেখে বীথির দিকে হাসিমুখে তাকায়। বীথি সোৎসাহে বলে চলে নিজের আর স্বামীর চাকরি, ছেলের পড়াশোনা সম্পর্কে। বীথির ছেলে অনিমকে ভালো রেজাল্ট করায় প্রেসিডেন্ট প্রশংসাপত্র দিয়েছে একথা শুনে ওরা বিস্ময়মিশ্রিত চোখে তাকায়। এভাবেই চলছে। একসময় বীথি নিজের মুখোমুখি হয়ে ভাবে, আসলেই সে কতটা সুখী!

ভাবনা শেষ হওয়ার আগেই ট্রেন স্টেশনে এসে পড়ে। বীথি গাড়ি পার্ক করে। দৌড়াতে দৌড়াতে প্লাটফর্মে ঢোকে। দৌড়ের মাঝেই হাতে একটা বার্গার তুলে নেয়। ট্রেন আসামাত্র লাফিয়ে ওঠে। এটাই এখানকার জীবন। আস্তে চললে পিছিয়ে পড়তে হবে যে। ট্রেনে দাঁড়িয়ে বীথি ভাবে প্রথম যেদিন ও ঢাকার বাসে উঠেছিল সেদিনের কথা। ওর মনে ছিল প্রচণ্ড ভয়। ঠিকমতো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিল না। প্রচণ্ড ভিড় ছিল বাসে। বাবা বলছিলেন, ‘আমাকে শক্ত করে ধরে দাঁড়াও।’ বাসের দুলুনিতে দুলছিলেন বাবাও। পা টলছিল তার। বাবা বেশ বড় একটা চাকরি করতেন। রাজনৈতিক কারণে তখন ওএসডি। প্রচণ্ড দারিদ্র্য ওদের। রিকশার ভাড়া দেওয়ার পয়সা ছিল না। বীথি এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল, যদি একটা সিট খালি পাওয়া যায়। এই ট্রেনে ভিড় নেই, অনেক সিট খালি, তারপরও বীথি বসে না। বীথি কেন, অনেকেই বসে না। দাঁড়ায় আর দৌড়ায়।

তৌফিক বীথির পেনফ্রেন্ড। একসময় প্রেমে পড়ে যায় দুজন। ওর সঙ্গে বিয়েতে প্রচণ্ড অমত ছিল মায়ের। নিজের পিতৃকুল নিয়ে বরাবরই গর্ব ছিল মায়ের। কিন্তু সেই গর্বের উপযুক্ত করে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা কখনই করেননি। উল্লেখ করার মতো কোনো আত্মপরিচয় মায়ের নিজের ছিল না। বীথি ভেবেছিল মা আপত্তি করবেন বড় বোনের আগে ছোট বোনের বিয়ে নিয়ে।

তাছাড়া আপত্তির আর একটা কারণ তৌফিকের চাকরি। সে একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু মা বেঁকে বসেছিলেন তৌফিকের ফ্যামিলি ভালো নয় বলে। তখন বাঁচিয়ে দিয়েছিল তৌফিকের বিদেশের চাকরি। ছেলে বিদেশে চাকরি করে শুনে মা মত দিয়েছিলেন। বিদেশ সম্পর্কে মোহগ্রস্ততা মায়েরও ছিল। কি চাকরি করে সেটাও খোঁজ নেননি। বিয়ে করে নিউইয়র্ক চলে এসেছিল বীথি। কিছু প্রিয় জিনিসের সঙ্গে নিয়ে এসেছিল কৌটায় রাখা চন্দনের চাবিটা। ঘর বেঁধেছিল লং আইল্যান্ডে। চাবিটা রেখেছে ড্রেসিংটেবিলের ড্রয়ারে। তারপর টানা তিরিশ বছর।

এই তিরিশ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বাবা তার চাকরি ফিরে পেয়ে রিটায়ার্ড করেছেন। বড় বোনের সংসার ভেঙে গেছে, অতি আদরে ভাইটা বখে গেছে। সে এক বিদেশিনীকে বিয়ে করে জাতে ওঠার চেষ্টা করছে। সরকারি একাধিক প্লট পাওয়ায় ওদের গাড়ি বাড়ি হয়েছে। আগের সেই দারিদ্র্য এখন নেই। অনেক বড়লোক হয়ে গেছে তারা। মা মারা গেছেন, বাবা মরতে মরতে বেঁচে উঠেছেন। দুই বছর পর একবার দেশে যায় বীথি, বাবা আসেন দুই বছর পর পর। মাঝে মাঝে যোগাযোগ হয় টেলিফোনে। আর এখন ফেসবুক তো সারাটা পৃথিবী একাকার করে দিয়েছে, দূর হয়েছে নিকট, নিকট হয়েছে নিবিড়। বীথি গন্তব্যে পৌঁছে ঘড়ির দিকে তাকায়। সময় ঠিক আছে। ভিতরে ঢোকে, খাতায় সই করে। তারপর কাজে লেগে যায়। দুপুরে ব্রেকে সামান্য কিছু খেয়ে আবারও কাজ।

কাজ শেষে বাসায় ফেরে বীথি। ওর বাড়িটা আইল্যান্ডের একেবারে উপরে। বারান্দায় বসে নিচে দোল খেতে দেখে দ্বীপের জলরাশিকে। মুগ্ধতায় ভরে ওঠে মন। কিন্তু চমকে ওঠে হঠাৎ। কেমন যেন আওয়াজ হয় একটা। দ্রুত খাওয়া সারে। খাওয়ার পর টেলিভিশনের সামনে বসে। আবহাওয়া বার্তায় বারবার জানানো হয়, প্রচণ্ড স্যান্ডি ধেয়ে আসছে আমেরিকার ওপর।

সবাইকে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়। বীথি তৌফিক আর অনিমকে নিয়ে সামান্য কিছু জিনিসসহ গাড়িতে ওঠে। যত দ্রুত সম্ভব সরে যায় দূরে, নিরাপদ স্থানে। পেছনে পড়ে থাকে একটু একটু করে সাজানো ঘরবাড়ি, সংসার, আসবাবপত্র, গাড়ি। যার প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে মিশে আছে অনেক মমতা আর ভালোবাসা। তারপর দীর্ঘ অঠারো দিন এক আত্মীয়ের বাড়িতে অনিশ্চিত জীবন কাটিয়ে ফিরে আসে নিজের বাড়িতে। বীথি ভাগ্যকে ধন্যবাদ দেয় এই ভেবে যে, তাদের শারীরিক কোনো ক্ষতি হয়নি, তারা বেঁচে আছে, সুস্থ আছে।

গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে বাড়িতে ঢোকে বীথি। পানির তোড়ে ভেঙে পড়েছে বাড়ির সদর দরজা। স্রোত বয়ে গেছে ঘরজোড়া কার্পেটের ওপর দিয়ে। পানি ঢুকেছে টিভি, ল্যাপটপ, ফ্রিজে। সবই বোধহয় নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুই আর কাজে লাগবে না। নরম মনের মানুষ তৌফিক দীর্ঘশ্বাস চেপে রাখতে পারে না। একটা করে জিনিস দেখে আর বলে,

: দেখ বীথি, কি অবস্থা! কত কষ্ট করে কিনেছিলাম জিনিসগুলো। সব শেষ হয়ে গেছে।

বীথি কিছু বলে না। সব পেছনে ফেলে ও ছোটে ড্রেসিংটেবিলের দিকে। ওর বুক কাঁপে। একটানে খোলে ড্রয়ার। চোখ বন্ধ করে ফেলে। লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে চোখ খোলে। চোখ খুলে তাকিয়ে থাকে লাল ফিতে জড়ানো কৌটোটার দিকে, তাকিয়েই থাকে। কৌটার মাঝ বরাবর পানির দাগ। অর্থাৎ ওই পর্যন্ত পানি উঠেছিল। ছোঁ মেরে কৌটোটা তুলে নেয় হাতে। হ্যাঁচকা টানে মুখ খুলে এক ঝটকায় বের করে চাবিটা। নাকে চেপে ধরে। তারপর লম্বা একটা শ্বাস নেয়। শ্বাস ফেলে ধীরে ধীরে। আনন্দমাখা চোখে জল নিয়ে শ্বাস ফেলে। নাহ! একটুও কমেনি গন্ধ, একদম ঠিক আছে আগের মতো। পানি ঢোকেনি এ কৌটায়। বীথি  চাবিটা হাতে নিয়ে বারবার নাকে মুখে বুলায়, বুকে চেপে ধরে। বীথি বিড় বিড় করে,

: এটা তো চাবি নয় এটা আমার মায়ের স্পর্শ, আমার শৈশব, আমার মমতাময়ী মায়ের প্রতীক। মা আমি শুধু আমার শৈশব নয়, তোমাকেও বন্দী করে রেখেছি এই কৌটায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর