শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
স্মৃতি

অবিস্মৃত স্মৃতি কথা

শওকত আলী

অবিস্মৃত স্মৃতি কথা

আমি যখন মায়ের পেটে, তখন আইন পরিষদ (এমএলএ) নির্বাচনের খুব সাড়া পড়ে গিয়েছিল। সেবার বাংলার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এ কে ফজলুল হক। আমার মা ফজলুল হকের খুব ভক্ত ছিলেন। আমার বাবা যদিও কংগ্রেস করতেন, সেবার ভোট দিয়েছিলেন ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির এমএলএ কাদের বখস উকিলকে। নির্বাচনী হাওয়া আমাদের অখ্যাত-অজ্ঞাত রায়গঞ্জের মতো শহরেও পড়েছিল। রাস্তায় মিছিল করতে করতে জনতা স্লোগান দিত—‘ফজলুল হক দেশের ভাই, তাঁকে ভোট দেওয়া চাই।’ তখন ছিল জোছনালোকিত রাত, এমনই এক রাতে আমার জন্ম হয়। তাই মা আমাকে ‘চাঁদ’ বলে ডাকতেন। বাবা বলতেন, এই নবাগত ছেলে একদিন আমাদের পরিবারের সবার মুখ চাঁদের মতো উজ্জ্বল করবে। আমার জন্ম হওয়াতে বাবা যে খুশি হয়েছিলেন, তার এ কথা থেকে বোঝা যায়।

কিন্তু আমার বাবা ছিলেন উড়নচণ্ডী স্বভাবের। কখন কী করে বসেন, তা নিয়ে আমরা মাঝেমধ্যে চিন্তিত হয়ে যেতাম। এ রকম একটা ঘটনা হলো, আমার জন্মের পর আমার এক বোন জন্ম লাভ করে। এরপর কিছুদিনের মধ্যে মা আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ঠিক তখন আমার মাঝখানের বোনটি কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাবা আমার এ বোনটির মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন আমাকে। তিনি আমাকে অপয়া ভেবে ইন্দারার পাশে বড় বড় শালকচুর মাঝে রেখে আসেন। আমার দাদি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে আমাকে তুলে নিয়ে আসেন এবং মায়ের বুকের কাছে শুইয়ে রাখেন। এরপর দাদি নিজে দরজার কাছে পাহারা দিয়ে বসে থাকেন, যাতে বাবা আবার এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার করতে না পারেন। আমি এসব কথা দাদির কাছ থেকেই শুনেছিলাম।

১৬৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জে আমার জন্ম। বাবার নাম খোরশেদ আলী সরকার। পেশায় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার মায়ের নাম সালেমা খাতুন। তিনি স্কুল শিক্ষিকা। রায়গঞ্জ জায়গাটি ব্রিটিশ আমলে বাংলা প্রদেশের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত একটি থানা শহর। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলে দিনাজপুর জেলাকে দুই ভাগ করা হয়। এর একটা অংশ পড়ে ভারতে, তার নাম দেওয়া হয় পশ্চিম দিনাজপুর; আরেক অংশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ হওয়ার পর এরশাদ সরকার এই দিনাজপুরকে ভেঙে তিনটি জেলায় পরিণত করে—পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর। শুনেছি, ভারতের অংশ পশ্চিম দিনাজপুরকেও তারা দুই অংশে বিভক্ত করেছে—দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুর। অর্থাৎ ব্রিটিশদের সেই দিনাজপুর এখন পাঁচ টুকরো হয়ে গেল। এর অর্থ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক অবস্থানগত বাস্তবতায় কতটুকু পরিবর্তন আসতে পারে, এতে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

আমার বাবার স্বধর্মের প্রতি বিশেষ আস্থা ছিল না। আউল-বাউল, ফকির-দরবেশ, সাধু-সন্ন্যাসীদের জীবনদর্শন তাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করত। সে জন্য তিনি সন্ন্যাসীদের বেশ ধরে আলখেল্লা পরে প্রায়ই ভ্রমণে বের হতেন। একবার ভ্রমণ করতে গিয়ে তিনি রায়গঞ্জ থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন। পরে ওখানে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। ওইখানে একটা নদী আছে, নদীর তীরঘেঁষা সেতুর কাছে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পার্শ্ববর্তী একটা বড় হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং আমাদের বাড়িতে খবর পাঠায়। সেই হাসপাতালের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটলে তার মানসিক প্রতিক্রিয়ারও পরিবর্তন ঘটে। তিনি আর সাধু থাকলেন না। স্কুলে যাওয়া শুরু করলেন। ক্লাস নাইনে পরীক্ষা দিয়ে ক্লাস টেনে উঠলেন। টেস্ট পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন। তারপর সবাই বলতে লাগলেন, বিয়ে দিয়ে দাও। কিন্তু বিয়ে দেওয়ার আগেই তিনি আবারও বেরিয়ে গেলেন। তবে এবার কিন্তু সাধু-সন্ন্যাসীর বেশ ধরে নয়, জামা ও পাজামা পরে। তারপর নানা দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। ওদিকে আমার দাদি বড় ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠলেন। কিন্তু আমার বাবা শর্ত জুড়ে দিলেন—মেয়ে শিক্ষিত হতে হবে ও মেয়ের বয়স ১৫-১৬ বছর বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে।

তখন মেয়েদের ১৩/১৪ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হতো। তাই ১৭/১৮ বছর বয়সী মেয়ে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ল। আমার দাদা-দাদি হন্যে হয়ে সেয়ানা পাত্রী খুঁজতে লাগলেন। কেননা উড়নচণ্ডী ছেলের মন সংসারে ফেরাতে হবে। আমাদের বাড়ির পারিবারিক চিকিৎসক ছিলেন রায়গঞ্জ শহর হাসপাতালের ডাক্তার জগদীশ সেন। আবার তিনি আমার নানা বাড়িতেও রোগী দেখতে যেতেন। তিনিই এ রকম একটা পাত্রীর খোঁজ দিলেন। আমাদের বাড়ি থেকে ৮-১০ মাইল দূরে খুশালডাঙ্গা গ্রামে। আমার নানার নাম ছিল ওয়াদা মোহাম্মদ। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। যথারীতি স্ত্রীর (আমার নানী) বিয়োগ ঘটে। মেয়েটিকে আমার নানা এমন আদর করে রেখেছেন যে, বাইরে কারও সঙ্গে বিয়ে দেবেন না। ঘরজামাই যে থাকবে, তার সঙ্গে বিয়ে দেবেন। কোনো শিক্ষিত বনেদি পরিবারের ছেলে ঘরজামাই থাকতে চাইবে? তাদের পক্ষেও ছেলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছিল। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী আমার নানা ও মামাদের নানা রকম ছেলের খোঁজ দিচ্ছিলেন। আমার নানাবাড়ির অবস্থা ভালো ছিল। জায়গা-জমি ছিল, আয়-রোজগারও ভালো ছিল। আমার বড় মামা পাঠশালার হেড পণ্ডিত ছিলেন, মেজ মামা ব্যবসা করতেন। বড় মামার উদ্যোগেই মা কিছু বই পড়েছিলেন। তখন মা বঙ্কিমচন্দ্রের কয়েকখানি বইও পড়েছিলেন। অবশ্য মা ইংরেজিও জানতেন। অন্য ভাইয়েরাও মাকে খুব আদর করতেন। এদিকে আমার বাবা খবর পেলেন ওখানে একটা মেয়ে আছে। একদিন দুপুরবেলা আমার বাবা সোজা চলে গেলেন আমার নানাবাড়িতে। অবশ্য বাড়ির বাইরে থেকেই ডাকাডাকি শুরু করেছিলেন বাবা। তখন আমার নানা বাড়ির ভিতর দিক থেকে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, কেন ডাকছিলেন? তখন বাবা বললেন, আমি খবর পেয়ে এসেছি আপনাদের বাড়িতে একটি মেয়ে আছে, তাকে নাকি বিয়ে দেবেন। নানা বললেন, হ্যাঁ, বিয়ে দেব; তবে পাত্র কে? আপনি কে? ‘আমিই পাত্র’—বাবার এ কথা শোনার পর নানা ভাবলেন, এ-তো পাগল ছেলে। মেজ মামা হুমড়ি-তামড়ি করতে শুরু করলেন। এরই মধ্যে বড় মামা এসে পড়লেন। বড় মামা বললেন, তুমি যে বিয়ে করতে চাচ্ছ, তোমার পড়ালেখা কতদূর? কী পাস করেছ? বাবা বললেন, আমি পাস পরীক্ষা দিইনি, তবে লেখাপড়া জানি। তারপর বাবা গড়গড় করে ইংরেজি বলতে লাগলেন। উদ্দেশ্য ছিল তিনি যে লেখাপড়া জানেন, তা প্রমাণ করা। তারপর বড় মামা পরিচয় জানতে চাইলেন। কোন বাড়ি, কোন পরিবার, কোন গ্রাম ইত্যাদি বৃত্তান্ত জানার পর বাবাকে বসতে বললেন। তখন শরবত দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। তারাও আমার বাবাকে প্রথমে শরবত দিলেন, তারপর খাবার দিলেন। আমার নানাদের দু-তিনটি টিনের চালাঘর ও একটি মাটির দোতলা ঘর ছিল। সেই ঘরগুলোর একটিতে বাবাকে বিশ্রাম করতে দিলেন। আগেই বলেছি, দুদিকেই খোঁজখবর দিয়েছেন জগদীশ ডাক্তার।

পরের দিন আবার গেলেন বাবা। বাড়ির দরজার দিকে আমগাছ ছিল; আমার মা তখন আম পাড়ছিলেন। বাবা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে মা দৌড়ে বাড়ির ভিতর দিকে চলে গেলেন। বাবা একটা খুঁচি জোগাড় করে আমগুলো ভিতরে নিয়ে গেলে নানা দেখে বললেন, আম? আমার গাছেও তো আম আছে। বাবা বললেন, এটা আপনার গাছেরই আম। আপনার মেয়ে পেড়েছিল। আমাকে দেখে পালিয়েছে। নানা বললেন, পালাবে না, আমি তোমার কাছে বিয়ে দিলে তো। মা শুনে বললেন, আমি তাকেই বিয়ে করব, আপত্তি নেই।

যথারীতি ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে যায়। বউভাতের দিন আমার বাবার প্রতিবেশীদের বউ-ঝিয়েরা নতুন বউয়ের মুখ দেখতে এসে শাড়ি পরার স্টাইল, গয়নাগাটি ইত্যাদি নিয়ে নানা মন্তব্য করতে থাকে। এতে মা মনঃক্ষুণ্ন হন। তবে আমার মা এসব মন্তব্য নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কিছু বললেন না। পরে বাবাকে বললেও তিনি পরামর্শ দিলেন এসব কথায় মনে কষ্ট না নিতে।

যদিও প্রথম দিন বা দ্বিতীয় দিন তাদের বাড়িতে যাওয়ার পর বাবা আমার নানাকে কথা দিয়েছিলেন ঘরজামাই থাকবেন বলে। কিন্তু বিয়ের পর তিনি আর ঘরজামাই থাকেননি; আর আমার নানাও আমার মাকে আমার দাদার বাড়িতে নিয়ে আসতে নিষেধ করেননি। এসব কথা দাদির মুখে শুনেছি। বিয়ের পর আমার মা সংসারে নানা কাজে আমার দাদিকে সাহায্য করতে থাকেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে যেটুকু বিশ্রাম বা সময় পেতেন—এই সময়ে স্বামীর টেবিলে সাজানো বই থেকে বই পড়তেন। মায়ের বই পড়ার অভ্যাস আমার নানার বাড়িতেই গড়ে উঠেছিল। ইংরেজি বইও পড়তে পারতেন। অবশ্য পরে মাকে ইংরেজি বই পড়াতে স্থানীয় একজন খ্রিস্টান মহিলাকে ঠিক করে দিয়েছিলেন বাবা। ওই মহিলা মেয়েদের মিশনারি প্রাইমারি স্কুলে পড়াতেন। রোজ বিকেলে ফেরার পথে তিনি মাকে পড়া দেখিয়ে দিয়ে যেতেন। একজন খ্রিস্টান মহিলার সঙ্গে এভাবে মুসলমান নববধূর মাখামাখি ভাব দেখে স্থানীয় মুসলমান নর-নারীরা ভালো চোখে নেননি। তারা আমার দাদির কাছে এসে নানা বিরূপ মন্তব্য করতেন। তবে বাবা ও দাদি এসব কথা কানে তুলতেন না। যার ফলে আমার মায়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়নি কোনো দিন।

রায়গঞ্জে আমাদের বাড়িটি ছিল বড় সড়কের পূর্বদিকে অনেকখানি জায়গাজুড়ে। প্রায় ছয়-সাত বিঘা হবে। বাড়িতে তিনটি পুকুর আর তিনটি বাগান ছিল। একটি বাগান অনেক বড় ছিল। এজন্য স্থানীয় লোকেরা বাগানওয়ালা বাড়ি বলে চিনত আমাদের বাড়িটিকে। বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে সবজি চাষের জন্য ও বীজ ফলানোর জন্য কয়েকটি উঁচু ভিটে ছিল। সেগুলোর কোনোটিতে সবজি চাষও করা হতো। আমাদের বাড়ির ঘরগুলোতে খড়ের ছাউনি ছিল। সেই খড়ের চালের নিচে ছিল কাঠ দিয়ে তৈরি ছাদ, সেখানে মালামাল রাখার ব্যবস্থা ছিল। বিশাল আকারের একটা বারান্দা ছিল। শুনেছিলাম, আমাদের বাড়িতে টিনের ঘর ছিল একটাই। সে ঘরটি বড় ছেলে হিসেবে আমার বাবাকে দাদা-দাদি থাকতে দিয়েছিলেন। অথচ ওই থানা শহরে বহু পাকা বাড়ি ছিল। আমাদের বাড়িতে সঙ্গতির অভাব থাকায় পাকা বাড়ি তোলা হয়নি, এটা কেউ বিশ্বাস করত না। এ ক্ষেত্রে ইট-সুরকি-চুন দিয়ে পাকা বাড়ি বানানোটা নাকি আমাদের পূর্বপুরুষদের পছন্দ ছিল না।

এভাবে ঘর তৈরির ক্ষেত্রে এঁটেল মাটি কেটে প্রথমে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা হতো। তারপর পা দিয়ে মলা হতো, রুটি বানানো হয় যেভাবে, সেভাবে দলা করা হতো। তার দু-তিন দিন পর কেটে কেটে নিয়ে দেয়াল বানানো হতো। কেউ কেউ সেই মাটির সঙ্গে তুষ, ধানের চিঁটা, উলু খড়ের কুচি বা গোবর মেশাত। এতে নাকি দেয়াল টেকসই ও মজবুত হয়। তারপর কাঠ, বাঁশ দিয়ে ছাদ পাতা হতো। সেই ছাদের ওপর দেওয়া হতো এঁটেল মাটির দলা। শুকালে তা পাকা বাড়ির ছাদের মতোই দেখতে লাগত। এই ছাদের ওপর মালপত্র রাখা হতো, কোনো কোনো ঘরে মেহমান ঘুমাত। চার চালের কোঠাঘর, সেই ঘরের চাল ছাইতে ঘরামি (শ্রমিক) আসত মালদহ থেকে। চাল করার জন্য উলু খড় কেটে মাচার ওপর রাখা হতো। শুকালে ছোট ছোট আঁটি বেঁধে ছাউনিটা পুরু করা হতো পুরো একহাত। চার-পাঁচজন ঘরামির একটি কোঠা ঘরের চাল করতে (ছাইতে) দুই-তিন সপ্তাহ লেগে যেত।

এখনো রাজশাহী অঞ্চলে খুঁজলে দু-একটি বাড়িতে কোঠাঘর দেখা যায়। এই ঘর নির্মাণের কৌশল বা বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে দেখিনি। এর প্রকৌশলগত দিকটা আলোচনা হওয়া দরকার। দিনাজপুর, রাজশাহী অঞ্চলে যথেষ্ট শীত পড়ে, চৈত্র মাসে লু হাওয়া বইতে থাকে। গরম থেকে আরাম পেতে বা তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে এই ঘরের প্রকৌশল স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত হয়েছিল, এটাকে বলা যায় পিপলস টেকনোলজি। এই কোঠাঘর দেখতে যেমন নয়নাভিরাম, এর ভিতরটা থাকে স্নিগ্ধ শীতল; ইটের দালানের চেয়েও যে শান্তির তা আমার খুব ভালো করেই জানা আছে। হয়তো এ কারণেই আমার পূর্বপুরুষরা পাকা-দালান বাড়ি নির্মাণের দিকে ঝোঁকেননি। এই কোঠাঘরের ছাউনি পাঁচ-ছয় বছর তো টিকতই, তার বেশিও টিকতে দেখা গেছে কয়েক জায়গায়। এখানে আমি আরেকটি বিষয় প্রসঙ্গে বলতে চাই। আমি কয়েকবারই লন্ডনে গিয়েছি। যারা লন্ডনে গিয়েছেন, তারা নিশ্চয় দেখেছেন লন্ডনেও পুরনো বাড়ির চৌহদ্দির দেয়ালে আমাদের দেশের মতো দুই-তিন হাত চওড়া ছাউনি দেখতে পাবেন। পার্থক্য এটুকু—তাদের দেশেরটা ইটের দেয়ালের ওপর কাঠের ছাউনি, আর আমাদের দেশেরটা এঁটেল মাটির।

শ্রুতিলিখন : আবদুস সাত্তার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর