শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
টেক টক

বৃক্ষরোপণে ড্রোন

বৃক্ষরোপণে ড্রোন

বহুদিন ধরে আধুনিক জীবন উপভোগের লক্ষ্যে বন-জঙ্গল উজাড় করে তৈরি হচ্ছে জনপদ, বাড়ছে শহর। এর মাঝেই শহুরে কংক্রিটের গহিনে বিতর্ক চলে ‘বিজ্ঞান আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ’। তবে সবার ঊর্ধ্বে মানুষের জন্য বিজ্ঞান। তাই পৃথিবী-জুড়ে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এখন সময়ের চাহিদা কিংবা অস্তিত্ব রক্ষার একমাত্র অবলম্বন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’র বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির উদ্ভাবনে কাজ করে আসছেন অনেক দিন ধরে। এ রকমই একটি উদ্ভাবন বৃক্ষরোপণে পারদর্শী ড্রোন। নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন এই প্রযুক্তিপণ্য ড্রোনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ সমগ্র পৃথিবীর পরিবেশেই সুপ্রভাব ফেলবে। নাসার তথ্যমতে, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দাবানল অথবা মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে প্রায় ২৬ লাখ গাছ কমে যায়। কিন্তু রোপণ করা হয় মাত্র ১৫ লাখ; যা মানব জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। এভাবে চলতে থাকলে একদিন পৃথিবী গাছশূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা সবার। যত দ্রুত সম্ভব এ প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলেই কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে। পৃথিবীর পরিবেশ মানুষের বসবাসের উপযোগী রাখতে সবার আগে প্রয়োজন বৃক্ষরোপণ। যুক্তরাজ্যের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানায়, কয়েকটি সংস্থা এরই মধ্যে ড্রোনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ শুরু করেছে। এ রকম একটি সংস্থার নাম ‘বায়ো কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিং’।

 

 

এ সংস্থাটির তথ্যমতে, প্রাথমিকভাবে ড্রোনের মাধ্যমে বছরে প্রায় ১০ লাখ গাছ লাগাতে সক্ষম তারা। একপর্যায়ে সংখ্যাটিকে বছরে ১ কোটি করার ইচ্ছা বায়ো কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষকদের। ড্রোনের মাধ্যমে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নতুন আশার সঞ্চার করছে। তবে এ পদ্ধতিতে আরও বেশি গাছ লাগানো সম্ভব হবে বলে সংস্থাটির আশা। কারণ প্রচলিত পদ্ধতিতে গাছ লাগাতে যে সময় ও পরিশ্রম প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে দুটিই কম হবে। বর্তমানে যদি বছরে ১৫ লাখ গাছ লাগানো হয়, এর সঙ্গে যোগ হবে ড্রোনের লাগানো আরও ১০ লাখ গাছ। বায়ো কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রধান নির্বাহী নাসার সাবেক প্রকৌশলী লরেন ফ্লেচার সংবাদমাধ্যমে এই অভিনব ড্রোনের কার্যপ্রণালি ব্যাখ্যা করেছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, যে অঞ্চলে গাছের চারা রোপণ করা হবে প্রথমে সেখান দিয়ে উড়ে যাবে ড্রোন। উড়ন্ত এই যানের প্রথম কাজ হবে ওই অঞ্চলের মাটি পরীক্ষা ও মাটির গুণাগুণ বিশ্লেষণ। পরবর্তী ধাপে মাটির ২-৩ মিটার উঁচু থেকে ড্রোন ছড়িয়ে দেবে বীজ। সংস্থাটির হিসাব বলছে, এ পদ্ধতিতে দিনে প্রায় ৩৫ হাজার গাছ লাগানো সম্ভব। এ ছাড়া গাছ লাগানোর খরচও কমে আসবে প্রায় ১৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে সম্ভব হবে কম সময়ে বড় জায়গায় ব্যাপক বনায়ন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর