শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ভ্রমণ

সবুজে হারিয়ে যাই

মধুপুরের রাবার বাগান

সবুজে হারিয়ে যাই

সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশের সবুজে হারানোর মতো আনন্দ আর হয় না। শহুরে কোলাহল ছেড়ে, ধুলো-বালি পেরিয়ে মধুপুরের রাবার বাগানে যখন পৌঁছবেন তখন আর ফিরতে ইচ্ছা করবে না। এ যেন সবুজের সমুদ্র। সারি সারি রাবার গাছের ফাঁকফোকর গলে ক্ষণে ক্ষণে উঁকি দেবে সোনালি রৌদ্র। আলো-ছায়ার ঢাকা রাবার বনে ছিমছাম নীরবতা মনে প্রশান্তি আনে।

এই সবুজে হারিয়ে যেতে চাইলে ছুটতে হবে টাঙ্গাইলের মধুপুরে। সেখানেই পীরগাছা রাবার বাগান। বাগানের ভিতরের কাঁচা সবুজ রঙের পাতা। উঁচু উঁচু রাবার গাছের সারি। যতদূর চোখ যাবে শুধু গাছ আর গাছ। রাবার বাগানে এ সৌন্দর্য অকৃত্রিম। মধুপুরের এ বাগানের দুই পাশে হাজারো গাছ। গাছের সারির ভিতর দিয়ে চলেছে পথ। কখনো ইট বিছানো, কখনো লাল মাটির সে পথে কাঁদা মাটির ঘ্রাণ বুক জুড়িয়ে দেবে। রাবার বাগান কিন্তু একেক ঋতুতে একেক রঙে সাজে। শীতকালে গাছগুলো ন্যাড়া হয়ে যায়— হুট করেই সবুজ বুঝি লুকিয়ে পড়ে। কিন্তু নতুন পাতার কুঁড়ি এলেই রং বাহারে সাজে পুরো রাবার বন। বর্ষার দিকে গেলে সবুজের বাড়াবাড়ি রকম সৌন্দর্যে বিমূঢ় হতে হয়। বনের ভিতর চাইলে একটু অগোছালো পথে হেঁটে আসতে পারেন। রাবার বাগানের গাছগুলো বেশ জ্যামিতি মেনে লাগানো হয়। তাই দুই গাছের সারির মাঝখানে বেশ প্রশস্ত পথ। তবে দল ছাড়া বনে একা ঘোরাঘুরি না করাই ভালো। মোটরসাইকেল দিয়ে চক্কর দিয়ে আসতে পারেন। আবার চাইলে দল বেঁধে বনের গাছের সবুজ ছাউনিতে বসে আড্ডাও দিতে পারেন। হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখেই আনন্দ লাগবে বেশি। রাবার  বনের ভিতর কিছুটা এগিয়ে চোখে পড়বে বাগানের অফিস। এই অফিসের কাছেই গেস্টহাউস। গেস্টহাউসটা গোছানো বলা যায়। আধাপাকা ভবনটিতে অনুমতি নিয়ে থাকতেও পারবেন। রাবার বাগানের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে— এখানে দু-একটা দিন আরাম-আয়েশে থাকলেই ধরা দেবে। সবুজের সঙ্গে মিতালি করতে চাইলে একটু সময় তো দিতেই হয়, নাকি! রাতের জোছনা মাখা বনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইলে চেয়ার পেতে বসে পড়ুন ভরা পূর্ণিমায়। সময় নিয়ে ঘুরে আসুন রাবার কারখানায়। বেশ বড় একটি কারখানা আছে ওখানে। রাবার গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ করে এখানেই রাবারশিট তৈরি করা হয়। সকালে দুধের মতো সাদা কাঁচা রাবার সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত কাঁচা রাবার জমা করে রাখা হয় বড় বড় হাউসে। সেখান থেকে নানাভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তারপর মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় রাবারশিট।

 

যেখানে থাকবেন

৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যেই মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল পাওয়া যাবে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় বাগানের গেস্টহাউসে থাকার অনুমতি পেলে।

 

কীভাবে যাবেন

ঢাকার মহাখালী থেকে সরাসরি মধুপুরের বাস রয়েছে। ৩০০ টাকা ভাড়া মিটিয়ে বাসেই পৌঁছে যাবেন মধুপুর বাসস্ট্যান্ড। এখান থেকে রাবার বাগান ১০ কিলোমিটার দূরে। বাসস্ট্যান্ড থেকে রাবার বাগানে অটোরিকশা, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেলে করে যাওয়া যায়। অটোরিকশা ভাড়া পড়বে আনুমানিক ৪০ টাকা। অবশ্য রাবার বাগান ঘুরে দেখার জন্য মোটরসাইকেল সবচেয়ে ভালো। পুরো বাগান ঘোরার জন্য মোটরসাইকেলে ৫০০ টাকার মতো ভাড়া লাগবে। দরদাম করে নিলেই ভালো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর