শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ব্রেকথ্রো প্রতিযোগিতায়

প্রথম বাংলাদেশি আয়েশা

তানিয়া তুষ্টি

প্রথম বাংলাদেশি আয়েশা

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘ব্রেকথ্রো জুনিয়র-২০১৭’ বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল রাউন্ডে পৌঁছেছেন বাংলাদেশি আয়েশা। এমন কোনো প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি হিসেবে তিনিই প্রথম। ১৭৩টি দেশের ১২ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগীর এ পর্বে বাছাই হওয়া ২৯ জনের মধ্যে আয়েশাও একজন। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন। ১৭ বছরের এ তরুণীর অনন্য কৃতিত্বে গর্বিত তার পরিবার ও আমিরাতের বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

কারও কাছ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য গ্রহণ ছাড়াই বিজ্ঞানবিষয়ক তিন মিনিটের একটি ভিডিও বানান আয়েশা। সে ভিডিওটি আয়েশাকে এ পর্যন্ত আসতে সহায়তা করে। আয়েশার পছন্দের বিষয় গণিত, মহাকাশ ও পদার্থবিদ্যা। বিজ্ঞানের প্রতি তার আগ্রহ ছোট থেকেই। তখন থেকেই এসব নিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। বিদেশে থাকার কারণে ইংরেজি তার প্রথম ভাষা। তবে বাংলার প্রতিও রয়েছে যথেষ্ট অনুরাগ। বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ আগ্রহের পাশাপাশি আয়েশা সাহিত্যে কম যান না। ইংরেজি কবিতা লিখে, আবৃত্তি করে অর্জনের ঝুলিতে তুলেছেন অনেক পুরস্কার। আয়েশা প্রখ্যাত ‘টেডটক’-এর সঙ্গে জড়িত। টেডটকে বক্তৃতা দিয়ে কুড়িয়েছেন অনেক সুনাম। এ ছাড়াও আয়েশার ‘এইচটিএমএল’, ‘সি’, ‘জাভা’, ‘জেস পাইথন’ ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে সম্যক ধারণা আছে।

আয়েশার বাবা মুনীর আহমেদ শাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সপরিবারে বসবাস করছেন। তিনি একজন উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষক। আয়েশার মা সোনিয়া আহমেদ একজন গৃহিণী।

আয়েশা এ বছর আবুধাবির সৈফাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ‘এ’ লেভেল (ব্রিটিশ) এবং এপি (আমেরিকান) শেষ করেছেন। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে তিনি পড়তে যাবেন।

মেধাবী আয়েশার এ পর্যন্ত কখনো গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন পড়েনি। বাবা-মায়ের কাছেই ক্লাসের পড়া দেখিয়ে নিতেন। সপ্তম শ্রেণির পর থেকে তিনি নিজে নিজে পড়াশোনা করতেন। এমনকি সহপাঠীরাও তার কাছে পড়ত।

মেয়ের এমন অসামান্য কৃতিত্বে মা সোনিয়া আহমেদ বলেন, ‘আয়েশার অর্জনে আমিও খুব খুশি। জীবনের বাকি পথও যেন সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যায়। সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

আয়েশার স্বপ্ন নিজেকে বিজ্ঞান ও মানবতার কাজে নিয়োজিত করা। ভবিষ্যতে বিজ্ঞানবিষয়ক বই লেখার ইচ্ছাও আছে। ২০০০ সালে বিদেশের মাটিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আয়েশার গ্রামের বাড়ি বরিশাল। দেশের প্রতি অগাধ টান ও ভালোবাসা থেকে প্রায় প্রতি বছর তারা দেশে বেড়াতে আসেন। বড় হয়ে দেশের সুনাম অর্জনে কাজ করার ইচ্ছা তার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর