শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আলোচিত রোবট রেস্টুুরেন্ট

এবার চালু হলো রোবট রেস্টুরেন্ট। যেখানে রোবটগুলো পরিবেশন করছে খাবার। খাবার খাওয়ার পাশাপাশি রোবট দেখতেও ভিড় করছেন গ্রাহকরা...

আলোচিত রোবট রেস্টুুরেন্ট

চালু হলো দেশের প্রথম ব্যতিক্রমী আপ্যায়ন কেন্দ্র রোবট রেস্টুরেন্ট। পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে। এ রেস্টুরেন্টটির বিশেষত্ব হচ্ছে দুটি রোবট অন্যান্য ওয়েটারের পাশাপাশি তারাও গ্রাহকদের আপ্যায়ন করছে। রোবট প্রস্তুতকারী সংস্থা এইচজেডএক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানি এটি দেশে এনেছে। রোবট দুটির একটি পুরুষ, অপরটি মহিলা। এরা দৈনিক ৮-১০ জনের কাজ করবে। তবে কাস্টমারের কথা বা ইশারা এরা বুঝবে না। শুধু গ্রাহক যেখানে বসে থাকবে সেখানে অর্ডার মতো সার্ভিস দিতে পারবে। এদের চলাফেরা শুধু কাউন্টার থেকে টেবিল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। তবে চলার পথে কারও সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সরি বলে নিজেরা সরে যাবে। খাবার পরিবেশন শেষে তারা গ্রাহকদের ধন্যবাদ দেবে।

 

রোবটের হাত থেকে খাবার নিতেই নারী ও শিশুদের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে রোবট দারুণ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। অনেকে আবার দেখতেও যাচ্ছে রোবট। আসাদগেট প্রধান সড়কের ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ড টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় প্রায় তিন হাজার বর্গফুটজুড়ে এ রেস্টুরেন্ট। এখানে একসঙ্গে ১২০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই রেস্টুরেন্ট।

রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী সংবাদ মাধ্যমে বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যে, ওয়েটাররা কয়েক ঘণ্টা কাজ করার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন। সেই ক্লান্ত অবস্থায়ই তারা কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করতে বাধ্য হন, কিন্তু রোবট কখনোই ক্লান্ত হবে না।

রোবট রেস্টুরেন্টটির কনসালটেন্ট গিয়াসউদ্দিন মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে জানান, গ্রাহকদের সাড়ায় আমরা অভিভূত। রীতিমতো সিরিয়াল দিয়ে কাস্টমারদের এ রেস্টুরেন্টটিতে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তিনি জানান, একই ভবনে আরও কয়েকটি রেস্টুরেন্ট থাকলেও সব ভিড় এখন এ রোবট রেস্টুরেন্টে। প্রাথমিক অবস্থায় আগামী এক মাসের জন্য শিশুদের ‘কিডমিল’ এবং দেশি খাবারের সেট মেন্যু পরিবেশন করা হবে। যার মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা বলে জানান তিনি। এ ছাড়া কয়েক দিনের মধ্যে এসব রোবট বাংলায় কথা বলতে পারবে। তবে তারা একটিকে বাংলায়, অন্যটিকে ইংরেজিতে কথা বলার ব্যবস্থা করবেন।

 

গ্রাহক সেবার মান নিশ্চিতেই এমন রোবট বয়। উদ্যোক্তারা জানান, একজন ওয়েটারের পক্ষে সব সময় গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। ওয়েটার কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু রোবট একটানা ঘণ্টার ঘন্টা কাজ করতে সক্ষম। তাই ওয়েটারের পাশাপাশি রোবট দিয়ে এসব কাজ করানোর আয়োজন করা হয়েছে।

 

এমন নতুন আয়োজনের নেপথ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনোয়ারুন নবী মজুমদারের দুই সন্তান তাসিন রওনাক নবী ও রাহিন রাইয়ান নবী। তারা দুইজন বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অধ্যয়নরত অবস্থায় চীন সফরে যান। সেখানে গিয়ে তারা চীনের রোবট দ্বারা খাবার সরবরাহ পদ্ধতি দেখে আকৃষ্ট হন। তখনই তাদের মাথায় নিজ দেশে এমন আয়োজন করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। তারা তখন সংশ্লিষ্ট রোবট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়ার্জের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বাংলাদেশে রোবট রেস্টুরেন্ট চালুর বিষয়ে আলোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরে এটি বাংলাদেশে চালু করা হয়। রেস্টুরেন্টের কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজার তানভিরুল হক জানান, বাংলাদেশে এটিই এ ধরনের প্রথম রেস্টুরেন্ট, যেখানে রোবটের মাধ্যমে কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে এ রেস্টুরেন্টটি পরিচালনা করবে। শিশুদের বিনোদন ও খাবারের বিষয়টি চিন্তা করেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর