শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোষকে সজীব করবে আমিরের নতুন উদ্ভাবন

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কোষকে সজীব করবে আমিরের নতুন উদ্ভাবন

বগুড়ার আমির হোসেনের নতুন উদ্ভাবিত স্লো-মোশন টাইম মেশিন

যন্ত্রটি সূর্য থেকে তাপ রশ্মি গ্রহণ করে মানুষের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখার জন্য স্নায়ুর ভিতরে নতুন রক্তের সেল তৈরি করবে। ফলে নির্জীব কোষসমূহকে সজীব রাখা সম্ভব হবে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিরাও এ যন্ত্র ব্যবহার করে সুস্থ হয়ে উঠবেন। বৃদ্ধাবস্থায় কোষ মরে গেলে চিকিৎসাশাস্ত্রে তা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। কিন্তু এই মেশিন সব ধরনের স্নায়ুর ভিতরে রক্ত চলাচলের সূক্ষ্মতম গতি সচল করবে।

 

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বুড়িয়ে যাবে এটিই যেন প্রকৃতির নিয়ম। সেখানে বার্ধক্য ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। কেউ এই নিয়মকে নির্মমতা হিসেবেও বিবেচনা করে থাকেন। বগুড়ার আমির হোসেনও হয়তো নির্মম এই পরিণতিকে মেনে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা মানতে নারাজ। দীর্ঘদিন গবেষণার পর অবশেষে একটি মেশিন আবিষ্কার করেছেন। মেশিনটি রক্তের সেল তৈরি করে নির্জীব কোষসমূহকে সজীব রাখবে বলে তার দাবি। মেশিনের নামকরণও তিনি করেছেন ‘স্লো মোশন টাইম মেশিন’।

নতুন উদ্ভাবিত এই স্লো-মোশন টাইম মেশিন সূর্য সোলার উইন্ড থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন ও সূর্যের আলো থেকে আসা তাপ রশ্মিকে ক্যাপচার করে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে।

আমির হোসেনের দাবি, যন্ত্রটি সূর্য থেকে তাপ রশ্মি গ্রহণ করে মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল রাখার জন্য স্নায়ুর ভিতরে নতুন রক্তের সেল তৈরি করবে। ফলে নির্জীব কোষসমূহকে সজীব রাখা সম্ভব হবে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিরাও এ যন্ত্র ব্যবহার করে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বৃদ্ধাবস্থায় কোষ মরে গেলে চিকিৎসাশাস্ত্রে তা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন, মানবদেহে সবসময় এক ধরনের তাপশক্তি প্রয়োজন। এই তাপশক্তি যখন নিষ্ক্রিয় হয় তখন কোনো ওষুধ কাজ করে না। সব ধরনের স্নায়ুর ভিতরে রক্ত চলাচলের সূক্ষ্মতম গতি অচল হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। দেহের প্রতিটি কোষের একটি নির্দিষ্ট আয়ু আছে। এই আয়ুষ্কাল পার হয়ে গেলে কোষ মরে যায় এবং নতুন কোষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। কোনো প্রাণকে আকস্মিকভাবে যদি স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রায় পৌঁছে তাহলে ওই প্রাণের যাবতীয় কর্মকাণ্ড মুহূর্তে থেমে যাবে। আক্ষরিক অর্থে সে মৃত। হৃদযন্ত্র ও কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে আয়ু থেমে যাবে। এ ধরনের সদ্য তাপ নিষ্ক্রিয় জীবদেহকে তাত্ক্ষণিক আমির হোসেনের নতুন উদ্ভাবন স্লো-মোশন টাইম মেশিনে তাপরশ্মি নিয়ন্ত্রিত চিকিৎসা সিস্টেমে এবং উপযুক্ত পদ্ধতি আয়ত্তে থাকলে ওই জীবের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এতে জীবটির জৈবিক ক্রিয়া আবার শুরু হবে। সফলভাবে সম্পন্ন হলে মনে হবে একটা দারুণ লম্বা ঘুম দিয়ে উঠল। দীর্ঘ ৯ বছরের গবেষণায় চিকিৎসাশাস্ত্রের জন্য ব্যবহারযোগ্য এই যন্ত্রটি তিনি উদ্ভাবন করেন বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান। তিনি আরও জানান, চুম্বক, কার্বন, সোলার প্যানেল, লোহা, স্টিলপাত ও কাচ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে মেশিনটি। উদ্ভাবনকৃত মেশিনটি মূলত দুটি ভাগে কাজ করে। একটি অংশে সূর্য থেকে আলো নিয়ে সোলার বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা এবং অপর মেশিন দিয়ে সূর্যের আলোকরশ্মি ধারণ করে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করে। যন্ত্র উদ্ভাবক আমির জানান, জীবকোষের কোষ শরীরের ভিতরের জটিলতা বাইরের থেকে বেশি। বাইরের তাপমাত্রা যদি খুব কমে যায়, তাহলে জীবকোষ থেকে প্রচুর তাপ বাইরে বেরিয়ে যায়। প্রতিটি জীবের দেহে গড়ে উঠেছে দেহঘড়ি। জীবদেহের বিপাক দৈহিক তাপমাত্রা, হরমোন মাত্রা, ঘুম আচরণ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘড়ির মাধ্যমে জীবদেহের শরীরবৃত্তীয় কাজ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। বৃদ্ধাবস্থায় এক ধরনের অসুস্থতার চিকিৎসা করে বৃদ্ধাবস্থা এড়ানো সম্ভব। এতে করে মানুষ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সুযোগ খুঁজে পাবে। সূর্যরশ্মির মধ্যে এক ধরনের এনজাইম আছে যা প্রয়োগ করলে কোষ মারা যাওয়ার প্রক্রিয়া থেমে যাবে। উদ্ভাবন যন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ এনজাইম সূর্য থেকে ক্যাপচার করে চিকিৎসা করা সম্ভব। এই শক্তিটাই নতুন রক্তের সেল কোষ গঠন করবে ও বিশেষ কোষকে বৃদ্ধি রোধ করবে। এ ছাড়া এই মেশিনে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ রিজার্ভ থাকবে। যে ফ্যাক্টরিতে ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ লোড আছে ওই ফ্যাক্টরিতে ৭ দিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ রিজার্ভ ধরে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। সূর্য মেঘে ঢাকা কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলেও এ জন্য ব্যবহারে কোনো অসুবিধা হবে না। তিনি জানান, এখনো এটি প্রয়োগ দিকে যাওয়া হয়নি বা গবেষণা চালানো হয়নি। তবে খুব শিগগিরই এটি দিয়ে মানবদেহের চিকিৎসাকাজে লাগানোর পরীক্ষা চালানো হবে।

সর্বশেষ খবর