শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী মন্ত্রী

শনিবারের সকাল ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী মন্ত্রী

একবিংশ শতকে এসেও মুসলিম নারীদের পশ্চাৎপদ দেখতেই অনেকের স্বস্তি। পর্দার আড়ালে থেকে ঘরকন্না করাই যেন তার জন্য উপযুক্ত কাজ।

কিন্তু নারীরা নিজেদের পেছনে ফেলে রাখতে রাজি নয়। একে একে টপকে যাচ্ছে সব বাধার দেয়াল। অর্জন করে নিচ্ছে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী সম্মান ও পদমর্যাদা। তার প্রমাণ মিলল আবারও। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে কোনো মুসলিম নারী মন্ত্রী ছিলেন না। কিন্তু প্রথম মুসলিম নারী মন্ত্রী হিসেবে নিজের নাম লেখালেন পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরি বংশোদ্ভূত নুস ঘানি। নতুন বছরের শুরুতে তিনি দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জুনিয়র মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

 

কাশ্মীর থেকে তার বাবা-মা যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হন। তবে ১৯৭২ সালের ১ সেপ্টেম্বর নুস ঘানির জন্ম হয় বার্মিংহামে। নুস ঘানি বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ও লিডস ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরুর আগে চ্যারিটি বিষয়ক কাজে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। এজ ইউকে এবং ওই এলাকার বৃদ্ধদের সহায়তা ও স্তন ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ডেও কাজ করেছেন।

 

২০১০ সালে সাধারণ নির্বাচনে প্রথম কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী হন। এর মাঝে রাজনৈতিক নানা কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। দিনে দিনে দল ও জনগণের কাছে নিজের অবস্থান পোক্ত হতে থাকে। ২০১৫ সালে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষ থেকে প্রথম মুসলিম নারী এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৭ সালের নির্বাচনে জিতে ইতিহাস গড়েন। এবার মন্ত্রী হিসেবে হাউস অব কমন্সে প্রথম অংশ নিয়ে আবারও ইতিহাস গড়েন। মন্ত্রী হওয়ার পর টুইটারে নিজের প্রতিক্রিয়া হিসেবে লেখেন, ‘যুক্তরাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে আমার সূচনায় একটি ছোট ইতিহাস হয়ে গেছে। প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে হাউস অব কমন্সের প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য দিয়েছি।’

 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের নতুন বছরের রদবদলের অংশ হিসেবে ৪৫ বছর বয়সী নুস ঘানিকে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সহকারী হুইপ হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। ফলে তাকে একই সঙ্গে দুটি দায়িত্ব পালন করতে হবে।

 

নুস ঘানি নিজের বিবৃতিতে বলেন, ‘দুটি দায়িত্বই আমার জন্য রোমাঞ্চকর ও সাহসী সুযোগ। উইয়েলডেনের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই পরিবহন বিষয়টি নিয়ে আমি মনে-প্রাণে প্রচারণা চালিয়ে আসছি। তবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের বাইরেও আমি উইয়েলডেনের পক্ষে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠব, আর আমাকে নির্বাচনকারীদের সেবা করে যেতে হবে।’

নুস ঘানির এই অর্জন শুধু মুসলিম নারীদের জন্য নয়, পুরো নারী জাতির জন্য অনুপ্রেরণা।

সর্বশেষ খবর