এই আবিষ্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে অল্প খরচে সঠিক উপায়ে দ্রুততার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন পরীক্ষা করা সম্ভব এবং ডাক্তারদের জন্য সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া আরও সহজতর হবে।
বাঙালিরা একের পর এক উন্মোচন করে চলেছেন জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন দ্বার। উন্নত দেশের নাগরিকদের থেকে কোনো অংশে আজ তারা পিছিয়ে নেই। সম্প্রতি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বারইহুদা গ্রামের সন্তান ড. প্রদীপ সরকার এক ধরনের অ্যাকটিভ পলিমার হাইড্রোজেল তৈরি করেছেন। ড. প্রদীপ সরকারসহ ৬ জনের গবেষণা দল প্রফেসর স্টিভ রিমারের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৩ বছরের বেশি সময় ধরে নিরলস প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়। এই আবিষ্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প খরচে সঠিক উপায়ে দ্রুততার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন পরীক্ষা করা সম্ভব এবং ডাক্তারদের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া আরও সহজতর হতে পারে। অনন্যসাধারণ এই গবেষণা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের রয়েল সোসাইটি তাদের ১০ মিলিয়ন ইউরো অনুদান দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই প্রযুক্তি পশুর ওপর চালানোর জন্য অনুমতি মিলেছে। তারপর এটিকে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
ড. সরকার এই গবেষক দলের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ড. সরকারের বাবা মৃত জিতেন্দ্রনাথ সরকার ও মা মৃত বেলা রানী সরকার। বাবা-মায়ের ছোট সন্তান ড. সরকার তামান্না বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি কেসি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম বিভাগে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লাইড ক্যামিস্ট্রিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর পরমাণু শক্তি কমিশনে বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি প্রথম কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভের পর একই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৭ বছর সিনিয়র রিসার্সার ফেলো হিসেবে কাজ করেন। তার গবেষণালব্ধ আর্টিকেল এবং প্যাটেন্ট বিশ্বখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ড. সরকার যুক্তরাজ্যে একটি বায়োটেক কোম্পানির কোফাউন্ডার এবং প্রধান গবেষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
