শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

৭২ বছর বয়সে গডফাদার অব কোরাল

শনিবারের সকাল ডেস্ক

৭২ বছর বয়সে গডফাদার অব কোরাল

অস্ট্রেলিয়ান ডাইভার চার্লি ভেরন। তার বয়স এখন ৭২ বছর। ১৮ বছর বয়সেই সাগরের তলদেশের বিস্ময়কর প্রাণিজগৎ তাকে আগ্রহী করে তোলে। পরবর্তীতে তিনি সমুদ্রবিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে গেছেন সারাটা জীবন। গত ৫০ বছর ধরে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ডাইভিং করছেন। তিনি ‘গডফাদার অব কোরাল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। এই মুহূর্তে বিশ্বের পরিচিত সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে বিশ শতাংশের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন চার্লি ভেরন। তার হাত ধরেই সমুদ্রের তলদেশে প্রাণিজগৎ ও প্রবালের জীবনচক্র সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। সমুদ্র নিয়ে বিজ্ঞনীদেরও অনেক ধারণা বদলে দিয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। ভেরন বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৮ বছর তখন থেকেই প্রথম সমুদ্রের তলদেশে যাওয়া শুরু করি। ১৯৭২ সালে সমুদ্রবিজ্ঞানী হিসেবে চাকরি পেয়ে যাই। পরে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ আর অসাধারণ সব প্রাণী আবিষ্কার করতে থাকলাম। আমরা যে সৌন্দর্য রোজ দেখতাম, তার আসলে কোনো তুলনাই হয় না। সাগরের এত নিচে এত প্রাণ থাকতে পারে, এত জীবন্ত হতে পারে, কোনো ধারণাই ছিল না আমার। আমি তখন এমন একটা পৃথিবী দেখছিলাম, যা আদতেই কেউ কখনো দেখেনি। এটা ছিল অনেকটা চাঁদে যাওয়ার মতো ব্যাপার। এই আকর্ষণই এই বৃদ্ধ বয়সেও সাগরের এত গভীরে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায় আমাকে।’ এখনো ৭২ বছরের চার্লি ভেরন যখন-তখন নেমে পড়েন সমুদ্রের পানিতে। বয়স কিংবা বার্ধক্য কোনো কিছুই আটকে রাখতে পারে না এই ‘ফাদার অব কোরাল’ নামে পরিচিত চার্লি ভেরনকে। বিশ্বে আবিষ্কৃত সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে বিশ শতাংশের বেশি নতুন প্রজাতির এই আবিষ্কারক লিখেছেন ৬টি বই। তার লেখা সর্বশেষ প্রকাশ হওয়া বইটি ‘অ্যা লাইফ আন্ডার ওয়াটার’। এটি বেরিয়েছে বিশ্বখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পেঙ্গুইন থেকে এ বছরের শুরুতে। এ ছাড়াও তার লেখা আরও কিছু উল্লেখযোগ্য বই হলো- ‘অ্যা রিফ ইন টাইম : দ্য গ্রেট বেরিয়ার রিফ ফ্রম বিগেনিং টু ইন্ড’, ‘হারমেটাইপ কোরালস অব জাপান’, ‘কোরালস ইন স্পেস অ্যান্ড টাইম’ ইত্যাদি। চার্লি ভেরন তিনটি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। তিনি জীবনে প্রচুর পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন। আমেরিকান একাডেমি আন্ডার ওয়াটার সায়েন্স তাকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করে। এ ছাড়াও সিলভার জুবিলি পিন, দ্য ডরউইন মেডেল ইত্যাদি পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি একজন জীবিত কিংবদন্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

সর্বশেষ খবর