শনিবার, ২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুনম চাকমার অন্যরকম উদ্যোগ

শনিবারের সকাল ডেস্ক

সুনম চাকমার অন্যরকম উদ্যোগ

আমাদের দেশে এখন শিক্ষার হার প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এখনো পাহাড়ি জনপদের কিছু জায়গায় শিক্ষার অবস্থা একেবারেই নাজুক। এমনই একটি জায়গা হলো সাজেকের সুউচ্চ লুসাই পাহাড়। এই পাহারের নিচে ঝরনাপাড়া এলাকায় ১১টি দরিদ্র চাকমা পরিবারের বসবাস। সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে তাদের প্রত্যেকের রয়েছে অদম্য আগ্রহ। সে সব পরিবারের ২৩ শিশুর জন্য কলেজপড়ুয়া সুনম চাকমা চালু করেছেন ব্যতিক্রমী এক বিদ্যালয়। সাজেক যাওয়ার মূল সড়কের পাশে চওড়া একটি জায়গায় বেড়ার ঘরের খিড়কির মতো খোপ দেখতে পাওয়া যায়। যার ভিতর দিয়ে উঁকি মারলে অনেক শিশুকে দেখবেন একসঙ্গে পড়াশোনা করছে। ছোট কক্ষটির ভিতরে তিন পাশে বসে আছে ২৩টি ছেলেমেয়ে। এরা সবাই ওই ১১টি দরিদ্র চাকমা পরিবারের সন্তান।

সুনম চাকমা গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৬ সালে বাঘাইহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর ভর্তি হন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজে। কিন্তু জুমজীবী মা-বাবার পক্ষে কলেজে যাওয়ার প্রতিদিনকার গাড়ি ভাড়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। দুই বছর আগে এখানে এসে দেখেন এখানকার শিশুরা বছরে ছয় মাসেও বিদ্যালয়ে যায় না। সুনম সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ানোর চেয়ে পরিবারের প্রতিটি শিশুকে নির্ধারিত একটি স্থানে জড়ো করে নিয়মিত পাঠ  দেওয়া হলে শিশুদের শিক্ষা জীবনে কোনো ছেদ পড়বে না। তারপর নিজেই পরিশ্রম করে একটি ঘর তৈরি করেন বচ্চাদের পড়ানোর জন্য। স্থানীয় দোকানি জগদীশ চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, ১১ পরিবার সুনমের বার্ষিক খোরাকি বাবদ সোয়া ২৭ কেজি করে চাল দেয়। তবে বাড়তি চাল বিক্রি করেই শিক্ষক সুনমের লেখাপড়া, পোশাক-পরিচ্ছদসহ অন্যান্য খরচ তিনি তার মতো চালান। অভিভাবক ইন্দু কুমার চাকমা বলেন, সাজেকের সৌন্দর্য দেখতে কত লোকজন আসেন। কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে কেউ ভাবেন না। আমাদের সুনম চাকমা ঠিকই ভেবেছে।

সর্বশেষ খবর