শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বানরের নতুন প্রজাতি পিগমি মারমোসেট

বানরের নতুন প্রজাতি পিগমি মারমোসেট

প্রজাতি থেকেই প্রজাতি তৈরি হয়ে আসছে পৃথিবীজুড়ে। বিস্ময়কর এই পৃথিবীতে অসংখ্য প্রজাতি রয়েছে। আর সেইসব প্রজাতির সঠিক সংখ্যা কত হতে পারে তা সত্যিকার অর্থেই বলা কঠিন। শুরুতেই জানা থাকা দরকার প্রজাতি কী? মূলত প্রজাতি হলো জীবগোষ্ঠী। এসব প্রজাতির প্রত্যেক সদস্যের রয়েছে নিজেদের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা। বলা বাহুল্য, প্রত্যেক প্রজাতিরই রয়েছে আলাদা আলাদা প্রজননক্ষমতা। প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে প্রজাতি হলো সর্বনিম্ন একক। শ্রেণিবিন্যাস বিদ্যায় কোনো একটি প্রাণীকে তার বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে কিছু ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। তাছাড়া কোনো একটি প্রাণীর বিবর্তন তাত্ত্বিক ইতিহাস এবং বংশ পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করেও প্রজাতির ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয় জাতিজনি।

আর যে প্রক্রিয়ায় ক্রমাগত বিবর্তনের ফলে পূর্ববর্তী কোনো প্রজাতি থেকে নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয় তাকে বলা হয় প্রজাতিকরণ বা Speciation। পিগমি মারমোসেট তাদের মধ্যেই অন্যতম একটি প্রজাতি। এরা পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রকায় বানর। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিল এই প্রজাতির মাত্র একটি প্রাণী পৃথিবীর বুকে জীবিত রয়েছে। কিন্তু তাদের এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। প্রকৃতপক্ষে তাদের মাঝে আছে দুটি আলাদা প্রজাতি। আর ক্ষুদ্রকায় এই প্রাণীর প্রজাতি নিয়ে কাজ করে বিস্ময়কর এসব তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্যালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানীরা। তারা বেশ কিছু পিগমি মারমোসেটের জিনোম নিয়ে গবেষণা করে এসব তথ্য দেন। অনুসন্ধানী দলটির উদ্দেশ্য ছিল, এই বানর প্রজাতির বিবর্তনিক ইতিহাস উন্মোচন করা। তারা আবিষ্কার করলেন, পিগমি পারমোসেটের দুটি প্রজাতি প্রায় ৩ মিলিয়ন বছর আগে পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। আমাজান নদী প্রজাতি দুটির একটিকে ভৌগোলিকভাবে উত্তর দিকে এবং অন্যটিকে দক্ষিণ দিকে বিভক্ত করে দেয়। আমাজান বনের পশ্চিমাংশে পিগমি মারমোসেটদের বসবাস। এরা পতঙ্গভোগী প্রাণী। প্রতিটি বানরের ওজন প্রায় ১০০ গ্রাম হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে জিনোমিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বর্তমান পিগমি মারমোসেটে দুটি আলাদা প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। আমাজান নদীর উত্তর পাশের মারমোসেটদের গায়ে হালকা ডোরাকাটা দাগ থাকে। অন্যদিকে দক্ষিণ পাশের মারমোসেটরা গাঢ় ডোরাকাটা দাগের হয়। নদী বা ভৌগোলিক বাধার কারণে কোনো প্রজাতির একটি পপুলেশন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ভৌগোলিক বাধার কারণে পপুলেশন দুটির মাঝে জিনের আদান-প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। ক্রমবিবর্তনের ফলে এদের মাঝে নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন আসে। একটা সময় পর ভৌগোলিক বাধা অতিক্রম করতে পারলেও দুটি পপুলেশনের কেউ কারও সঙ্গে প্রজননক্রিয়া করতে পারে না। আর তা থেকেই দুটি পপুলেশনকে দুটি ভিন্ন প্রজাতি হিসেবে গণ্য করা হয়।

সর্বশেষ খবর