শনিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

রেস্টুরেন্টের বেয়ারা থেকে বোয়িং বিমানের ডিজাইনার

রেস্টুরেন্টের বেয়ারা থেকে বোয়িং বিমানের ডিজাইনার

বিমানে যুক্ত হচ্ছে চারটি বিমান বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার। বিদেশের কাছ থেকে কেনা এই বিমানেরই নকশা ও তৈরিতে যুক্ত রয়েছেন বাংলাদেশি ডিজাইনার আরিফ রেজা। সঙ্গে রয়েছে বোয়িংয়ের বিমান নকশা ও প্রকৌশলীর বিশাল একটি দল। বুয়েট থেকে পাস করা এই বাংলাদেশি তরুণ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা এরোনটিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। প্রবাস জীবনে দারুণ অর্থকষ্ট মেটাতে দিনরাত কাজ করেছেন রেস্টুরেন্টে, মুদির দোকানে, টোয়িং কোম্পানিতে (গাড়ি টেনে নেওয়ার কাজ)। লড়াই করেছেন অধরা স্বপ্নকে ছুঁতে। বিমান বানানোর সেই স্বপ্ন তার পূরণ হয়েছে। মেধাবী আরিফ রেজা আজ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিমান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সিনিয়র লিড। অত্যাধুনিক বিমান তৈরির নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাংলাদেশের নাম ছড়িয়ে দিয়েছেন গোটা বিশ্বে। লিখেছেন— তানভীর আহমেদ তানিয়া তুষ্টি

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে এসেছিলেন আরিফ রেজা। তার বয়ানেই শোনা যাক বিমান তৈরির গল্প—

প্রথমেই উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে শোনালেন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের গল্প। গত জুনের প্রথম দিকে আরিফ রেজাকে জানানো হয় নতুন কয়েকটি বিমান ডেলিভারি হবে। তিনি সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। হ্যাঙ্গার থেকে বিমানটি পেইন্টিংয়ের জন্য বাইরে নিয়ে আসা হলে আরিফ রেজার চোখে পড়ে তাতে লেখা ‘বিমান’। বুঝতে বাকি থাকে না এটির মালিকানা বাংলাদেশের। তার নকশা ও নেতৃত্বে তৈরি বিমানটি দেশে আসার সংবাদে বুকে আবেগের ঢেউ ওঠে। এই খুশিতে দীর্ঘদিন পর আবারও দেশের টান অনুভব করেন। এক মাস না যেতেই সস্ত্রীক দেশের বুকে আসেন। ছোটবেলা থেকেই আরিফ রেজার বিমানের প্রতি আকর্ষণ কাজ করত। তিনি জানান, বুয়েট থেকে নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করি। তারপর সবদিক বিবেচনা করে আমেরিকায় স্কলারশিপের আবেদন করা হয়। ১৯৯৯ সালে আমেরিকার সবচেয়ে ভালো এরোস্পেস নিয়ে পড়াশোনা করার বিশ্ববিদ্যালয় এমব্রি রিডেল এরোনটিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সুযোগ মিলে যায়। তাই আর দেরি না করে সেখানে ভর্তি হয়ে যাই। কিন্তু সেখানে পড়াশোনা করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন পড়ে। তাই আমাকে চাকরিও করতে হয়েছে। তবে এমন একটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে যথেষ্ট সময় দিতে হয়, আবার পড়াশোনা ও নিজের খরচের জন্য অর্থও উপার্জন করতে হয়। তাই চাকরি করতে হয়েছে রাত জেগে। প্রায় ১২ ঘণ্টা ছিল কাজের ব্যাপ্তি। আর দিনের বেলায় ক্লাস করতে হয়েছে। ক্লাসের পড়া তৈরি করতে হয়েছে কর্মস্থলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে। আসলে কারও যদি কোনো কাজের প্রতি একান্ত ইচ্ছা থাকে তাকে অবশ্যই এভাবেই কষ্ট স্বীকার করতে হয়। আমারও ছিল বিমানের প্রতি অত্যন্ত আকর্ষণ। তাই আমিও এভাবে দিনরাত পরিশ্রম করি। আমার চোখের নিচে কালি জমে গেছে। কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি তা নিজেরও জানা নেই। দিনের বেলায় বিশ্রাম করার সুযোগ নেই। অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকায় অনেক সময় ক্লাসের ভিতর ঘুমিয়ে পড়তাম। শত কষ্ট হলেও আমি আমার লক্ষ্য ভুলিনি। তাই হয়তো সব বাধা ডিঙিয়ে আমার লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে পেরেছি। এখানে ব্যাচেলর কোর্সটি তিন বছরে শেষ হয়। এরপর সেখানেই মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করি। আমার রেজাল্টও খুব ভালো ছিল। মাস্টার্স করার সময় আমি এমব্রি রিডেলের টিচার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও সেখানে ক্লাস নিয়েছি। কারণ ক্লাসে আমার উপস্থাপনায় কর্তৃপক্ষ খুবই খুশি ছিল। আমার পেছনে আমার প্রফেসরও মাঝে মাঝে বসে থাকতেন। আমি এমন অনেক স্টুডেন্টকে পড়িয়েছি যারা আজ অনেক ভালো ভালো অবস্থানে আছে। আমি জানি তারা খুব সৎ, কাজের প্রতি মনোযোগী এবং কর্মঠ। মাস্টার্স ডিগ্রি করার সময় ২০০৯ সালে বোয়িং আমাকে হায়ার করে। এখন আমিই সেখানে যাই বোয়িং থেকে রিক্রুট করতে। বোয়িংয়ে আমার প্রথম কাজ ছিল বোয়িং রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজি। সেখানে অ্যাডভান্স স্টিমুলেশন অ্যান্ড টেকনোলজি টিমে কাজ করি। কিন্তু এই কাজটি আমার খুব বেশি পছন্দের ছিল না। তাই প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চলে যাই। ওখানে গিয়ে আমি খুব তৃপ্তি নিয়ে কাজ শুরু করি। সেখান থেকে আমাকে বোয়িং ৭৮৭ এর কাজে ইতালি পাঠানো হয়। সেখান থেকে আবার প্রমোশন নিয়ে অন্য একটি টিমে কাজ করি। বোয়িং চার্লসটন, বোয়িং সাউথ ক্যারোলিনা, বোয়িং লং বিচ প্রস্তুতে সাহায্য করি। এখন কাজ করছি ৭৭৭ এক্স-এ।

 

কাজ নিয়েছিলেন গ্রোসারি শপে

পড়াশোনার জন্য টাকা দরকার হয়েছে। তখন কোনো কাজকেই ছোট করে দেখেননি। এরোনটিক্যাল প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ নিয়েছিলেন পারকিনস রেস্টুরেন্টে। সেখানে বেয়ারার কাজ করতেন। মায়ামি বিচ এলাকায় কাজ নিয়েছিলেন গ্রোসারি শপে। মুদির দোকানে লম্বা সময় বিক্রেতার কাজ করতে হয়েছে তাকে। টেমন্ট টোয়িং কোম্পানিতেও কাজ করেছেন কয়েক মাস। গাড়ি টেনে নেওয়ার কাজ করে টাকা উপার্জন করেছেন। বুয়েট থেকে নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে জীবন বদলের খোঁজে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। রাত জেগে পড়াশোনা আর বাইরে কাজ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এক দিন। শিক্ষক তাকে হঠাৎ করে সিলেবাসের কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেন। তিনি ঠিকঠাক উত্তর দিয়ে শিক্ষককে চমকে দেন। পরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই তাকে টিচার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। আরিফ রেজা বলেন, রেস্টুরেন্টে সার্ভিস বয়ের কাজ করেছি। হার্ডওয়্যারের দোকানে কাজ করেছি। ১৪০ মাইল পথ গাড়ি চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে পড়াশোনা করতে হয়েছে। বিয়ে করার পর উপার্জনের জন্য একসঙ্গে দুটি কাজও নিতে হয়েছে। দিনে একটি, রাতে একটি। ঘুমানোর সময় পেতাম না। তখন এসে পড়তে বসতাম। ঘুমিয়ে গেলে আমার স্ত্রী ডেকে তুলত, আবার পড়তে বসতাম।’ অসাধারণ ফলাফল করার কারণে ২০০৯-২০১০ সালের দিকে তিনি বোয়িং কোম্পানিতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রজেক্টে কাজের সুযোগ পান। তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সেখানে পৌঁছান। কাজ শুরুর সময় যে ৩০০ ডলার দিতে হবে, সে টাকাও তার পকেটে ছিল না। পরে ওই টাকা মওকুফ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ক্যারিয়ারে দারুণ মেধার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। একের পর এক ডিগ্রি ও সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন তিনি। বোয়িং কোম্পানিতে বিমানের নকশা ও তৈরিতে তার নেতৃত্বের সুযোগ আসে। জীবনের মোড় বদলায়। সেদিনের স্মৃতি আরিফ রেজার, ‘প্রথম সন্তান জন্ম নেওয়ার পর অর্থ সংকট বাড়তে থাকে। আমি খুব ভাগ্যবান, আমার স্ত্রী ও তার পরিবার সব সময় আমাকে সঙ্গ দিয়েছে। সাংসারিক খরচের চাপ থাকলেও আমার স্ত্রী আমাকে সাহায্য করেছে।’ বোয়িং কোম্পানিতে কাজের সুযোগ পাওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে ক্যারিয়ারে উন্নতি হতে থাকে। খুব অল্প সময়েই তার মেধা ও পরিশ্রমে সন্তুষ্ট হয় বোয়িং কর্তৃপক্ষ। প্রমোশন লাভ করেন, তার উন্নতির গ্রাফ ওপরের দিকে ওঠে দ্রুত। তিনি বলেন, ‘বোয়িং অনেক বড় একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে বিমান উন্নয়ন গবেষণা, নকশা প্রণয়ন, তৈরি সব বিভাগেই অনেক বড় দল কাজ করে। সিনিয়র লিড হিসেবে এখন নেতৃত্ব দিলেও বিমান তৈরি ও উন্নয়নের কাজটি একটি টিম ওয়ার্ক।’ আরিফ রেজা এখন বোয়িংয়ের সর্বশেষ সিরিজ ৭৮৭ এক্স তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন এক দিন বাংলাদেশি হিসেবে বোয়িংয়ের মতো আন্তর্জাতিক বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানিতে চেয়ারম্যান পর্যায়ে দায়িত্ব  পালনের সুযোগ আসবে।

 

প্রতিনিয়ত করেছি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

আমেরিকায় অনেকেই বড় বড় চাকরি নিয়ে যান। প্রথমে তারা তিন অথবা পাঁচ বছরের গ্রিন কার্ড পান। তারপর চাকরি সূত্রে সেখানে স্থায়ী হওয়ার পর একে একে নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট পান। কিন্তু যারা শুধু পড়াশোনার জন্য সেই দেশে যায়, তাদের জন্য সেখানে নিজের ঠিকানা গড়ে তোলা অনেক কষ্টের। আমি প্রথমেই বলেছি, আমেরিকায় পড়াশোনা করার প্রথম প্রতিবন্ধকতা সময়। এরপর আসে টাকার প্রসঙ্গ। কারণ আমি একটি স্বপ্ন নিয়ে আমেরিকা গিয়েছিলাম। সে জন্য আমার অনেক সময় চলে যেত। এদিকে পড়াশোনা ও নিজের খরচ চালাতে যে অর্থের প্রয়োজন পড়ত তা আয় করার জন্যও যথেষ্ট সময় থাকত না। তাই কখনো কখনো আমাকে দিনে এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে ২৩ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে। রাতে কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি, দিনে পড়াশোনা করেছি। এমনকি বিয়ের পরও আমি পরিবারকে একদম সময় দিতে পারিনি। পড়ার জন্য নিজের সামান্য আয় খরচ হয়ে যেত। পরিবার চালানোর মতো টাকা থাকত না। তখন আমার স্ত্রী ও শাশুড়ি আমাকে সাহায্য করেছে। এমনকি আমার সন্তানদের প্রতিও দায়িত্ব পালনের সময় পাইনি। আমার স্ত্রী নিজেই তাদের সব দায়িত্ব পালন করেছে। আমি সারা রাত চাকরি করে বাসায় ফিরে হয়তো এক ঘণ্টা অথবা দুই ঘণ্টা ঘুমিয়েছি। স্ত্রী এরিকা আমাকে ডেকে ক্লাসে পাঠিয়েছে, হোমওয়ার্ক করতে সাহায্য করেছে।

 

দেশে আসছে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে যোগ হচ্ছে চারটি বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের ড্রিমলাইনার। যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এই বিমান কেনা হচ্ছে। এ বছর দুটি এবং আগামী বছর বাকি দুটি ড্রিমলাইনার দেশে পৌঁছার কথা। এটিই প্রথম বিমান যার ফ্রেমটি তৈরি করা হয়েছে ‘কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল’ ব্যবহার করে। এছাড়া ৭৬৭ মডেল থেকে অন্তত ২০ শতাংশ কম জ্বালানি ব্যবহার করায় ৭৮৭ ড্রিমলাইনারগুলো দারুণ জনপ্রিয়। প্রযুক্তিগতভাবেও এই ড্রিমলাইনারগুলো অত্যাধুনিক। টার্বোফ্যান থেকে সৃষ্ট শব্দ কমিয়ে আনায় শব্দদূষণও কম হয় এই বিমানগুলো থেকে।

 

 

বিমানের সঙ্গে প্রেম ছোটবেলার

আরিফ রেজার বাড়ি ময়মনসিংহে। ঢাকার ফার্মগেটে বেড়ে উঠেছেন। বাবা এ কে এম রেজাউল করিম ছিলেন আইনজীবী। মা আয়েশা করিম। এক ভাই ও এক বোন রয়েছে তার। আর দশটি সাধারণ শিশুর মতোই আগ্রহ ছিল বিমান নিয়ে। আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার বিমানের গর্জনেই চোখ চলে যেত সেখানে। অবাক হয়ে দেখতেন, আকাশ কাঁপিয়ে কীভাবে উড়ছে বিমানগুলো। আকাশে ভাসা বিমান-হেলিকপ্টার দেখার সুযোগ ছাড়তে চাইতেন না। সত্যিকারের বিমান সামনাসামনি একনজর দেখতে ছুটে যেতেন। তখন কে জানত তার ভবিষ্যৎ জড়াবে এই বিমান তৈরির সঙ্গেই। তিনি নিজেও তা ভাবেননি। তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুলে পড়েছেন শুরুতে। তারপর কলেজ। বুয়েট থেকে পাস করে উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। বুয়েটে নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সঙ্গে অনেকটা মিল রয়েছে এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের। সে কারণে সুযোগ মিলতেই বিমান প্রকৌশলের সঙ্গে যোগ করেন নিজেকে। ক্যারিয়ারের শুরুতে বিমানের উন্নয়ন প্রকল্পে গবেষণার কাজে মনোযোগী ছিলেন। তবে তার মন টানত সত্যিকারের বিমান তৈরির জন্য।

 

প্রেরণা হয়েছে পরিবার

আরিফ রেজা যখন বেঁচে থাকার যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন তখন পরিচয় হয় সমুদ্রতীরে আলিশান কনডোনিয়ামে থাকা এক বিদেশিনীর সঙ্গে। এক দিন তার বাসায় থাকা অবস্থায় দেখতে পান রাস্তায় পুলিশ কর্মকর্তাদের আনাগোনা। জানতে পারলেন এরিক নাইটের মা একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এরিক নাইটকে বিয়ে করার পর তার শাশুড়ি খুব সহানুভূতিশীল থেকেছেন তাদের প্রতি। একসময় বোয়িং কোম্পানিতে যোগদান করেন। তার ব্যস্ততা বেড়ে গেলে ঘর সামলানোর পুরো দায়িত্ব পড়ে স্ত্রী এরিকের কাঁধে। এরিক নাইট বলেন, ‘আমি আরিফের এলার্ম ঘড়ি হয়ে উঠেছিলাম। তার পড়াশোনার চাপ ও কাজের চাপ থাকায় ঘরে সময় দিতে পারত না। আমি সব সময়ই চেয়েছি সে তার বিমান তৈরির কাজটা ঠিকভাবে করুক। বাংলাদেশে আমি তৃতীয়বারের মতো এসেছি। কিছু বাংলাদেশি রান্না শিখেছি। এখানকার মানুষ, ভাষা ও গোটা বাংলাদেশকে আমার ভালো লাগে।’ আরিফ রেজার এমব্রি রিডেল এরোনটিক্যালন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ মেটানোর সামর্থ্য ছিল না। শেষে স্ত্রী এরিক নাইটের আগ্রহেই তা সম্ভব হয়। এই দম্পতির সংসারে দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় সন্তান গ্লেন রেজার বয়স ১৩ এবং ছোট সন্তান আতিফ রেজার বয়স ৮ বছর। বিড়ালপ্রেমী এরিক নাইটের অনেকটা সময় কাটে তার পোষা বিড়াল পিচি-কে নিয়ে।

সর্বশেষ খবর