শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

যৌন হামলা ঠেকাতে উইমেন ওয়ের‌্যাবল

সাইফ ইমন

যৌন হামলা ঠেকাতে উইমেন ওয়ের‌্যাবল

যৌন হামলা শুধু তৃতীয় বিশ্বের সমস্যা নয়। বরং দুনিয়াজুড়েই এই সমস্যা বিদ্যমান। এমনকি মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই নারীদের এই যৌন নির্যতনের মধ্য যেতে হয়েছে এবং বর্তমানের উন্নত বিশ্বেও দৃশ্য একই রকম। যৌন হামলা ঠেকাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে একে প্রতিহত করা যাচ্ছে বটে কিন্তু বৃহৎভাবে এখনো কোথাও তেমন কোনো ফলপ্রসূ কর্যকর উপায় বের করা সম্ভব হয়নি। তাই যৌন হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে মেক্সিকোর চারজন শিক্ষার্থী মিলে একটি জ্যাকেট উদ্ভাবন করেছেন। বলা হচ্ছে, এই জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় কেউ যখন কোন মেয়ের ওপর হামলা চালাতে আসবে তখন জ্যাকেটের হাতা থেকে হামলাকারীর গায়ে বৈদ্যুতিক শক লাগবে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা যে শহরে আছেন, সেখানে ধর্ষণের মতো যৌন হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণে তারা এরকম একটি জ্যাকেট তৈরি করতে উৎসাহিত হয়েছেন।

 

তবে এর দ্বারা কি মানুষ মারা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে উদ্ভাবকরা জানান যে, এই বৈদ্যুতিক শকের তীব্রতা এতটাই কম যে, এর ফলে জ্যাকেটটিকে কোনো ধরনের অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তবে এর মাধ্যমে যে কোনো ধরনের যৌন হামলা ঠেকানো সম্ভব হবে।

 

পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি এই জ্যাকেটের নাম দেওয়া হয়েছে উইমেন ওয়ের‌্যাবল। দারুণ ব্যাপার হলো এই উদ্ভাবক চারজন একই বিষয়ের শিক্ষার্থী নন। তিন ধরনের বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে পড়াশোনা করছেন তারা। প্রকৌশল, আইন ও রোবটিক্স বিভাগে শিক্ষার্থী তারা।

এরা সবাই পুয়েবলা শহরে মন্টেরি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড হায়ার এডুকেশনে পড়াশোনা করেছেন। নতুন নতুন পণ্যের ধারণা নিয়ে ক্লাসে পরীক্ষামূলক কাজের অংশ হিসেবেই তারা এই বিশেষ জ্যাকেট উদ্ভাবন করেছেন। এ প্রসঙ্গে উদ্ভাবকরা জানান যে, আমাদের অনেক বান্ধবী ও পরিচিতদের কাছে শুনেছি যে, তাদের ওপর নানা ধরনের যৌন হামলা চালানো হয়েছে।

সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, পুয়েবলা শহরে প্রতিদিন প্রায় তিনটি করে যৌন হামলার ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের সহিংসতার ওপর কিছু গবেষণার পর আমরা এই জ্যাকেটের ধারণাটি নিয়ে এসেছি।

 

যেভাবে তৈরি হয় উইমেন ওয়ের‌্যাবল জ্যাকেট

চার উদ্ভাবক প্রথমে সুতার তৈরি একটি ট্র্যাক সুট কিনে আনেন। তারপর তার লাইনিং-এর ভিতরে ৯ ভোল্টের একটি ব্যাটারি, একটি ট্রান্সফরমার এবং কিছু ইলেকট্রিক্যাল ওয়্যার ঢুকিয়ে দেন। এগুলো এমনভাবে কয়েলের মতো পেঁচানো অবস্থায় থাকে যেন এই জ্যাকেট পরলে কারও গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে না। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও সেখানে একটি সুইচ বা বোতাম লাগানো আছে। আছে একটি এলইডি বাতিও।

রোবটিক্সের শিক্ষার্থী গিওয়ান পার্ক সার্কিটের নকশা তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, জ্যাকেটের একটি বোতামের মাধ্যমে এর ভিতরে বিদ্যুৎ চালু করা হয়। লাইট জ্বলে উঠলে বুঝতে হবে যে, নিজেকে রক্ষা করার জন্য জামাটি তৈরি হয়ে গেছে। জীবনের ওপর হুমকি তৈরি হবে না। এই জ্যাকেটটি তৈরি করতে সময় লেগেছে তিন মাসের মতো।

সর্বশেষ খবর