শনিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

২ মার্চ গুলিবিদ্ধ হওয়া ১২ বছরের সেই কিশোর

শনিবারের সকাল ডেস্ক

২ মার্চ গুলিবিদ্ধ হওয়া ১২ বছরের সেই কিশোর

সৈয়দ মোহাম্মদ মামুনের বয়স তখন মাত্র ১২ বছর।  ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সপ্তম শ্রেণির এই কিশোর গিয়েছিলেন  ছাত্র-জনতার মিছিলে। সেই মিছিল-সমাবেশ ঠেকাতে মরিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গুলি ছুড়েছিল। দুঃসাহসী এই কিশোরের বুকেও বিঁধেছিল গুলি। ভাগ্য সহায় ছিল তার, প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তার বুকে রয়ে গেছে সেই গুলির চিহ্ন। এখন তার বয়স ৫৮ বছর। ১৯৮৯ সালে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। ২৬ বছর পর দেশে ফিরে আসেন তিনি।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করলে সারা দেশের মানুষ ফুঁসে ওঠে। ২ মার্চ ১৯৭১ সাল। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিবাদ জানাতে নেমে আসে রাস্তায়। সেই মিছিলে এসেছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ মামুন। তার বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। তেজগাঁও পলিটেকনিক হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। সেই স্মৃতি রোমন্থন করেন তিনি, ডুমনী এলাকায় বড় ভাইয়ের বন্ধুর বাসায় ভাড়া থাকতাম তখন। পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতিতেও জড়িয়ে পড়েছিলাম। আওয়ামী লীগের মিছিল- মিটিংয়ে সব সময়ই ছুটে যেতাম। ২ মার্চ  ছাত্র-জনতার মিছিল ঠেকাতে নৃশংসভাবে হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদাররা।’ পঞ্চাশ জনের মতো গুলিবিদ্ধ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এলোপাতাড়ি গুলিতে লুটিয়ে পড়া জনতার মাঝে ছিলেন ১২ বছরের কিশোর মামুন। গুলিবিদ্ধ মামুন বলেন, মিছিলে বাচ্চুু আর আমার বুকে গুলি লাগে। রক্তাক্ত, মুমূর্ষু অবস্থায় আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। পুরোটা সময় অচেতন ছিলাম আমি। শুনেছিলাম, অচেতন অবস্থায় আমাদের দেখতে ঢাকা মেডিকেলে এসেছিলেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।’  বাবা-মা ও ৪ ভাই ৩ বোনের সংসারে মামুন ছিলেন তৃতীয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার জীবনের গল্পটাই পাল্টে যায়। তৎকালীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে অংশগ্রহণের সুযোগও মিলেছিল তার।

মোহাম্মদ মামুনের বাড়ি কুমিল্লা জেলা নাঙ্গলকোট উপজেলার দেওভান্ডার গ্রামে। ২ মার্চ ঢাকার রাজপথে সমাবেশে গুলিবিদ্ধ ১২ বছরের সেই কিশোর; মোহাম্মদ মামুনের এখন একটাই চাওয়া  তাকে যেন মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর