শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফস্টার কেয়ারে অবদানে অ্যাওয়ার্ড পেলেন আফিয়া

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি

ফস্টার কেয়ারে অবদানে অ্যাওয়ার্ড পেলেন আফিয়া

টাওয়ার হ্যামলেটসের একজন ফস্টার কেয়ারার, যিনি গত ১৩ বছরে প্রায় ৩০ জন শিশুকে নিজ ঘরে মাতৃস্নেহে প্রতিপালন করার পাশাপাশি শত শত ফস্টার কেয়ারারকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন, তিনি পেয়েছেন অত্যন্ত মর্যাদাকর ফস্টারিং নেটওয়ার্কস প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড। ফস্টারিং বা প্রতিপালনের ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রাখায় আফিয়া চৌধুরীকে অত্যন্ত মর্যাদাকর এই সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২৪ অক্টোবর বুধবার লন্ডনের ড্রাপারস হলে ইউকের শীর্ষস্থানীয় ফস্টারিং চ্যারিটি দ্য ফস্টারিং নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজিত ফস্টারিং অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে আফিয়া চৌধুরীর হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন শিশুবিষয়ক মন্ত্রী নাদিম যাহাউই। স্বামী এবং চার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আফিয়া চৌধুরী গত সাত বছর ধরে তিন ভাইবোনকে একসঙ্গে প্রতিপালন করছেন। শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগ পর্যন্ত যাতে পারিবারিক পরিবেশে বসবাস করতে পারে সেজন্য তারা তাদের ঘরকে বর্ধিত করেছেন। আফিয়া চৌধুরী শুধু যে মাতৃস্নেহে এই তিন শিশুকে প্রতিপালন করছেন তা নয়, অসংখ্য শিশুর জীবনে তিনি মায়ের স্নেহে মমতা দিয়েছেন এবং টাওয়ার হ্যামলেটস ফস্টার কেয়ারারস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ার হিসেবে অন্যান্য ফস্টার ফ্যামিলি বা শিশু প্রতিপালনকারী পরিবারগুলোকেও সহকর্মী হিসেবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। অন্য পরিচর্যাকারীদের কাছ থেকে তিনি গত এক বছরে ৪৬০টিরও বেশি ফোন কল পেয়েছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ফস্টার অ্যাম্বাসেডর হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে নতুন ফস্টার কেয়ারার নিয়োগে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন। অ্যাওয়ার্ড লাভের পর এক প্রতিক্রিয়ায় আফিয়া চৌধুরী বলেন, দ্য ফস্টারিং নেটওয়ার্কের কাছ থেকে এমন সম্মানজনক পুরস্কার পাওয়ায় আমি ভীষণ খুশি এবং সম্মানিত বোধ করছি। আমি টাওয়ার হ্যামলেটসকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা বছরের পর বছর ধরে আমার কথা শুনে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহযোগিতা দিয়েছে এবং অসাধারণ কিছু বাচ্চাকে প্রতিপালন করার সুযোগ দিয়ে আমাকে ভাগ্যবান হওয়ার সুযোগ দিয়েছে এবং এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য আমার নাম মনোনীত করেছে। তিনি বলেন, বাচ্চাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে আমি ফস্টারিংয়ে এসেছিলাম, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারাই আমার জীবনে পরিবর্তন এনেছে। যারা ফস্টার কেয়ারার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, আমি তাদের এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি। নানা কারণে অসহায় হয়ে পড়া বাচ্চাদের প্রতিপালন জীবন বদলে দেওয়ার অভিজ্ঞতা, যা আমি আর কোনো কিছুর বিনিময়ে পরিবর্তন করব না। দ্য ফস্টারিং নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট লিবিধ্ব থ্রনহিল বলেন, শুধু এই বছরেই সারা দেশে নতুন আট হাজার ফস্টার পরিবার দরকার। বিশেষ করে ভাইবোনকে একসঙ্গে লালন-পালনে আগ্রহী ফস্টার পরিবারের প্রয়োজনীয়তা খুবই বেশি। মুসলিম কমিউনিটি থেকে আরও অধিকসংখ্যক মানুষ ফস্টার কেয়ারিংয়ে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করতে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। ফস্টার কেয়ারার হিসেবেই শুধু নয়, এই কাজে সম্পৃক্ত হতে অন্যদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রেও আফিয়া চৌধুরী একজন অনুকরণীয় মডেল। প্রেসিডেন্টের অ্যাওয়ার্ড দিয়ে তাকে সম্মানিত করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

সর্বশেষ খবর