মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

অসহিষ্ণুতার গভীর গহ্বর

আলী রীয়াজ

অসহিষ্ণুতার গভীর গহ্বর

বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতিও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুতা এক প্রধান বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। একথা মোটেই অতিরঞ্জন নয় যে, বাংলাদেশ অসহিষ্ণুতার এক গভীর গহ্বরে পতিত হয়েছে এবং শক্তি প্রয়োগের ঘটনাবলির মাধ্যমে সেই অসহিষ্ণুতা তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। আমরা তা প্রতিদিন প্রত্যক্ষ করছি— রাষ্ট্রের শক্তি প্রয়োগের মধ্যে, রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির সহিংস উপস্থিতির মধ্য দিয়ে। অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু অনিবার্য এই সত্য। আমাদের মেনে নেওয়া বা না নেওয়ার ওপরে এর উপস্থিতি বা ভবিষ্যৎ নির্ভর করে না।

গত বছরগুলোতে সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহের দিকে মনোনিবেশ করতে যদি নাও চাই, অন্ততপক্ষে কয়েক মাসে সংঘটিত পারম্পর্যহীন কয়েকটি ঘটনার দিকে ভালো করে তাকালেই সেটা উপলব্ধি করতে পারা যায়। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে মামলা দায়ের করার ঘটনাবলি, ‘আপত্তিকর’ বই প্রকাশের অপরাধে একুশের বইমেলায় স্টল বন্ধ করে দেওয়া ও লেখক-প্রকাশকসহ তিনজনকে আটক এবং এক মাসে কমপক্ষে ২৯ জন শিশুকে হত্যা ও অসংখ্য শিশুর ওপরে নির্যাতনের ঘটনা কোনো অর্থেই পারস্পরিকভাবে সংশ্লিষ্ট নয়। কিন্তু এগুলোকে রাজনীতি ও সমাজে বিরাজমান এই প্রবণতার উদাহরণ হিসেবেই দেখা দরকার। এর বাইরেও আরও অনেক ঘটনার দিকে অঙ্গুলি সংকেত করা যায়— জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিচারবহির্ভূতভাবে ২১ ব্যক্তির নিহত হওয়ার ঘটনা এর অন্যতম।

এগুলো যে প্রবণতার সাক্ষ্য দেয় তা হলো আমরা ভিন্ন কিছুকে সহ্য করতে অপারগ হয়ে পড়েছি। শুধু তাই নয়, যাকে আমার ভিন্ন বলে ভাবি তাকে আমরা পরিণত করছি ‘শত্রু’তে। পারিবারিক পর্যায়ের কলহের ক্ষেত্রে যেমন শত্রু তৈরি করি, নিরপরাধ শিশুদের সেই ‘শত্রু’ বিবেচনা করি, সেই বিবেচনায় তাদের হত্যা করতে যেমন কোনো রকম দ্বিধা হয় না, তেমনি জাতীয় পর্যায়েও করি। এই বানানো ‘শত্রু’র ধ্বংস সাধনের জন্য যা কিছু করণীয় তা করতে পিছপা না হওয়ার এক ভয়াবহ প্রবণতা সমাজে ও রাষ্ট্রে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। অসহিষ্ণুতার একটি প্রকাশ হচ্ছে ভিন্নমত সহ্য করতে না পারা, তাকে দমন করা, তাকে নির্মূল করার চেষ্টা করা। ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে ব্লগারদের হত্যা, হত্যার হুমকি তার একরকম প্রকাশ; অন্যপক্ষে রাষ্ট্র ও ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে যে ভিন্নমতকে দমনের অনবরত চেষ্টায় রত সেটাও সহজেই লক্ষণীয়। তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা ব্যবহার বিষয়ে আমরা সবাই অবগত। এখন তার পরিবর্তে আরও কঠোর আইনের বিবেচনাও দুর্নিরীক্ষ্য নয়। গণমাধ্যমের ওপরে চাপ প্রয়োগের ধারা সুস্পষ্ট। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতামত প্রকাশের পথ যে কত সীমিত তা বিস্তৃতভাবে বলার প্রয়োজন হয় না।

ভিন্নমতকে সহ্য না করার এই প্রবণতায় হাতিয়ার হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও যেমন ধর্মের ব্যবহার ঘটছে, তেমনি ঘটছে জাতীয়তাবাদের। ধর্মের যে কোনো উল্লেখকে, যে কোনো আলোচনাকেই একশ্রেণির মানুষ ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ বলে চিহ্নিত করছেন। ব্যক্তিগত বিশ্বাস হিসেবে ধর্ম পালনের অধিকার সব নাগরিকের রয়েছে, আর তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের সেই দায়িত্ব পালনে অন্যথা বা ব্যত্যয় ঘটলে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার, আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়ার অধিকার নাগরিক হিসেবে সবার থাকা জরুরি। সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয় অবশ্যই ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে জড়িত নয়, তা জড়িত নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নের সঙ্গে। ব্যক্তি যদি অন্য ব্যক্তির এই অধিকার পালনে বাধা দেয়, তবে তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পথ রাষ্ট্রকেই করতে হবে, নাগরিকের সেই অধিকারও থাকা দরকার। কিন্তু এই অজুুহাতে অন্যের প্রাণনাশ বা প্রাণনাশের হুমকি একাধারে ভিন্নমত প্রকাশের ওপরে এবং নাগরিকের নিরাপত্তার ওপরে হামলা। প্রাসঙ্গিকভাবে মনে রাখা দরকার, সব ধর্মেই ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে; সে কারণেই ধর্মতত্ত্ব বা থিওলজি জ্ঞানচর্চার একটি ধারা হিসেবে গড়ে উঠেছে। জ্ঞানচর্চার এই ধারা মোটেই নতুন কোনো বিষয় নয়। যে কোনো ধর্মের ইতিহাস পাঠ করলেই আমরা দেখতে পাই যে, ওই ধর্ম প্রচারের সূচনা থেকেই ধর্মশিক্ষা ও জ্ঞানচর্চার ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগটি আসে মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি ক্ষুদ্র অংশ থেকে। সে কারণেই ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের ইতিহাসের সঙ্গে যারা পরিচিত তাদের স্মরণ করা দরকার যে, ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে এবং কখন তৈরি হয়েছিল।

অন্যপক্ষে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন দেশে আমরা দেখতে পাই যে, জাতীয়তাবাদীদের একাংশের মধ্যে এই ধারণা সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে যে, জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে সব বিষয় ইতিমধ্যেই মীমাংসিত হয়ে গেছে; ফলে যে কোনো আলোচনা ও অনুসন্ধানকেই তারা মীমাংসিত বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা বলেই দেখাতে চান। জাতীয়তাবাদ যখন ঔপনিবেশিক শাসন বা দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আদর্শ হিসেবে উপস্থিত হয় তখনো তা অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য, বহুত্ববাদিতাকে আড়াল করে বা তাকে তার অধীনস্থ করে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে নিম্নবর্গের মানুষের লড়াইয়ের প্রশ্ন সে কারণেই অনুচ্চারিত ও অনুপস্থিত। যে সব ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ রাষ্ট্রীয় আদর্শের সঙ্গে যুক্ত, ক্ষমতাসীন দলের আদর্শিক অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত সেখানে জাতীয়তাবাদ বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নকে সরকার বিরোধিতা এবং রাষ্ট্র বিরোধিতার সঙ্গে একত্রিত করে ফেলা হয়। ভারতের জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ক্যাম্পাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চলমান ঘটনা এবং ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতিক্রিয়া এর সাম্প্রতিক উদাহরণ। দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরের মানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবিকেও একইভাবে দেখার একটা প্রবণতা ভারতে সুস্পষ্ট। জেএনইউ-এর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ আইনি দিক নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞার আদর্শিক দিকের বিষয়ও উঠছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে পাকিস্তানি শাসকরা পাকিস্তানের কথিত মুসলিম জাতীয়তাবাদের বিরোধিতাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলেই বিবেচনা করেছে, এখনো বালুচিস্তানের মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার সেভাবেই বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এবং ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এ বিষয়ে বিবেচনা ও চিন্তার উদ্রেক করার কথা। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস বিশেষত গত কয়েক বছরের ঘটনাপ্রবাহ বরঞ্চ বিপরীত পথে যাত্রার সাক্ষী। জাতীয়তাবাদী চিন্তা— তাকে আমরা যে নামেই আখ্যায়িত করি না কেন বাংলাদেশে অসহিষ্ণুতার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে এবং হচ্ছে। জাতীয়তাবাদীরা ইতিহাসের একটি সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যার বাইরে আলোচনাকে অনেক সময়ই কেবল অগ্রহণযোগ্য বলেই মনে করে তা নয় তার প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ করতেও পিছপা হয় না।

যখনই কোনো বিষয় আদর্শের রূপ লাভ করে, কোনো গোষ্ঠী তার রাজনৈতিক ব্যবহারে উদ্যোগী হয়, অর্থাৎ তা ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বাইরে পাবলিক স্পেসে উপস্থিত হয় তখনই তা আলোচনা-সমালোচনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে বাধ্য। ধর্ম, ধর্মনিরেপক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ এর কোনোটাই এর বাইরে নয়। সেই আলোচনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাই হচ্ছে অসহিষ্ণুতার প্রথম লক্ষণ। বাংলাদেশে সেই লক্ষণ এখন কেবল সুস্পষ্টই নয়, তা একটি বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে।

কোনো সমাজে অসহিষ্ণুতা নিজে নিজেই সৃষ্টি হয় না। এর বিভিন্ন উৎস রয়েছে। একটি প্রধান উৎস হচ্ছে রাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র দেশপ্রেম, আত্মপরিচয়, জাতীয়তাবাদ বিষয়ে এমন ধরনের এক ধারণা তৈরি ও প্রচার করে যেখানে বহুত্ববাদিতাকে দেখা হয় জাতীয় সংহতি, অখণ্ডতা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে। যে কোনো ধরনের সমালোচনাকে রাষ্ট্রীয় আদর্শের জন্য চ্যালেঞ্জ বলেই বিবেচনা করা হয়। সেই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা নির্ভর করে রাষ্ট্রের নিপীড়ক যন্ত্রের ওপরে, নিপীড়নমূলক আইন প্রণয়ন এবং তার ব্যবহারের ওপরে। এ সবই করা হয় একটি আদর্শের মোড়কে, তা হতে পারে জাতীয় নিরাপত্তা, উন্নয়ন বা জাতীয়তাবাদ। গত শতকের সত্তর দশকে লাতিন আমেরিকা এবং পূর্ব এশিয়ায় বিভিন্ন সামরিক এবং বেসামরিক সরকার এসব আদর্শের আড়ালে দীর্ঘদিন তাদের কর্তৃত্ববাদী শাসন জারি রেখেছে। বাংলাদেশে আমরা গত কয়েক বছরে সেই প্রবণতাই লক্ষ করছি। নিপীড়ক যন্ত্রের ওপরে নির্ভরতার উদাহরণ হচ্ছে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুমের বিস্তার। বলপ্রয়োগ শাসনের প্রধান উপায় হয়ে উঠছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে উগ্রপন্থি কথাবার্তা বা ডিসকোর্স সবার কাছে স্বাভাবিক বলেই বিবেচিত হয়। উগ্রপন্থি আলোচনা যখন স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয় তখন তা পরোক্ষভাবে উগ্রপন্থি আচরণকে উৎসাহিত করে। এই পটভূমিকায় বিরোধী দল গত কয়েক বছরে রাজনৈতিক আন্দোলনে সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া এবং তাদের ডাকা আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার ফলে ক্ষমতাসীনরা তাদের গৃহীত নিপীড়নমূলক ব্যবস্থাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করতে সক্ষম হয়েছে। তদুপরি রাষ্ট্রযন্ত্রের এ ব্যবহারের পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রধান বিরোধী দলকে দায়ী করলে সত্যের অপলাপ হবে না। বাহিনী হিসেবে র্যাব প্রতিষ্ঠা এবং সরকারবিরোধীদের দমনে তার ব্যবহার একটি উদাহরণ, ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’-এ অংশগ্রহণকারী সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আরেকটি।

গত কয়েক বছরে ক্ষমতাসীনদের গৃহীত এসব ব্যবস্থা, রাষ্ট্র এবং ক্ষমতাসীনদের অসহিষ্ণু আচরণ, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় শক্তির উপর্যুপরি এবং জবাবদিহিহীন ব্যবহারের প্রভাব কেবল প্রচলিত রাজনীতির সীমানায় থাকেনি। থাকার কথাও নয়। রাজনীতি সমাজের বাইরে নয়, রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার প্রভাব সমাজে পড়তে বাধ্য। ফলে অসহিষ্ণুতা সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে বিস্তার লাভ করেছে। সেই কারণেই সারা দেশে শিশু হত্যা, গণপিটুনির নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রবণতাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে বিবেচনা করা দুরূহ। অসহিষ্ণুতাকে মোকাবিলা করার পরিবর্তে তার প্রতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন এবং সরকার সমর্থক ও প্রভাবশালীদের রক্ষার প্রচেষ্টা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।

এসব বিষয়ে সমাজে নীরবতা যত দীর্ঘ হবে অসহিষ্ণুতা ততই শক্তিশালী হবে; এক সময় সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে তা স্থায়ী হয়ে উঠবে।

 

লেখক : অধ্যাপক, পলিটিক্স অ্যান্ড গভর্নমেন্ট, ইলিনয়স স্টেট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর