শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

র্দুবল মুর্হূতে আশ্রয় খোঁজাটাই হচ্ছে ভালোবাসা

বাংলাদেশের মিডিয়া ভুবনের জনপ্রিয় দুই তারকা নুসরাত ইমরোজ তিশা ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। দুজনেই স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে দারুণ সফল। একজন অভিনয়ে, অন্যজন চলচ্চিত্র নির্মাণে। দীর্ঘ নয় বছর একসঙ্গে পথ চলছেন এই তারকা দম্পতি। তাদের ভালোবাসা ও যাপিত জীবনের নানা বিষয় শোবিজ স্পেশাল আড্ডায় তুলে ধরেন -আলী আফতাব

র্দুবল মুর্হূতে আশ্রয় খোঁজাটাই হচ্ছে ভালোবাসা

ছবি : রাফিয়া আহমেদ

অনেকটা নীরবেই চলে গেল শীত। গাছের শুকনো পাতা ঝরে জানান দেয় বসন্তের আগমান বার্তা। ফাগুনের মিষ্টি বাতাস গায়ে লাগিয়ে, একগুচ্ছ হলুদ গ্লাডিওলাস ফুল নিয়ে নুসরাত ইমরোজ তিশা ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বাসায় হাজির হই আমরা। নির্দিষ্ট সময়ের কিছুক্ষণ পর আমাদের সামনে উপস্থিত হয় এই মিষ্টি দম্পতি। প্রশ্ন করার আগেই ঘুম থেকে দেরিতে ওঠার কারণটা জানিয়ে দেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, ‘গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত ফুটবল খেলা দেখেছি। ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় রাত চারটা।’ অন্যদিকে তিশা ব্যস্ত ছিলেন ‘ফাগুন হাওয়ায়’ ছবির প্রচারণা নিয়ে। সারা দিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও মিডিয়া হাউজগুলোতে ঘুরতে ঘুরতে তিশাও ছিলেন বেশ ক্লান্ত। তাই তিশাও একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। এবারের শোবিজ আড্ডার প্রধান বিষয়বস্তু ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে। তাই ফারুকীকে সরাসরি প্রশ্ন, আপনার কাছে ভালোবাসা মানে কী? গল্প নিয়ে যারা পর্দায় খেলেন, তারা কি আর সোজা উত্তর দেন। ফারুকী ভাই বলেন, ‘সম্প্রতি আমি চট্টগ্রামে শুটিং করছিলাম। শুটিংয়ের প্রয়োজনে আমাকে একটি পাহাড়ে উঠতে হয়েছিল। পাহাড়টা খুবই বিপজ্জনক ছিল। আমাদের সঙ্গে পাহাড়ে ওঠার সহযোগিতার জন্য একটি টিম ছিল। এই টিমের যিনি প্রধান তিনি আমার বাম দিক থেকে আমার হাত ধরে পাহাড়ে ওঠাচ্ছিলেন। ফলে বাম দিকে কী কী আছে আমি দেখছিলাম না। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে কখন যে আমি খাড়া পাহাড়ের গা ঘেঁষে অনেক দূরে চলে এসেছি বলতেও পারব না। পাহাড়ের মাঝামাঝি একটি বাঁক আছে, সেখানে গিয়ে আমরা একটু দাঁড়াই। তখন আমি বাম দিকটা দেখতে পাই। পাহাড় থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি, এখান থেকে আমি যদি কোনোভাবে পড়ে যাই আমার মৃত্যু অবধারিত। এটা দেখামাত্র আমার হাত ঘেমে গেল, পা কাঁপতে ছিল, আমি বসে গেলাম। আমি বসে প্রথমে যে কাজটা করলাম, সেটা হলো আমি তিশাকে ফোন দিলাম। কাঁদো-কাঁদো কণ্ঠে বললাম, ‘তিশা আমার অবস্থা খুবই খারাপ। আমি আর পাহাড়ের ওপরে উঠতে পারব না। আমার জন্য একটি হেলিকপ্টার পাঠাও, আমি আর নিচে নামতে পারব না। তখন ফোনের ওপার থেকে তিশা বলল, ‘না, আমি জানি তুমি পারবে। তুমি একটু চেষ্টা কর। আর যদি বেশি অসুবিধা হয়, গ্যারেজে হেলিকপ্টারটা রাখা আছে। আমি আজ শুটিংয়ে হেলিকপ্টারটা নিয়ে যাইনি, আমি তা পাঠিয়ে দেব হা... হা... হা...। এখন বলি ভালোবাসা মানে কী? এই যে ফোনটা করলাম। কাকে ফোনটা করলাম। খুব দুর্বল মুহূর্তে এই আশ্রয় খোঁজাটাই হচ্ছে ভালোবাসা। যার কথা শুনে শক্তি অর্জন করলাম সেটা হচ্ছে ভালোবাসা।’ ঠিক একই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই আমরা তিশার কাছে। তিশা তার সাবলীল অভিনয়ের মতো প্রশ্নটির উত্তর দিলেন, ‘আমার কাছে ভালোবাসা মানে হচ্ছে এক কাপ চায়ের মতো। চা খেতে খুব ভালো হয় তখন, যখন গরম পানিটা ভালো করে ফুটানো হয়, নির্দিষ্ট পরিমাণে চা-পাতি দেওয়া হয়, তাতে পরিমাণ মতো দুধ-চিনি মেশানো হয়। তেমনি ভালোবাসাও হচ্ছে রাগ, অভিমান, ভরসার জায়গা, নির্ভরতার জায়গা, সবকিছু মিলিয়ে হচ্ছে ভালোবাসা।’ তিশা-ফারুকীর বিয়ের বয়স হচ্ছে নয় বছর। আর পুরু সম্পর্কের বয়স হচ্ছে ১৪ বছর। অনেক ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার মধ্যে রাগ-অভিমানের জায়গা থাকেই। নিশ্চয় আপনাদের মধ্যেও রাগারাগি হয়। ফারুকী বলতে শুরু করেন, ‘আমার আগে অনেক রাগ ছিল কিন্তু এখন তার পরিমাণ অনেক কম।’ এই কথা শুনে তিশা হাসতে হাসতে বলে, ‘আমি রাগ করি কিন্তু অল্প সময়ের জন্য।’ তাদের দুজনের রাগের ধরন কিছুটা ভিন্ন; যা তাদের কথায় ফুটে উঠেছে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে তাদের রাগ ভাঙানোর কৌশল প্রায় একই। ফারুকী বলেন, ‘আমি যখন বুঝতে পারি তিশা রাগ করেছে। আমি তার আশপাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করি। খুব হালকা বিষয় নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি। যেমন, তিশা আমাদের নিম সাবানটা শেষ হয়ে গেছে, ঝাড়বাতিটা এখানে ভালো লাগছে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন তিশা বুঝতে পারে আমি তাকে সরি বলতে চাই। আর তিশা বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্ষমা করে দেয়।’

প্রেম, সংসার আর ভালোবাসার গল্প বলতে বলতে আমরা যখন কিছুটা থিতু হয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমরা ফারুকীর কাছে জানতে চাই,  মুক্তির অপেক্ষায় তার নতুন ছবি ‘শনিবারের বিকেল’ প্রসঙ্গে। আমরা তাকে প্রশ্ন করি, এই ছবিটার গল্প না কি ‘হলি আর্টিজান’-এর ছায়া অবলম্বনে। ফারুকী বলেন, ‘আসলে ছায়া অবলম্বনে বলা যাবে না, এ ঘটনা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই ছবির গল্প সাজিয়েছি।’ তার উত্তর শেষ হতে না হতে আমাদের পাল্টা প্রশ্ন, বর্তমানে ছবিটি কী অবস্থায় আছে? ফারুকী বলেন, ‘বর্তমানে আমরা সেন্সর বোর্ডের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছি। এখন তারা সিদ্ধান্ত নেবে ছবিটি কী হবে। আমরা সবাই একটি কথাই জানিÑ আপনি যদি নতুন কিছু করেন, সৎভাবে কিছু করতে চাইবেন, আপনাকে অনেক কথা শুনতে হবে, অনেক বাধা মোকাবিলা করতে হবে। আর সেটা আমার প্রথম ছবি থেকে দেখে আসছি। দর্শক তাদের মতো করে মতামত দেবেন, যুক্তিতর্ক করবেন। এটি আমাদের শিল্পের জন্য স্বাস্থ্যকর। কিন্তু যে বিষয়টি আমার কাছে অস্বাস্থ্যকর মনে হয় তা হলোÑ আমার প্রথম সিনেমা ‘ব্যাচেলর’ প্রায় ছয় মাসের মতো আটকে ছিল সেন্সর বোর্ডে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ প্রায় দেড় বছর আটকে ছিল সেন্সর বোর্ডে। এর থেকে মুক্তি পেয়েছে ‘টেলিভিশন’ আর ‘পিঁপড়াবিদ্যা’। কিন্তু ‘ডুব’ ছবিটিও সেন্সর বোর্ডে আটকে ছিল কয়েক মাস। এখন আবার শুরু হয়েছে ‘শনিবারের বিকেল’। এটা যেন আমার ছবির বেলায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। আগে মানুষের মধ্যে ছবির মুক্তি নিয়ে আগে থেকে এত যুক্তিতর্ক হতো না। স্যোশাল মিডিয়ার কল্যাণে, (স্যোশাল মিডিয়া আমাদের কিছু উপকার করছে, তেমনি কিছু অপকারও করেছে) ‘ডুব’ থেকে যেটা দেখছি। ‘ডুব’ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার আগে এই ছবিটিকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে একটি ফোরাম তৈরি হয়ে গেল। ছবি মুক্তির আগেই যদি আপনারা পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে একটি ফোরাম তৈরি করে ফেলেন, তার মানে আপনাদের মধ্যে একটি ইগো তৈরি করে ফেললেন। তারপর যখন ছবিটি দেখতে যাবেন, তখন ছবির গ্রে-এরিয়াগুলো আপনি দেখতে পারেন না। যারা পক্ষ-বিপক্ষ, ঘৃণা অথবা ভালোবাসা- এ দুটি বিষয় নিয়ে ছবি দেখেন তাদের জন্য ছবির গ্রে-এরিয়া বোঝাটা মুশকিল হয়ে যায়। এটা ‘ডুব’-এর পর থেকে আমার উপলব্ধি হয়েছে। ওই সময় আমার একটা ভুল ছিল। আপনারা সবাই জানেন, আমার ছবির মুক্তির আগে ছবির বিষয়বন্তু নিয়ে আমি কথা বলি না। কিন্তু ডুবের ক্ষেত্রে আনন্দবাজার পত্রিকায় আমার সাক্ষাৎকারটা দেওয়া ঠিক হয়নি। মানুষ ভুল করে এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। আমিও তাই করেছি। ‘ডুব’-এর অতিরিক্ত কোলাহলের পর আমরা ঠিক করলাম ‘শনিবারের বিকেল’ ছবির গল্প নিয়ে আমরা কিছুই বলব না। অনেকটা নীরবেই শুটিং করলাম। এবারও বিষয়টা তাই হলো। শুটিং চলাকালীন কিছু অনলাইন পত্রিকা ও স্যোশাল মিডিয়া খবর প্রকাশ করল, আমরা হলি আর্টিজান নিয়ে ছবি বানাচ্ছি। কোথা থেকে তারা এই তথ্য পেল আমরা তা জানি না। তখন অফিসিয়ালি আমাদের একটি তথ্য দিতে হলো, এই ছবিটি হলি আর্টিজান গল্প অবলম্বনে নয়, হ্যাঁ আমরা শুটিং করছি, এটা সিঙ্গেল শর্ট ফিল্ম, কিন্তু আমরা হলি আর্টিজানের ঘটনা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছবিটি বানিয়েছি, তবে হলি আর্টিজানের ঘটনার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। তারপর অনেক দিন আমরা চুপচাপ। শুটিং শেষে ছবি সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া হলো। সেন্সর বোর্ড ছবিটি দেখে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রশংসাসহ পাসও করে দিল। তারা বললেন, আমরা ছবিটি ছেড়ে দিচ্ছি শুধু ছবির শেষে কিছু কথা লিখে দিতে হবে। আমি বললাম কী কথা পাঠিয়ে দেন আমি লাগিয়ে দেব। তারপর সব কিছু ঠিকই চলছিল। হঠাৎ অনলাইনে একটি প্রোপাগান্ডা শুরু হলো। এবারের প্রোপাগান্ডা ছিল, এই ছবিতে জাহিদ হাসানের মুখে দাঁড়ি দেওয়া হয়েছে, তিশাকে হিজাব পরানো হয়েছে। এই ছবিতে তারা সন্ত্রাসী, এসব দিয়ে ইসলামকে অবমাননা করা হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। ছবিটি কিন্তু নতুন নয়। গত বছর বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন এ ছবি ছাপিয়েছে। আমরা প্রথমে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি কিছু দিনের মধ্যেই স্যোশাল মিডিয়ায় মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে। তারপর আমরা আবার অফিসিয়াল বিবৃতি দেই, ‘এই গল্পে জাহিদ হাসান ও তিশা সন্ত্রাসী নন। এটি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। ছবিটি না দেখে মিথ্যা কথায় কান দেওয়া নয়।’ এ ঘটনার পর সেন্সর বোর্ড থেকে জাজ মাল্টিমিডিয়াকে জানানো হলো, ছবিটি আবার সেন্সর বোর্ড দেখবে। দ্বিতীয়বার ছবিটি দেখার পর সেন্সর বোর্ড ছবিটি আটকে দিল। আমাদের বিশ্বাস আছে, আপিল বোর্ডের ওপর। আপিল বোর্ড ছবিটি দেখার পর বুঝতে পারবে যে আমরা আসলে কী বলতে চেয়েছি আর আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ঠিক নয়।’

লম্বা আলোচনার মধ্যে আমরা সবাই এতই ডুবেছিলাম যে, আমাদের সঙ্গে যে অভিনেত্রী তিশা আছে তা আমরা ভুলতে বসেছিলাম। আমরা তিশার কাছে জানতে চাই ‘ফাগুন হাওয়া’ ও ‘শনিবারের বিকেল’ ছবি প্রসঙ্গে। তিশা বলেন, ‘ফাগুন হাওয়া’ ছবিটির মূল গল্প ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন নিয়ে। কিন্তু তৌকির ভাই গল্পটিকে খুব সহজভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। দর্শক যাতে প্রতিটি চরিত্রকে ভালোভাবে বুঝতে পারে সেই চেষ্টা ছিল আমাদের সবার। অন্যদিকে ‘শনিবারের বিকেল’ ছবিটি না দেখা পর্যন্ত দর্শক এই ছবিটি নিয়ে কিছুই বলতে পারবে না। আমাদের এই জার্নিটা অনেক থ্রিলিং ছিল। এ ছবির জন্য প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী অনেক কষ্ট করেছেন। এক কথায় বলতে হয়, এ ছবির অভিজ্ঞতা ছিল একদম অন্যরকম। আশা করছি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং দর্শক ভালো একটা ছবি উপভোগ করতে পারবে।’ তিশার কথা শেষ না হতেই ফারুকী বলেন, ‘শনিবারের বিকেল’ ছবিতে পৃথিবীর কাছে আমার দেশটা সম্পর্কে কিছু বলার আছে। যে ঘটনা থেকে আমরা মূল অনুপ্রেরণা নিয়েছি ‘হলি আর্টিজান’। এই ঘটনাটা যখন ঘটে, তখন বাংলাদেশের অন্য সব মানুষের মতো আমিও কষ্ট পেয়েছিলাম। আমিও বিশ্বাস করি না এটা আমার বাংলাদেশ। আমার বাংলাদেশে তো এটা হওয়ার কথা নয়। আমার বাংলাদেশে চিন্তার হাজার নদী আছে। এসব নদী একসঙ্গে বহমান ছিল। আমরা কখনো দেখিনি এক নদী অন্য নদীকে গ্রাস করে। আমার বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্র্রিস্টান যে যার যার ধর্ম পালন করে। এ ছবিটা বানানোর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল, আমি আসলে দেখাতে চেয়েছি আমার আসল বাংলাদেশ কোনটা। আমি পৃথিবীকেও বলতে চেয়েছি, আমার বাংলাদেশ আসলে কোনটা।’ গল্প যখন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আর তিশাকে নিয়ে। আমাদের মনে হচ্ছিল আজ আর এই গল্প শেষ হবে না। অবশেষে সময়ের বুকে পাথর রেখে আমাদের আলোচনার সমাপ্তি টানতে হয়।

সর্বশেষ খবর