শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
বন্ধুত্বের ৪৭ বছর

কফি হাউসে আমরা দুজন

কফি হাউসে আমরা দুজন

সত্তরের দশকে বাংলা পপসংগীতের চার খলিফা বলা হতো আজম খান, ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ ও ফিরোজ সাঁইকে।

১৯৭৬ থেকে ’৮৩ সাল পর্যন্ত পপসংগীতে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তারা। এই চারজন ছিলেন চার ঘরানার। আজম খান গাইতেন রক ধাঁচের গান, ফকির আলমগীর লোক ও গণসংগীত, ফেরদৌস ওয়াহিদ করতেন রোমান্টিক পপগান আর ফিরোজ সাঁই করতেন আধ্যাত্মিক পপ গান। এই চার খলিফার মধ্যে এখন আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন দুজন ফেরদৌস ওয়াহিদ ও ফকির আলমগীর। যদিও কোনো কোনো সময় কাজের ক্ষেত্রে অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন ফকির আলমগীর। তাদের বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আড্ডাটি তুলে ধরেছেন- আলী আফতাব - ছবি : রাফিয়া আহমেদ

 

নতুন ধারার সংগীতের বার্তা নিয়ে স্বাধীনতা-পরবর্তী পপসম্রাট আজম খান যখন পথচলা শুরু করেন, সঙ্গে নিয়েছিলেন ফকির আলমগীর, পিলু মমতাজ, ফিরোজ সাঁই ও ফেরদৌস ওয়াহিদের মতো বাংলা গানের রথী-মহারথীদের। ১৯৯৫ সালের ১২ জানুয়ারি ফিরোজ সাঁই ও ২০১১ সালের ২৩ মে পিলু মমতাজকে হারিয়ে অনেকটা একলা হয়ে পড়েন ফকির আলমগীর ও ফেরদৌস ওয়াহিদ। কিন্তু আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা আর ভালোবাসার টানে তারা আবারও কণ্ঠে তুলে নেন গান। এই চার রত্নের দুজনকে এক করার চেষ্টায় আমরা যখন তাদের ফোন করি, এক কথায় রাজি হয়ে যান তারা। এর পেছনের কারণটা ছিল, অনেক দিন দুই বন্ধুর দেখা হয় না। ফাগুনের এক সকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ আড্ডায় যোগ দিতে বসুন্ধরায় আসেন ফকির আলমগীর ও ফেরদৌস ওয়াহিদ। ঢাকার দুই প্রান্ত থেকে আসা দুটি মানুষ একে অন্যকে দেখে খুশিতে আটখানা। আমরা যখন ছবি তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তাদের বলে দিতে হয়নি কী করে ছবির জন্য পোজ দিতে হবে। ফকির আলমগীর ও ফেরদৌস ওয়াহিদ একে অন্যের হাত ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন ফাঁকা রাস্তায়। কখনো ফকির আলমগীর ফেরদৌস ওয়াহিদের শার্টের উপরের বোতাম লাগিয়ে দিচ্ছেন, কখনো ফেরদৌস ওয়াহিদ ফকির আলমগীরের কোমরের বেল্ট ঠিক করে দিচ্ছেন। আবার কখনো ফকির আলমগীরের মোবাইল ফোন নিয়ে ছবি তুলে দিচ্ছেন ফেরদৌস ওয়াহিদ। ছবি তোলার এক পর্যায়ে ফেরদৌস ওয়াহিদ এক রিকশাওয়ালাকে ডেকে রিকশার ড্রাইভিং সিটে উঠে বসেন। আর পেছনের সিটে বসেন ফকির আলমগীর। ফেরদৌস ওয়াহিদ রিকশার প্যাডেলে পা রাখতে না রাখতে ফকির আলমগীর গেয়ে ওঠেন ‘ও সখিনা গেছস কিনা ভুইল্যা আমারে, আমি অহন রিস্কা চালাই ঢাহা শহরে।’

ছবি তোলার এক পর্যায়ে আমরা জেনে যাই তাদের বন্ধুত্বের বয়স প্রায় ৪৭ বছর। তাই আড্ডার শুরুতে আমরা ফেরদৌস ওয়াহিদের কাছে জানতে চাই ফকির আলমগীরের সঙ্গে পরিচয়ের শুরুটা। তিনি বলেন, ‘শতভাগ গানের মধ্য দিয়ে ফকির আলমগীরের সঙ্গে আমার পরিচয়। ফকির ছিল আগাগোড়াই রসিক ও মিশুক মানুষ। তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা গাঢ় হয় ওর বিয়ের সময়। মজার বিষয় হচ্ছে তার মাথায় বিয়ের পাগড়িটা আমার হাতেই উঠেছিল। তার এই বিষয়টি আমার এখনো মনে পড়ে।’ ঠিক একই বিষয়ে ফকির আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই উত্তরটিকে একটু অন্যভাবে দিতে চাই। আমাদের চারটি মানুষকে এক করে রেখেছিলেন ফিরোজ সাঁই। তার মতো সাংগঠনিক মানুষ আমি আর দেখিনি। আমরা যখন কোনো শো’তে যেতাম, দেখা যেত ফিরোজ সাঁই শো’র সব টাকা যন্ত্রীদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে নিজে শুধু মোটরসাইকেলের তেলের টাকা নিয়ে বাসায় চলে যেতেন। ফিরোজ সাঁইয়ের চেহারাটা ছিল যিশুর মতো। তার মুখটা আজও আমার চোখে ভাসে। তারপর বলতে চাই আজম খানের কথা। অত্যন্ত সহজ-সরল মানুষ ছিলেন তিনি। হাতে ব্যাগ নিয়ে মতিঝিলের কলোনিতে বাজার করতেন। পরনে থাকত সাদামাটা কাপড়। কখনো তাকে দেখা যেত বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে, কখনোবা সাঁতার কাটতে। এখন আসি ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রসঙ্গে। ও চিরকালই নায়ক। আমি মাঝে মধ্যে বলি, ভারতের যেমন আধুনিক গানে আছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, সথীনাথ মুখোপাধ্যায়; তেমনি আমাদের দেশে আছে খন্দকার ফারুক আহমেদ, মাহমুদুুন্নবী, আবদুল জব্বার, সৈয়দ আবদুল হাদী, বশির আহমেদসহ আরও অনেকে। পরবর্তী প্রজন্মে আধুনির গানকে পোশাকে-আশাকে তারুণ্যকে নাড়া দিয়েছে ফেরদৌস ওয়াহিদ। এক কথায় বলতে গেলে, ফেরদৌস ওয়াহিদ আমাদের বাংলাদেশের ‘এলভিস প্রিসলি’। এই মানুষটাকে কোনো দিন বার্ধক্য স্পর্শ করতে পারেনি। সব সময় সে হাসি আনন্দ আড্ডায় মেতে থাকতেন।’ ফকির আলমগীরের কথা শেষ হতে না হতে ফেরদৌস ওয়াহিদ বলতে শুরু করেন, ফকির আলমগীর, পিলু মমতাজ, ফিরোজ সাঁই ও আজম খান। এই চারটি মানুষই নিজস্ব চমক নিয়ে এই গানের জগতে এসেছেন। ফকির আলমগীরের গণসংগীত থেকে পপসংগীতে তার যে বিচরণ তা আমরা কোনোভাবেই ভুলতে পারব না। একসঙ্গে সব কিছু নিয়ে টিকে থাকা অনেক কষ্ট ও সাধনার ব্যাপার। আর এই জাগাতে ফকির সফল। গণসংগীত থেকে পপসংগীত, তার মধ্যে অনেকটা পথ। সে ইচ্ছে করলে কিন্তু গণসংগীতেই থাকতে পারত। কিন্তু তার ইচ্ছাশক্তিতে আজ সে দুই মাধ্যমেই রাজত্ব করছে। আমি একটি মজার ঘটনা বলতে চাই, আর তা হলো, হাবিব যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে, একদিন আমি শুনি হাবিব চিৎকার করে বাথরুতে কী একটা গান গাইছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি চিৎকার করছ কেন? হাবিব বলে, না আমি চিৎকার করছি কোথায় আমি ফকির আলমগীরের গান গাইছি। তার গান আমার ভালো লাগে। আমি কখনো এই ঘটনাটা ভুলবো না।

বিটিভির ‘সপ্তবর্ণা’ অনুষ্ঠান দিয়েই মূলত জনপ্রিয় হয়েছিল এ দেশের পপসংগীত। ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফকির আলমগীর, ফিরোজ সাঁই, পিলু মমতাজ, আজম খানরা যে বিটিভিতেই পেয়েছিলেন নতুন দিনের দেখা। এই প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণা করতে বলি ফেরদৌস ওয়াহিদকে। তিনি এক বুক নিঃশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করেন, ‘যতদূর মনে পড়ে, আমি তখন ঢাকা কলেজে পড়ি। আমাদের বাংলা পড়াতেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার। ছাত্র হিসেবেই তিনি আমাকে চিনতেন এবং জানতেন আমি টুকটাক গান করি। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুদিন আগে তিনি আমাকে ডাকলেন। সন্ধ্যায় তাঁর বাসায় গেলাম। বললেন, বসো! তোমার সঙ্গে আমার জরুরি কিছু কথা আছে। পরে বললেন, আমরা বিটিভির ‘সপ্তবর্ণা’র জন্য একটি গানের প্রতিযোগিতা করব। তোমাকে এটার দায়িত্ব দিচ্ছি। দুটি দল বানাও। কে কোন দলে যাবে তুমি তোমার মতো করে ঠিক কর। তারপর আমি, ফিরোজ সাঁই, কাজী হাবলু, পিলু মমতাজ, কাজী আফতাব প্রাথমিকভাবে এক জায়গায় বসে আলোচনা করি। বিভিন্ন পর্বে রেকর্ডিংয়ে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতেন শম্পা রেজা, আজম খান, লাবু রহমান  পিয়ারু খান। সিস্টেমটা হলো এক পক্ষ গান করবে, শেষ অক্ষর দিয়ে আরেক পক্ষ পরের গান ধরবে। আমি তখন সুযোগ বুঝে অনুষ্ঠান প্রচারের সাত দিন আগে স্যারকে বলি, আমি তো আপনার সব করছি। আমার একটা কথা রাখতে হবে। বললেন, কী? বললাম, আমি একটা গান গাইব। মানে ট্র্যাকের ওপর ঠোঁট মেলাব। তখনো বাংলাদেশে এই কালচার চালু হয়নি। গানটি ছিল- ‘এমন একটা মা দে না’। গান শুনে তিনি বললেন, ‘গান তো অনুষ্ঠানে যাবেই। সঙ্গে আমি একটা কথা বলে রাখি, এই গান আজ থেকে ২০ বছর পরও শ্রোতারা মনে রাখবে!’ তার এই কথা সত্য হয়েছে। গানটির মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশনে গান লিপসিংয়ের জগতে প্রবেশ করে।   আমি বলব, শিল্পী হিসেবে আমার জন্মই হয়েছে ‘সপ্তবর্ণা’ অনুষ্ঠানটি দিয়ে। এই সময় ফজলে লোহানীর উপস্থাপনায় ‘যদি কিছু মনে না করেন’ অনুষ্ঠানটিও দারুণ জনপ্রিয় ছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমি সুযোগ পাই। বিটিভির ‘আনন্দ মেলা’ অনুষ্ঠানেও আমি, আজম খান আর ফিরোজ সাঁই এক সঙ্গে পারফর্ম করেছি। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক ছিলেন নায়ক রাজ্জাক। বিটিভি আমাদের স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছে। আর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার একঝাঁক শিল্পী উপহার দিলেন। আজকের ব্যান্ড সংগীতের উন্নতির পেছনে তাঁর যে এত ভূমিকা, তা অনেকেই বলেন না। আমি খুব গর্বের সঙ্গে তাঁর নামটা উচ্চারণ করতে চাই।’ ফেরদৌস ওয়াহিদের কথা শেষ হতে না হতে ফকির আলমগীর বলতে শুরু করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবন পাল্টালেও আজও পাল্টায়নি বিটিভির সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আহ! কত না মধুর ছিল সেই দিনগুলো! ডিআইটি ভবন থেকে রামপুরা টিভি ভবন। কত আড্ডা! কত আনন্দ! কত অনুভব ছড়িয়ে আছে মনে। বিটিভিতে গান গেয়েছি, নাটক করেছি, টক শোতে অংশ নিয়েছি, উপস্থাপনাও করেছি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সপ্তবর্ণা। এ অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তার মূলে ছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার। যাঁর কাছে আমরা অনেক ঋণী। যিনি ‘সপ্তবর্ণা’ থেকে ‘আনন্দ মেলা’র মধ্য দিয়ে আমাদের তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছিলেন। বাংলা পপগানের ইতিহাস যারা লিখবেন, তারা কোনোভাবেই ‘সপ্তবর্ণা’কে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। পাশ্চাত্য সুরের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সংগীতের নতুন এক ধারার গান তৈরি হলো।’

ফকির আলমগীর, পিলু মমতাজ, ফিরোজ সাঁই ও ফেরদৌস ওয়াহিদ- এই চারজনকে চার খলিফা বলা হতো। আমরা ফেরদৌস ওয়াহিদের কাছে জানতে চাই এর পেছনের গল্পটা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি আগেই বলেছি আমাদের চারজনের চারটি স্বকীয়তা ছিল। ওই সময় কোনো একজনকে বাদ দিয়ে কল্পনা করা যেত না। যে কারণে গানের ক্ষেত্রে পাবলিক চাহিদার শীর্ষে ছিলাম আমরা চারজন। আর সেই সময় এ কারণে আমরা একসঙ্গে গান করতাম। এভাবে আমাদের চারজনের জনপ্রিয়তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এবং মানুষ মনে মনে বলতে থাকে এরা কি চার খলিফা। যেখানে যাচ্ছে একসঙ্গে যাচ্ছে এবং মানুষের মন জয় করে নিচ্ছে।’ আরও একটি কথা বলতে পারি, ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত আমরা চারজন কিন্তু গানের এই রাজ্যটাকে ডোমিনেট করি। যদিও ওই সময় সোলস, ফিডব্যাক, মাইলস তাদের যাত্রা শুরু করে ছোট পরিসরে।’ ১৯৯২ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে ১৭ বছর পর এক হয়েছিলেন আজম খান, ফিরোজ সাঁই, পিলু মমতাজ আর আপনারা দুজন। ওই দিনের কথা কিছু শুনতে চাই আমরা। এবারের প্রশ্নটা লুফে নেন ফকির আলমগীর। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমাদের এই পাঁচ শিল্পীকে ১৭ বছর পর মঞ্চে উপস্থাপন করেন সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠন ‘নবোদয়’। প্রথম দিন অনুষ্ঠানের শুরুতে পাঁচ পপতারকা সম্পর্কে এবং বাংলা পপসংগীত সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। এরপর আমরা পাঁচজন তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করি। তারপর ফেরদৌস ওয়াহিদ ‘এমন একটা মা দেনা’, ‘আগে যদি জানিতাম’ এই দুটি গান নিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু করে। তারপর ফেরদৌস ওয়াহিদ একের পর এক গেয়ে যান তার জনপ্রিয় গানগুলো। এরপর মঞ্চে আসেন ফিরোজ সাঁই। ও গেয়ে শোনান ‘সাদা দিলে কাদা লাগাইয়ে গেলি’, ‘পাগল হইতে চাই’, ‘এক সেকেন্ডের নাই ভরসা’ ইত্যাদি জনপ্রিয় গানগুলো। এর পর মঞ্চে আসেন পিলু মমতাজ। পিলুও তার জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করতে থাকেন। সর্বশেষ বাঁশি বাজানোর মধ্য দিয়ে মঞ্চে উঠি আমি। আমিও একের পর এক শোনাতে থাকি আমার জনপ্রিয় গানগুলো। পরবর্তী সময়ে আমাদের পাঁচজনের এমন মঞ্চ পরিবেশনা আর হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।’

আগে এক একটি গান তৈরির পেছনে ছিল এক একটি গল্প। ছিল অনেক মানুষের পরিশ্রম। কিন্তু এখনকার গানের মধ্যে কেমন যেন প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এই বিষয়ে জানতে চাই ফেরদৌস ওয়াহিদের কাছে। তিনি বলেন, ‘তখন সব কিছুই ছিল বাছাইয়ের মধ্যে। গীতিকাররা খুব যতœ নিয়ে গান লিখতেন। সুরকাররা সুর করতেন খুব হিসাব করে। পারফেকশনের জন্য দুই-তিনবার করে যেতে হতো তাদের কাছে। তখনকার সংগীত পরিচালকরা খুব ভেবেচিন্তে কাজ করতেন। কোনো গানে হয়তো ২০টা যন্ত্র লাগত। এটা থেকে এই সাউন্ড, ওটা থেকে ওই সাউন্ড এভাবে কাজ করতে গিয়ে তাদের মানসিক পরিশ্রমটাও বেশি হতো। তাতে একেকটা খাঁটি মধু তৈরি হতো। আর এখনকার গান বিষয়টা কেমন যেন দায় সারা হয়ে গেছে। কোনো রকম করে দিতে পারলেই বাঁচে। এ কারণেই এখনকার গান মানুষের মনে স্থান পায় না।’

সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের গল্পের ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে এমন অনেক অজানা স্মৃতিকথা। তবে অনিচ্ছা থাকার পরও আড্ডার ইতি টানতে হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর