৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১০:৪৬

সিঙ্গাপুরের মতো অর্থের ভাণ্ডার গড়ে তোলা সম্ভব

বিশেষ সাক্ষাৎকারে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর

সিঙ্গাপুরের মতো অর্থের ভাণ্ডার গড়ে তোলা সম্ভব

সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডের মতো সঞ্চিত অর্থের ভাণ্ডার হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। দক্ষতা ও প্রযুক্তিভিত্তিক জনশক্তি গড়ে তুলে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে। মূলধন বাজার থেকে অধিকতর সঞ্চয় আহরণ করে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ উদ্যোগকে বিস্ময়কর অর্জন বলে মনে করেন তিনি।  বলেন, বিশ্বব্যাংককে আমরা সহায়ক হিসেবে চাই, মোড়ল হিসেবে নয়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিমুল মাহমুদ ও জুলকার নাইন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশে কৃষি ব্যাংক ও রাকাব থাকার পরও আপনি নতুন ফারমার্স ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ব্যাংক নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) প্রায় সর্বাংশে ফসলি ঋণ দিচ্ছে। আমরা ফারমার্স ব্যাংকের তরফ থেকে ফসলি ঋণে কম জোর দিয়ে কৃষি যন্ত্রীকরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। যেমন— কৃষি সেচযন্ত্র, ট্রাক্টর, ট্রিলার, হারভেস্টর। আমরা মনে করি, কৃষি খাতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে। এ ক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে কৃষি যন্ত্রীকরণ। কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে সব সময় লভ্য করার জন্য প্রযুক্তির অনুকূলে অর্থায়ন করাই ফারমার্স ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য। দ্বিতীয় লক্ষ্য, বাংলাদেশের তিন পাশে ভারতের যে চারটি রাজ্য রয়েছে সে রাজ্যগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য বিস্তারণ করা। এখন যে বাণিজ্য চলছে তা অনানুষ্ঠানিক, কেউ কেউ একে চোরাকারবারও বলে থাকেন। আমরা মনে করি, বাণিজ্য চলে মূলত চাহিদা ও সরবরাহের শক্তির ওপর। উভয়ে উভয়ের চাহিদা অনুসারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়া সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য ব্যাংকিং শাখা বিস্তৃতির মাধ্যমে এ ভিত্তি দৃঢ় করা। ইতিমধ্যে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনবার কথা বলেছি। মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসামে ফারমার্স ব্যাংকের শাখা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থাপন করব। এ লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে অনুমোদন আসবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ও রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে। তৃতীয় লক্ষ্য, সাম্প্রতিককালে সারা পৃথিবীতে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে প্রগতির যে অভূতপূর্ব বিস্তার ঘটেছে সেই প্রগতির বাহক হিসেবে আমরা কাজ করতে চাই। দেখা গেছে, অন্যান্য আর্থিক হাতিয়ার উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রার ব্যবহারও কমে গেছে। ‘বিটকয়েন’ পর্যন্ত অবতারিত হয়ে গেছে। আমরা এ প্রযুক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে ফারমার্স ব্যাংকের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অধিকতর সঞ্চারণশীল ও অধিকতর নিপুণ করতে এগিয়ে আসছি। ব্যাংকিং খাতে সর্বশেষ প্রযুক্তি আহরণের চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের এখানে চলনসই, লাগসই ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারের চেষ্টা করছি। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : নতুন ব্যাংক হিসেবে আপনাদের পারফরম্যান্স সম্পর্কে বলবেন।

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : ফারমার্স ব্যাংকের তিন বছরের যাত্রায় আমরা মোটামুটিভাবে সফল হয়েছি। এ বছর আমাদের অনুমিত লাভের পরিমাণ প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। আমাদের আমানতের পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকা। আমরা ৩৮টি শাখা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছি। বিশেষত, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে লেনদেনে সক্ষম হতে যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করছি। আমরা মনে করি, ফারমার্স ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রযুক্তিভিত্তিক নিপুণ ব্যাংক। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে খেলাপি ঋণ, অনিয়ম বাড়ছে। কমছে আমানত ও মানুষের আস্থা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬০ ভাগের বেশি। ফারমার্স ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক ভাগেরও কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধানের ভিত্তিতে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গতি আনা যেতে পারে। আমাদের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অধিকতর হারে মূলধন বাজারে বিনিয়োগ ও লেনদেন করা যেতে পারে। সারা পৃথিবীতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে প্রায় সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূলধন বাজার থেকে অধিকতর সঞ্চয় আহরণ করে থাকে এবং এই সঞ্চয় আহরণ করে অধিকতর মাত্রায় বিনিয়োগ করে থাকে। এটা করা গেলে আমাদের সঞ্চয় বাড়বে, বিনিয়োগ বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা, বিনিয়োগকারীদের উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে অর্থের জন্য বসে থাকতে হবে না। বাংলাদেশে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ‘পণ্য বিনিময়গার’ স্থাপন করতে পারিনি। এটা করা গেলে কৃষিপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আমাদের ভবিষ্যৎ বাজার সৃষ্টি করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল দায়িত্ব হবে সহায়তা করা, পথ নির্দেশ করা। কেবল প্রথানুযায়ী তত্ত্বগত নিয়ন্ত্রণ বা তত্ত্বাবধান করা নয়। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা, পথনির্দেশনার ভিত্তিতে বর্তমান বৃত্তকে বিশালভাবে প্রসারিত করতে চাই।

সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, কেম্যান আইল্যান্ড, লাইজেনেস্টাইন— এরা বাংলাদেশের চেয়ে ছোট রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্র, বিনিয়োগের উৎস হিসেবে কাজ করছে। আমরাও সিঙ্গাপুর যেভাবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের উৎস হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলেছে, সুইজারল্যান্ড যেভাবে পৃথিবীর সঞ্চিত অর্থের ভাণ্ডার হিসেবে ক্ষুদ্র আয়তন সত্ত্বেও নিজেদের গড়ে তুলেছে সেভাবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের তরলায়িত অর্থ থাকা সত্ত্বেও আমরা সেটা বিনিয়োগ করতে পারছি না। এ ছাড়া বাংলাদেশে এখনো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বা ঝুঁকি মূলধন সরবরাহের প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। নিত্যনতুন ক্ষেত্রে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা ও সক্ষমতা না বাড়ালে আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাকে শৈল্পিক জগৎ ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার সঙ্গে ফলপ্রসূভাবে সংযুক্ত করতে পারব না।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি এখনো হতাশাজনক। বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। ব্যাংকে অলস টাকা জমছে। বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় কী?

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : সব ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আমাদের জন্য লাভজনক হবে না। ক্ষেত্রবিশেষে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে পারি। বাংলাদেশে বিড়ি, সিগারেট, বিস্কুট, সেমাই উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ লাভজনক হবে না। বিদেশি বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের উপযোগী সেটা চিন্তা করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ সাম্প্রতিককালে আর্থিক মাত্রায় কমে গেলেও বাংলাদেশে বিনিয়োগ কমেনি। আমরা জাতীয় আয়ের ৩৩ ভাগ সঞ্চয় করি, তার মধ্যে ২৮ ভাগ বিনিয়োগ করি। কিছু অংশ এখনো বিনিয়োগ হয় না। না হয়ে কোথায় যায় সেটা ভালো করে দেখা দরকার। সে জন্য বিনিয়োগকে সঞ্চায়িত করতে একটি ব্যাংক কমিশন গঠন করা দরকার। এর মধ্য দিয়ে আমাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হবে। তারা সময় মতো সুপারিশ করবে। ব্যাংক কমিশন আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রক্রিয়াটা দেখবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অধিকতর শক্তিশালী করতে পথনির্দেশ করবে। আমাদের প্রযুক্তি দেখবে। এখন ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মূলধন বাজারের শক্তিশালী কোনো সংশ্রব নেই। এখনকার সময়ে এবং অনাগত ভবিষ্যতে মূলধন বাজারকে আমাদের বিনিয়োগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আমাদের প্রায় কোটি মানুষ বিশ্ব শ্রমবাজারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু রেমিট্যান্সের সিংহভাগ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হচ্ছে। এটাকে কীভাবে উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করা যায়।

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : বৈদেশিক শ্রমবাজারে দুটো বিষয় সম্পর্কে আমরা অবগত নই। ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১ কোটি লোক দেশের বাইরে কাজ করে। এর মধ্যে ৮৪ লাখ বৈধ, ১৬ লাখ অবৈধভাবে। প্রতি ১৬ জনে একজন বিদেশে আছে। মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী বাদ দিলে প্রতি আটজনে একজন বিদেশে কাজ করে। শিশু ও বয়স্ক অর্ধেক বাদ দিলে প্রতি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে আছে। এরচেয়ে বেশি শ্রমিক আমরা কখনই পাঠাতে পারব না। তাই যাদের পাঠাচ্ছি দক্ষ শ্রমিক হিসেবে পাঠাতে হবে। বিদেশে গিয়ে তারা উন্নততর প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। ১০-১৫ বছর কাজ করে তারা যখন ফিরে আসে তখন সেই প্রত্যাগত শ্রমিকদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে পারলে দেশের কল্যাণে অধিকতর কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : গত কয়েক বছরে অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বাধিক মনোযোগ দিয়েছে সরকার। বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন সহযোগীকে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের এই অর্জনকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন।

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : এই অর্জন বিস্ময়কর অর্জন। এর মধ্য দিয়ে আমরা এ কথা প্রমাণ করেছি যে, ১৯৪৪ সালে বাটেন উডস চুক্তি অনুযায়ী দরিদ্র দেশের উন্নয়নে যে বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই বিশ্বব্যাংক এখন পর্যন্ত সহযোগীর ভূমিকায় না থেকে মাতব্বরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ভূমিকার মাধ্যমে আমরা এ কথা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, এ পথ অনুসরণীয় পথ হয়। বিশ্বব্যাংককে আমরা সহায়ক হিসেবে চাই, মোড়ল হিসেবে নয়। আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি সেটা বিশ্বব্যাংককে শিক্ষা দিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : পাবলিক একাউন্টস কমিটির সভাপতি হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কঠোর ভূমিকা রাখছেন আপনি। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কতটা সহায়ক হবে?

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : স্বৈরতন্ত্রের সময়ে সরকারের ওপর জাতীয় সংসদের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সংসদ তখন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়ে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যক্রমকে বলিষ্ঠ করেছি। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বাজেট অনুযায়ী হচ্ছে কিনা তদারক করছি। আগে যেখানে ১২-১৫ বছরের হিসাব অপরীক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকত সেটা এখন দুই বছরে নিয়ে এসেছি। সংবিধান অনুযায়ী, সরকারি হিসাব নিরীক্ষণের দায়িত্ব মহাহিসাব নিরীক্ষকের। কিন্তু তাদের সক্ষমতা ১০ ভাগেরও কম। তাদের লোকবল ও সম্পদ বাড়ানো দরকার। জাতির তরফ থেকে আমরা যে বিনিয়োগ করি সেটা যথাযথ নিরীক্ষা হওয়া দরকার। ইতিমধ্যে সম্পাদিত ব্যয়ের হিসাব আমরা নিরীক্ষা করছি। কিন্তু আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে পরামর্শ দেওয়া দরকার সেটা দিতে আমরা সক্ষম নই।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় জবাবদিহিতার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত।  নেতিবাচক রাজনীতি চর্চায় ক্ষয়িষ্ণু বিএনপি এখন ভোটের ধারায় ফিরে এসেছে। বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন। 

মহীউদ্দীন খান আলমগীর : গণতন্ত্র একটি নিরবচ্ছিন্ন চর্চার বিষয়। গণতন্ত্র একদিনে লভ্য নয়। গণতন্ত্র স্থাপিত করতে হলে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো, সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের পরিচালনা করা। সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের পরিচালিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই সংবিধানকে ফরমান দিয়ে পরিবর্তন করেছেন জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সময় মতো সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। এই প্রক্রিয়ায় কেউ যদি গোসা করে, আঁচল মুখে রেখে যদি বলেন, আমি গণতন্ত্রের ঘরে প্রবেশ করব না, তারা গণতন্ত্রী নয়। গোষ্ঠীগত স্বার্থকে সামনে রেখে নির্বাচনকে বর্জন করা গণতন্ত্রের অনুসরণ নয়।  সংবিধান অনুযায়ী আমরা সময় মতো সব পর্যায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে একটি স্থায়ী সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য রূপ দিয়ে এই দেশকে সব নাগরিকের সমৃদ্ধির জন্য পরিচালিত করতে সক্ষম হব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর