১২ এপ্রিল, ২০১৬ ১৪:০৮
সাক্ষাৎকার : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও আমরা গণতন্ত্র খুঁজছি

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও আমরা গণতন্ত্র খুঁজছি

উত্তরার বাসায় গতকাল সাক্ষাত্কারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর —রোহেত রাজীব

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপিতে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরই তিনি দলের ভিতরে-বাইরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। দায়িত্ব পাওয়ার পর রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খোলামেলা কথা বলেন। আলোচনার বড় অংশ জুড়েই ছিল চলমান রাজনীতি, গণতন্ত্র নিয়ে। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়লে সর্বস্তরে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এটা অশনি সংকেত। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও আমরা এখনো গণতন্ত্রকেই খুঁজছি। বিরোধী দলের রাজনীতি করার অধিকারটুকুও সরকার কেড়ে নিচ্ছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনাই বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ।

রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে দীর্ঘ আলাপচারিতায় বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, সরকারের সঙ্গে সংলাপ সমঝোতা ইত্যাদি নিয়ে বিশদ বলেছেন বিএনপির এই ক্লিন ইমেজের নেতা। সাক্ষাত্কারের চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন আমাদের সিনিয়র রিপোর্টার মাহমুদ আজহার।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : পাঁচ বছর পর অবশেষে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হলেন— আপনার অনুভূতি কেমন?

মির্জা আলমগীর : এটা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আমি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। ওই সময়ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি। তবে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হওয়ার পরে দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা পাচ্ছি। আমি সব সময় চেষ্টা করি, দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করার। আশা করি অতীতের মতো ভবিষ্যতেও নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন পাব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপির মহাসচিব হিসেবে আপনার সামনে চ্যালেঞ্জ কী?

মির্জা আলমগীর : বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘ সংগ্রাম করে মুক্তিযুদ্ধ করে যে গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রব্যবস্থার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, তা ফিরিয়ে আনাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। বিএনপিকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে সঠিক নেতৃত্বদানের উপযোগী একটি উদারপন্থি দল হিসেবে গড়ে তোলাও আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। দেশে আজ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জনগণের ভোটের অধিকার ও বাকস্বাধীনতা নেই। মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও আমরা গণতন্ত্রকেই খুঁজছি। বিরোধী দলের রাজনীতি করার অধিকারটুকুও সরকার কেড়ে নিচ্ছে। প্রশাসনসহ সর্বস্তরে আজ দলীয়করণ চলছে। জাতি আজ ক্রমেই মেধাশূন্য হয়ে পড়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : কাউন্সিল তো শেষ হলো। তিন পদ ছাড়া বাকিগুলো ঘোষণা হয়নি। কতদিন লাগতে পারে?

মির্জা আলমগীর : ইতিমধ্যে দলের মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাহী কমিটির বাকি পদগুলো ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপিতে এক নেতার এক পদ—এটা বাস্তবায়ন করা কি সম্ভব?

মির্জা আলমগীর : অবশ্যই সম্ভব। এবার গঠনতন্ত্রে যুক্ত হয়েছে এক নেতার এক পদ। দলের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। সর্বস্তরের নেতারা আরও মূল্যায়িত হবেন। কাজে গতি আসবে। আমি নিজেই ইতিমধ্যে মহাসচিব ছাড়া অন্য সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। আশা করছি, নতুন করে পদ পাওয়া অন্য নেতারাও শিগগিরই অন্যসব পদ ছেড়ে দেবেন। দলের গঠনতন্ত্রে এ বিধান যুক্ত করায় নেতা-কর্মীরা খুবই খুশি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : কাউন্সিলে যা প্রত্যাশা করেছিলেন, তা কি পূরণ হয়েছে?

মির্জা আলমগীর : সরকারি নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অবশ্যই বিপুল সংখ্যক কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের উপস্থিতিতে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে কাউন্সিল হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যে নেতা-কর্মীরা দিক নির্দেশনা পেয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের ভিশন-২০৩০ রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সহায়তা করবে। আশা করি, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সংলাপের আহ্বানকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে। মোদ্দাকথা—কাউন্সিলে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তৃতায় বিএনপির তরুণ নেতৃত্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কাউন্সিল আর নতুন নেতৃত্ব দলকে আরও গতিশীল করে তুলবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশের রাজনীতি কোন পথে?

মির্জা আলমগীর : সরকার যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার পরিকল্পনা করছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সংসদকে গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে এক দলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশ এক ভয়াবহ পথে চলছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়লে রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে সর্বস্তরে। এটা অশনি সংকেত।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপির সামনে করণীয় কি?

মির্জা আলমগীর : প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিএনপি গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ বিকাশের লড়াই করে যাচ্ছে। এটা অব্যাহত আছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ওয়ান-ইলেভেনসহ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির লড়াইয়ের মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র ও আইনের শাসন। সেই লড়াই এখনো অব্যাহত আছে। যতদিন না জনগণ তার ভোটাধিকার ফিরে পাবে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবে—ততদিনই এ লড়াই অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সরকার তো সংলাপ সমঝোতার রাজনীতির পথে হাঁটছে না।

মির্জা আলমগীর : সরকার সংলাপ-সমঝোতার পথে না হাঁটলে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের পথে বিএনপি। এটা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সরকার ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেবে?

মির্জা আলমগীর : এটা নির্ভর করবে সরকার কত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করতে পারবে যে—সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যতীত রাজনৈতিক সংকট নিরসন হবে না। আশা করি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বোধোদয় হবে। দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে দ্রুতই একটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সরকার রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গেই আলোচনায় বসতে পারে। সরকার সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এগোলে বিএনপি তাতে সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ভারতের সঙ্গে বিএনপির কি কোনো বৈরিতা আছে? সম্পর্ক এখন কোন পর‌্যায়ে?

মির্জা আলমগীর : কোনো দিনই ছিল না, এখনো নেই। ভারত প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। বিএনপি সবসময়ই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক পারস্পরিক সম্মান রক্ষার সম্পর্কে বিশ্বাস করে। কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী বিএনপি। সমতার নীতিকে ভিত্তি করে বিএনপি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরি করার নীতিতে বিশ্বাস করে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : অনেকেই বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর বিএনপি অনেক রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মির্জা আলমগীর : ব্যাপারটি আপেক্ষিক। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সব সময় সফল নাও হতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে, তা ভুল ছিল। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সরকারি দলের দমনপীড়ন-হামলা-মামলার পরও বিএনপি তার আপন শক্তিতে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিকে ধ্বংস করতে এমন কোনো পরিকল্পনা নেই, যা সরকার করছে না। চেয়ারপারসন ও সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলার খড়গ ঝুলছে। গুম, খুন গ্রেফতার-হুলিয়ার পরও বিএনপিকে ধ্বংস করতে পারেনি। বিগত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্বাপর আন্দোলন সফল এ জন্যই যে, ওই নির্বাচনে ৫ ভাগ ভোটও পড়েনি। ভোট কেন্দ্রে মানুষের উপস্থিতি ছিল না। কুকুরকে কেন্দ্র পাহারা দিতে দেখা গেছে। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সরকারের প্রতি দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অনাস্থা জানিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সামনে সংলাপ-সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে?

মির্জা আলমগীর : এটা নির্ভর করে সরকারের সদিচ্ছার ওপর। দেশের মানুষ মনে করে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এখনই সংলাপ জরুরি। এটা শুধু দেশবাসীই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোও এটা চায়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিগত ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বৈঠকে সেদিন কী কথা হয়েছিল?

মির্জা আলমগীর : আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলে নির্বাচন পেছাতে রাজি হয়নি। তবে নির্বাচনের পরপরই অতি দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন পদ্ধতি নির্ধারণ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। অবশ্য এটা আওয়ামী লীগের অভ্যাস। অতীতেও তারা এ ধরনের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ৮০-এর দশক, ৯০-এর দশক ও বর্তমান রাজনীতিতে গুণগত পার্থক্য কী?

মির্জা আলমগীর : বর্তমান বিশ্বরাজনীতির গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী জনগণের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, নব্বইয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচন আর বর্তমান রাজনীতি কর্তৃত্ববাদী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরিবর্তন—একেবারেই বিপরীতমুখী। বর্তমান রাজনৈতিক নিপীড়ন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অতীতের বাকশাল ও স্বৈরাচারকেও হার মানিয়েছে এ সরকার।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপির ভিশন-২০৩০—এটা কি শুধুই ‘কাগুজে’ না বাস্তবায়ন করতে পারবে?

মির্জা আলমগীর : রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি অবশ্যই ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়ন করবে। বিএনপি বরাবরই তা করে এসেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এই ‘ভিশন-২০৩০’ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ আশান্বিত হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বলা হয়, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাস প্রকট। সরকারের চেয়ে বিএনপির শত্রু বিএনপি।

মির্জা আলমগীর : বাংলাদেশে বিএনপি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। দলের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কোনো বৈরিতা নেই। এটাকে সন্দেহ অবিশ্বাস বলা ঠিক হবে না। এই অগণতান্ত্রিক সরকারের একমাত্র শত্রু গণতান্ত্রিক বিএনপি। বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের আস্থায় নিয়ে আপনি কি মহাসচিবের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন?

মির্জা আলমগীর : ইনশাল্লাহ পাঁচ বছর ধরে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের যে সমর্থন পেয়েছি, ভবিষ্যতেও তা থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনার দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন।

মির্জা আলমগীর : আমার দিন জুড়েই থাকে দলের কাজ। ভোর থেকে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত দলই আমার অগ্রাধিকার। আমার পরিবারও বিষয়টি মেনে নিয়েছে। এক্ষেত্রে আমার সহধর্মিণীর সহযোগিতা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনার পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন।

মির্জা আলমগীর : আমার ছোট পরিবার। সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ বিদেশে পড়াশোনা করে গবেষণাধর্মী কাজ করছে। ছোট মেয়ে মির্জা শাফারুহ পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছে। বড় মেয়ের স্বামীও বিদেশে একই পেশায় কর্মরত। তার কন্যা সন্তান আছে। ছোট মেয়ের স্বামী দেশেই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তার একপুত্র সন্তান রয়েছে। আমার মা বেঁচে আছেন, তিনি এখনো সুস্থ। ছোট দুই ভাই চার বোন। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। বাবা মরহুম মির্জা রুহুল আমিন (চখা মিয়া) স্বাধীনতার আগে ও পরে একাধিক বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রীও হয়েছেন। চাচা মরহুম মির্জা গোলাম হাফিজও সাবেক মন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনার জন্ম শৈশব-কৈশোর সম্পর্কে বলুন।

মির্জা আলমগীর : স্বল্প পরিসরে তো বলা সম্ভব নয়। আমার জন্ম ঠাকুরগাঁওয়ে। শৈশব-কৈশোর স্কুলিংও একইস্থানে। একাদশ, দ্বাদশও ঠাকুরগাঁওয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করেছি। এক কথায় আমার শৈশব-কৈশোর, তারুণ্য পরিবর্তনশীল সমাজে কেটেছে। শৈশব ও কৈশোরে সমাজ বদলে দেওয়ার, সত্য ও ন্যায়ের সন্ধানে যে প্রজন্ম গড়ে উঠেছে আমি তাদেরই একজন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনি তো শিক্ষক ছিলেন, রাজনীতিতে কীভাবে এলেন?

মির্জা আলমগীর : ছাত্র জীবনের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। পেশা হিসেবে অধ্যাপনায় জড়িত থাকলেও রাজনীতির সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ছিলাম না। তৃণমূল থেকেই প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : রাজনীতি আর পরিবার কোনটার গুরুত্ব আপনার কাছে বেশি?

মির্জা আলমগীর : আমার জীবন দেখলেই তার উত্তর পাওয়া যাবে। রাজনীতি আমার প্যাশন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনাকে ধন্যবাদ।

মির্জা আলমগীর : আপনাকে ও দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের অগণিত পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

বিডি-প্রতিদিন/১২ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর