শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইতিহাস গড়তে চায় চট্টগ্রাম আবাহনী

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ইতিহাস গড়তে চায় চট্টগ্রাম আবাহনী

জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না। সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ় কণ্ঠে এ কথাই বললেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ মানিক ও অধিনায়ক এমিলি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দীর্ঘদিন ধরে ফুটবল খেলছে। কিন্তু চট্টগ্রাম লিগ শিরোপা ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর বড় ধরনের সাফল্য নেই বললেই চলে। একবার নিটল টাটা জাতীয় লিগে সেমিফাইনালে খেলেছিল এই যা। আজ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নিজেদের আয়োজিত শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে সেমিফাইনাল খেলবে তারা। প্রতিপক্ষ হয়ে মাঠে নামবে আফগানিস্তান চ্যাম্পিয়ন বাজান ক্লাব। রাত ৭টা ৪০ মিনিটে ম্যাচটি শুরু হবে। পেশাদার লিগে দুর্বল দল নিয়ে মাঠে নামলেও শেখ কামাল ক্লাব কাপ টুর্নামেন্টে চট্টগ্রাম আবাহনীর চেহারা পাল্টে গেছে। শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের অধিকাংশ ফুটবলার অতিথি হিসেবে তাদের দলে খেলেছেন। এ জন্য শেখ রাসেল কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করতে হয়। টুর্নামেন্টে তাদের আমন্ত্রণ না জানালেও দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলোয়াড়দের খেলার অনুমতি দিয়েছেন। ঢাকা আবাহনী গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মোহামেডান ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। সাদাকালোর ঐতিহ্যবাহী দলটি আগামীকাল কলকাতা ইস্ট বেঙ্গলের মুখোমুখি হবে। অর্থাৎ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের দুটি ক্লাবেই সেমিফাইনাল খেলছে। তবে শক্তির বিচারে চট্টগ্রাম আবাহনীকে এগিয়ে রাখা যায়। প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ২-১ গোলে হারলেও এমিলিরা অসংখ্য গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিল তাতে ম্যাচ জেতা উচিত ছিল স্বাগতিকদের। এই হারে চট্টগ্রাম আবাহনীর সেমিফাইনাল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু পরবর্তী দুই ম্যাচে উজ্জীবিত হয়ে ‘বি’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে ঠাঁই করে নেয়। ঢাকা আবাহনীকে ১-০, করাচি ইলেকট্রিক ক্লাবকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত হ্যাটট্রিক হয়েছে একটি। তা করেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর জাহিদ। স্বাগতিকদের প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে জাহিদ পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলছেন। রক্ষণভাগ কিছুটা এলোমেলো হলেও মধ্যমাঠ ও আক্রমণভাগ বেশ সক্রিয়। যে পরিকল্পনা নিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে তা চোখে পড়ার মতো।

এরপরও কি আজ আফগানিস্তানের চ্যাম্পিয়ন বাজান ক্লাবকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারবেন এমিলিরা? ফাইনালে ওঠা মানেই দলটির নতুন এক ইতিহাস গড়া। কেননা এর আগে বড় কোনো টুর্নামেন্টে চট্টগ্রাম আবাহনী ফাইনাল খেলতে পারেনি। বাজান দলকেও খাটো করে দেখার উপায় নেই। সাফ চ্যাম্পিয়নের ক্লাব তারা। টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচে ঢাকা মোহামেডানকে ১-০, পরে কলকাতা মোহামেডানের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করলেও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সলিড এসসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে বাজানকে অবশ্যই শক্তিশালী বলব। তারপরও আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। প্রথম ম্যাচে দুভার্গ্যক্রমে হারলেও পরের দুই ম্যাচে ছেলেরা বেশ গুছিয়ে খেলেছে। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে শুধু সেমিতে জয় নয়, শিরোপা জেতার ব্যাপারেও আমি আশাবাদী। তিনি বলেন, সেমিফাইনালে দুদলই চাপে থাকে। তাই খেলোয়াড়দের মনে রাখতে হবে সুযোগ যেন হাত ছাড়া না হয়। বাজানের খেলা দেখেছি, আমরা তাই কৌশল খাটিয়ে খেলতে চাই। আশা রাখি দর্শকরা হাসি মুখে গ্যালারি ছাড়বেন। অধিনায়ক জাহিদ হোসেন এমিলি বলেন, বাজান শক্তিশালী দল। জিততে হলে সবাইকে জানপ্রাণ দিয়ে লড়তে হবে।

বাজানের কোচ মোহাম্মদ ওয়াহিদুল্লাহ বলেন, সেমি মানেই বাঁচামরার লড়াই। হারলেই বিদায়। তাই চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে আমরা জেতার প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামব। দর্শক ও পরিবেশের কারণে স্বাগতিকরা কিছুটা সুবিধা পাবে ঠিকই। তারপরও এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই। ফুটবল গোলের খেলা। যারা গোল দেবে তারাই জিতবে। ছেলেদের বলেছি বেশি চাপ নেওয়ার দরকার নেই। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে পারবে। এদিকে নিজেদের টুর্নামেন্টে চট্টগ্রাম আবাহনী সেমিফাইনাল খেলছে। এ নিয়ে দর্শকদের ভিতর উৎসব ও  উত্তেজনা দুটোই কাজ করছে। আয়োজকরা আশা করছেন দুই সেমিফাইনাল দেখতে প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটবে।

 

সর্বশেষ খবর