মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আলো ছড়ালেন ইমরুল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আলো ছড়ালেন ইমরুল

একাদশে সুযোগ পেয়েই আলো ছড়ালেন ইমরুল কায়েস। গতকাল তার ব্যাট থেকেই ৮৯ বলে এসেছে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭৬ রান - রোহেত রাজীব

শচীন টেন্ডুলকারের ফর্ম তখন মধ্য গগনে। ব্যাটিংয়ে নামলেই পিলে চমকে ওঠে প্রতিপক্ষ বোলারদের। স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন বোলারদের। অপরাপর ক্রিকেটারের সঙ্গে তার প্রতিভার পার্থক্য এতটাই যে, ভারতের সাবেক ওপেনার বিক্রম রাঠোর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে অনুরোধ করেন ঘরোয়া ক্রিকেটে যেন টেন্ডুলকারকে খেলতে দেওয়া না হয়। হরভজন সিং এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ড্রেসিং রুমে শচীনের উপস্থিতিতে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকেন ক্রিকেটাররা। সেই বিচারে টেন্ডুলকারের ধারে-কাছে নেই হয়তো সাকিব আল হাসান। কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিকেটার ও ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ সাকিব, এ নিয়ে সন্দেহ নেই কোনো। সাকিবের উপস্থিতি দলকে যে বাড়তি উদ্দীপনা জোগায়, গতকাল সিরিজ জিতেও মিডিয়াকে তেমনই জানিয়েছেন টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শুধু উদ্দীপ্ত নয়, সাকিবকে ছাড়া একাদশ সাজাতেও হিমশিম খাওয়ার কথা স্বীকার করেন টাইগার অধিনায়ক। সাকিবের অনুপস্থিতির পরও গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫৮ রানে জিতল বাংলাদেশ। ৭৬ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা ইমরুল কায়েসের স্বীকার, তার পারফরম্যান্সের কারিগর অধিনায়ক মাশরাফি।

প্রথম ওয়ানডেতে ১৪৫ রানের বড় জয়ে সাকিব উইকেট নিয়েছিলেন ৫টি। গতকাল তিনি না থাকলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন অন্য বোলাররা। টাইগার অধিনায়ক সতীর্থদের কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, ‘সাকিব না থাকায় বোলারদের ওপর বাড়তি দায়িত্ব ছিল। তারা সে দায়িত্ব খুব ভালোভাবে পালন করেছেন। তারপরও সাকিবের অভাব প্রতি মুহূর্তে অনুভ‚ত হয়। তাকে ছাড়া একাদশ সাজানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। সাকিব ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সমান পারদর্শী। তার অনুপস্থিতিতে আমাদের দুই বিভাগ নিয়েই ভাবতে হয়।’ প্রিয় সন্তানের পাশে থাকতে সিরিজের মাঝপথে ছুটি নিয়ে সাকিব এখন যুক্তরাষ্ট্রে। গত নভেম্বরে অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত করেন মাশরাফি। এরপর ঘরের মাটিতে হারান দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও ভারতকে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সব মিলিয়ে দেশের মাটিতে টানা পঞ্চম সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়েন মাশরাফি। এমন কৃতিত্বে আনন্দিত অধিনায়ক মাশরাফি, ‘টানা পাঁচ সিরিজ জয় অবশ্যই আনন্দের’।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে হঠাৎ সুযোগ পেয়েছিলেন ইমরুল। সুযোগ এসেছিল এনামুল হক বিজয়ের ইনজুরিতে। তবে জ্বলে উঠতে পারেননি ব্যাট হাতে। ৩ ম্যাচে ৯ রান করে বাদ পড়েন। দর্শক হয়ে দেশের মাটিতে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দেখেন। দর্শক হয়ে থাকার কথা ছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজেও। এবারও ভাগ্য খুলে যায় সৌম্য সরকারের ইনজুরিতে। সুযোগ পেলেও খেলা হয়নি প্রথম ওয়ানডে। সাকিব ছুটি নেওয়ায় কাল সুযোগ মেলে। এবার আর ভুল করেননি। ৮৯ বলে খেলেন ম্যাচসেরা ৭৬ রানের নান্দনিক ইনিংস। সত্যি বলতে কী ব্যাটিংয়ে একমাত্র ইমরুলই কাল মিরপুরে আলো ছড়িয়েছেন। ইনিংসটি খেলার জন্য অধিনায়ক অনুপ্রাণিত করেছেন বলেন, ‘ম্যাচে নামার আগে মাশরাফি ভাই আমাকে বললেন, এত টেনশন করার কিছু নেই। টেনশন ছাড়া ক্রিকেট খেলতে বলেন। বলেন, শূন্যরানে আউট হলে জীবন শেষ হয়ে যাবে না। তার কথাতেই অনুপ্রাণিত হয়েছি। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।’

সর্বশেষ খবর