বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তামিম-ইমরুল সমানে সমান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিম-ইমরুল সমানে সমান

অনবদ্য ৭৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তামিম ইকবাল - রোহেত রাজীব

ম্যাচ চলাকালীন শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সের ওভার ফ্লো-তে গতকাল হঠাৎ উপস্থিত জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের এক দল কর্মকর্তা। কারও মুখে হাসি নেই। নীরসভাবে সফরকারী দলের কর্মকর্তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঠিক একই সময়ে টাইগারদের ড্রেসিং রুমে দেখা যায়, সাইক্লিংয়ে ব্যস্ত কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। ম্যাচ নিয়ে যেন তার ভিতর কোনো ভাবনাই নেই। শরীর চর্চায় মশগুল টাইগার কোচ। বোঝাই যাচ্ছিল তখন ম্যাচের অবস্থা কী! অবশ্য কাল বাংলাদেশের ইনিংসের পরই যেন বাংলাওয়াশের গন্ধটা পেয়ে যায় দর্শকরা। আগের দুই ম্যাচে ২০০ করতে না পারা দলটির পক্ষে ২৭৭ রানের টার্গেট তাড়া করে কী জয় পাওয়া সম্ভব? ২৭৬ রান যেকোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই চ্যালেঞ্জিং স্কোর বটে!   শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে বাংলাওয়াশ করেছে জিম্বাবুয়েকে। তারপরেও কিছুটা ‘অস্বস্তি’  থেকেই যাচ্ছে টাইগারদের ব্যাটিং নিয়ে। এই জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত শুরুর পরও কেন তিন শতাধিক রান হলো না! ২৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল বিনা উইকেটে ১৪২। ১০ উইকেটে বাকি ২১ ওভার থেকে কি ১৫৮ রান আসা অস্বাভাবিক ছিল! তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটিং ছিল অসাধারণ। দুই ওপেনার মিলে উদ্বোধনী জুটিতে করেন ১৪৭ রান। কাল দুই ওপেনার ছিলেন সমানে সমান। তামিম ৯৮ বল খেলে করেন ৭৩ রান, ইমরুলও করেছেন ৭৩। তবে তামিমের চেয়ে কিছুটা আক্রমণাত্বক মেজাজে ছিলেন ইমরুল। তামিম যেখানে তার ইনিংসে ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাত্র একটি, সেখানে ইমরুলের ছক্কা চারটি। তামিমকে নিয়ে নতুন করে কিছু লেখার নেই। ড্যাসিং ওপেনার প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ভাবনা নিয়ে মাঠে নামেন। তবে কাল তামিম ছিলেন ধৈর্য্যরে প্রতীক হয়েছে। স্বভাব বিরুদ্ধভাবে তিনি বাউন্ডারির চেয়ে সিঙ্গেল রানের ওপরও বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর ইমরুল কায়েসের তো এই সিরিজে রাজসিক প্রত্যাবর্তন। আগের ম্যাচে ৭৬ রানের পর গতকাল আবার খেললেন ৭৩ রানের আত্ববিশ্বাসী ইনিংস। টানা দুই হাফ সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে দলেও যেন জায়গাটা পাকা করে ফেললেন। মাহমুদুল্লাহর ৫২ রানের ইনিংসটিতেও ছিল আত্ববিশ্বাসের ছাপ। মাত্র ৪০ বলে তিনি ক্যারিশম্যাটিক এই ইনিংসটি খেলেছেন। আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেও এ ম্যাচে ঝড়ো গতিতে রান করে মাহমুদুল্লাহ বুঝিয়ে দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। নাটকীয়ভাবে একটা নতুন জীবন পেয়েছেন অবশ্য। ৩২ রানে আউট ড্রেসিং রুমেই ফিরে যাচ্ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু বাউন্ডারির কাছাকাছি যাওয়ার পর তামিম তাকে থামিয়ে দেন। পরে রিপ্লে দেখে মাহমুদুল্লাহকে নটআউট ঘোষণা করে টিভি আম্পায়ার। বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়ে গতকালও ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস। মুশফিকও সেট হওয়ার পর ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। তারপরেও কাল টপ অর্ডারের ব্যাটিং দাপটেই তো স্কোরটা তিনশর কাছাকাছি গিয়েছিল।

 

বাংলাদেশ ইনিংস: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ (তামিম ৭৩, ইমরুল ৭৩, মাহমুদুল্লাহ ৫২, মুশফিক ২৮, লিটন দাস ১৭, মাশরাফি ১৬, জঙ্গি ৫০/২, ক্রেমার ৫২/২, ওয়ালার ২৪/১, সিকান্দার রাজা ৪৮/১, পানিয়াঙ্গারা ৪৯/১)

জিম্বাবুয়ে ইনিংস : ৪৩.৩ ওভার ২১৫/১০, উইলিয়ামস ৬৪, চিগুম্বুরা ৪৫, ওয়ালার ৩২, ইভান ২১, সিবান্দা ১৭, মুস্তাফিজ ৩৪/৫, সাব্বির ১২/১, নাসির ৩৬/১)।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল,  ফল : বাংলাদেশ ৬১ রানে জয়ী

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর