রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কাদের ও লোকমানকে শোকজ বাফুফের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কাদের ও লোকমানকে

শোকজ বাফুফের

বাফুফের সঙ্গে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের ও মোহামেডানের ডাইরেক্টর  ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভ‚ইয়ার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিল। কাদের ও লোকমানকে কারণ দর্শানো অর্থাৎ শোকজ নোটিস দিয়েছে বাফুফে। ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে অভিজ্ঞ এ দুই সংগঠক মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন জাতীয় দলের ১০ জন ফুটবলারকে ক্লাবে ডেকে বিতর্ক সৃষ্টি করেন কাদের। এত বড় ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের ক্যাম্প থেকে আনাটা ঠিক হয়নি বলে সচেতন ক্রীড়ামহল মনে করেন। অবশ্য জাতীয় দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম সেদিনই বলেন, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ ও জাতীয় দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর কাছে অনুমতি নিয়ে মনজুর কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন।  কাদেরও বলেন, আমি বাবুর সঙ্গে আলাপ করে খেলোয়াড়দের মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানাই। খেলোয়াড়দের আসার কথা ছিল সকাল ১০টায় কিন্তু তাদেরকে পাঠানো হয় অনেক পরে। এ জন্য তাদের সঙ্গে লাঞ্চ করতে পারিনি। সোহাগ ও বাবু দুজনই সংবাদ সম্মেলনে অস্বীকার করে বলেন, তারা কোনো খেলোয়াড়কে মনজুর কাদেরের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি। আসলে ১০ ফুটবলারকে কেন্দ্র করে নয়। কাদের-লোকমানের সঙ্গে বাফুফের দ্বন্দ্বটা রূপ নেয় চট্টগ্রাম শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে কাদের ও  লোকমান বাফুফের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে সুপার কাপ ও স্বাধীনতা কাপ বাতিল করাটা তারা মেনে নিতে পারেনি। তাছাড়া শেখ জামাল টুর্নামেন্টে শেখ জামালকে আমন্ত্রণ না জানানোয় কাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বন্ধু হলেও কাদের বার বারই বাফুফের কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। নাম ধরেই তিনি বলেন, সাত বছরে দায়িত্বে থাকলেও সালাউদ্দিন ও সালাম ফুটবলের কোনো উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি। এমন মন্তব্যের পরও সালাউদ্দিন বা বাফুফে নীরব ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারই বাফুফে সিদ্ধান্ত নেয় শনিবার বিশেষ সভা ডেকে দুই সংগঠকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসলে এ নিয়ে বেশ চাপের মধ্যেও ছিল বাফুফে। বাফুফে ও ফুটবল নিয়ে কট‚ক্তি করায় বিভিন্ন লিগ কমিটি ও ক্লাব কর্মকর্তারা কাদের ও লোকমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাফুফেকে আহ্বান জানায়। গতকালও ফেডারেশনের জরুরি সভা শুরু হওয়ার আগে ঢাকা মহানগরী লিগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালেহ জামান সেলিমের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা কাজী সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় সিনিয়র ডিভিশন লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইসমত জামিল আখন্দ লাভলু, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, বাংলাদেশ বয়েজের সভাপতি মইনুল হক মঞ্জু, নবাবপুর স্পোর্টিংয়ের সভাপতি আলীমুজ্জামান আলম ছাড়া অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেলিম বলেন, কাদের ও লোকমান যে ভাষায় কট‚ক্তি করছেন তাতে ফুটবলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরে বাফুফে এক জরুরি সভা করে কাদের ও লোকমানকে শোকজ নোটিস দেয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে এ নোটিসের জবাব দিতে হবে। বৈঠক শেষে সালাম মুর্শেদী বলেন, কাদের ভাই ও লোকমান ভাই ক্রীড়াঙ্গনে অভিজ্ঞ সংগঠক। ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে তারা খুশি নাও হতে পারেন। কিন্তু যে ধরনের অসত্য মন্তব্য তারা করছেন তা মেনে নেওয়ার মতো নয়। সর্বশেষ ১০ ফুটবলারকে নিয়ে কাদের ভাই যা করেছেন তাতে বাফুফেও সমালোচিত হচ্ছে। তাই আমরা দুজনকে শোকজ নোটিস দিতে বাধ্য হয়েছি। বৈঠকে কাজী সালাউদ্দিন, নাবিল আহমেদ এমপি, বাদল রায়, ফজলুর রহমান বাবুল, সত্যজিত দাস রুপু, মারুফ হোসেন, ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে মোবাইলে মনজুর কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য জেলা লিগ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে আগেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অভিজ্ঞ সংগঠক মনজুর কাদের।

 

সর্বশেষ খবর