সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শিরোপা জেতার প্রতিজ্ঞা

সাফের প্রস্ততি শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শিরোপা জেতার প্রতিজ্ঞা

সাফ ফুটবল সামনে। নতুন কোচ মারুফুল হকের অধীনে গতকাল বিকেএসপিতে জাতীয় দলের অনুশীলন শুরু করেন ফুটবলাররা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু উপমহাদেশে ফুটবলে কোনো মান নেই। পঞ্চাশ দশকে ভারত এশিয়ার সেরা দল হলেও পরবর্তীতে মানের বিপর্যয় ঘটেছে। বাংলাদেশেরও একই হাল। মিয়ানমার চার জাতি, দুবার সাফ গেমসে স্বর্ণ আর একবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়া ফুটবলে কোনো ট্রফি নেই। ভারত একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০৩ সালে বাংলাদেশ একবারই সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জাতীয় দলের এটাই বড়প্রাপ্তি। তাই সাফকে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বলেই চিহ্নিত করা হয়। কেননা বড় কোনো ট্রফি জেতার সামর্থ্যও নেই ফুটবলারদের। সত্যি কথা বলতে কি প্রতিবারই ফেবারিট হয়েই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় কিন্তু মাঠে খেলোয়াড়রা যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারছে না বলে সাফের শিরোপাও যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৪ সালে শুরু হলেও সাফ গেমসে স্বর্ণ জিততে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৫ বছর। অথচ তার আগে নেপালের মতো দল দুবার স্বর্ণ জিতেছিল। এতেই ফুটবলে বাংলাদেশের করুণ চিত্র ফুটে উঠে।

সাফ বা বর্তমানে এসএ গেমসে ফুটবল ইভেন্টের গুরুত্ব আগের মতো নেই। জাতীয় দলের পরিবর্তে এখন অনূর্ধ্ব-২৩ দল অংশ নিয়ে থাকে। এবার নাকি নিয়ম করা হয়েছে ফুটবল ইভেন্ট থাকবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। জাতীয় দল খেলে বলে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেরও গুরুত্ব আলাদা। গত দুই আসরে বাংলাদেশের কোনো পাত্তাই ছিল না। গ্রুপ পর্ব খেলেই ফিরে এসেছে। আগে যাই হোক এবার মারুফুল -মামুনুলদের লক্ষ্য শিরোপা। সেই বিজয় নিশানা উড়ানোর প্রস্তুতি গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গেছে। সাভার বিকেএসপিতে ২৮ জন ফুটবলার এ প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন। হিসাব করলে ২১ দিন সময় আছে। বাস্তবে কিন্তু এবার ফুটবলারদের মনোবল চাঙ্গা থাকার কথা। অভিযোগ করা হতো টুর্নামেন্টের আগে কোনোরকমে অনুশীলন করে দলকে মাঠে নামানো হয়। হ্যাঁ, সাফকে নির্দিষ্ট করে ২১ দিন অনুশীলন হবে ঠিকই কিন্তু ফুটবলাররা বছর জুড়েই মাঠে ব্যস্ত রয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ছয়টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। ১টি ড্র ছাড়া বাকিটা শোচনীয় হার হলেও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে বাড়তি অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছে। সে সঙ্গে নিজেদের ভুলত্রুটি শোধরানোর সুযোগও পেয়েছেন খেলোয়াড়রা। যা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভালোভাবে কাজে লাগানো যাবে।

এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নতুনত্ব হচ্ছে অনেক দিন পর দেশি কোচের অধীনে খেলবে। বিদেশিদের প্রশিক্ষণে চার ট্রফি জিতেছে বাংলাদেশ। সেদিক দিয়ে দেশি কোচের সাফল্য শূন্যই বলা যায়। মারুফুল হকের মতো পরীক্ষিত ও যোগ্য প্রশিক্ষককে বেছে নিয়েছে বাফুফে। খেলোয়াড়াও তাকে পেয়ে সন্তুষ্ট। কঠিন মিশন তারপরও মারুফ বলেছেন, তার টার্গেট শিরোপা। আসলে এছাড়া লক্ষ্য অন্য কিছু হতে পারে না। প্রথম দিনে প্রশিক্ষণে মামুনুলরা ভীষণ খুশি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি শিরোপা জেতার। কোচ মারুফ ও ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তারা। অনুশীলনে সবাই মনোযোগী থাকবেন। কোনো ভাবেই ডিসিপ্লিন ভাঙা যাবে না। মাঠে ট্রফি জিততে উজার করে খেলবেন। অতীতে যাই হোক না কেন একযুগ পর সাফে হারানো শিরোপা উদ্ধার করতে চায় বাংলাদেশ। ২৮ জন থেকে ২০ জনকে নিয়ে চূড়ান্ত দল করা হবে। মারুফ প্রতিটি খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স ভালোভাবেই জানেন। সুতরাং খেলোয়াড়দের বুঝে-শুনে খেলাতে পারবেন। গ্রুপ পর্বে লড়তে হবে ফেবারিট আফগানিস্তান, মালদ্বীপের সঙ্গে। ভুটান থাকলেও ততটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আফগানিস্তান বা মালদ্বীপকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। আসলে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরতে পারলে গ্রুপ পর্বে প্রতিটি ম্যাচে জয় সম্ভব। তাছাড়া এবারের আসর চ্যালেঞ্জের। তাই নতুন কোচের অধীনে কেরালায় বাংলাদেশ চমক দেখাবে এ প্রত্যাশা দেশবাসীর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর