বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ছয় ওভারেই ম্যাচ হাতছাড়া!

ছয় ওভারেই ম্যাচ হাতছাড়া!

মিড উইকেটে হাফিজের জোরালো শট বাতাসে ভাসতে ভাসতে উড়ে যাচ্ছিল বাউন্ডারি লাইনে, সৌম্য অনেকটা লাফিয়ে প্রথমে বলটা আটকালেন। পরে নিজে ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারছিলেন না, পড়ে যাওয়ার অবস্থা। বলটা তাই ছুড়ে মারলেন শূন্যে। এরপর বাউন্ডারি লাইনের ওপার থেকে এপারে এসে মুঠোবন্দী করে আসরে অন্যতম সেরা ক্যাচের তালিকায় নিজের নামটি লিখে ফেললেন সৌম্য —এএফপি

বল উড়ছে, উড়ছেন সৌম্যও। মিড উইকেট বাউন্ডারি লাইনে ৪-৫ ফুট শূন্যে লাফিয়ে প্রথম দফায় বলটা থামিয়ে দিয়ে সৌম্য ছিটকে পড়ে গেলেন সীমানার বাইরে। তখনো বল শূন্যে ভাসছে। সেকেন্ডের ভগ্নাংশের ব্যবধানে আবার বাউন্ডারি রশির ভিতরে চলে গেলেন সৌম্য। ডান পায়ের পাতার ওপর দাঁড়িয়ে এবার বলটি লুফে শরীরের ভারসাম্য ঠিক করলেন। নির্বাক হয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে সৌম্যর অ্যাক্রোবাইটিক ক্যাচ দেখলেন ইডেনের দর্শকরা।

কালকের ম্যাচে বাংলাদেশের সুখের ঘটনা এই একটিই! তাছাড়া গোটা ম্যাচে একাধিপত্য ছিল পাকিস্তানের। সৌম্য অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে মোহাম্মদ হাফিজকে ৬৪ রানে আটকে দিলেও কাল আটকানো যায়নি পাকিস্তানকে। তাণ্ডব চালিয়েছেন ‘বুম বুম’ আফ্রিদি। মাত্র ১৯ বলে খেলেছেন ৪৯ রানের সাইক্লোন ইনিংস। এছাড়া আহমেদ শেহজাদ ৩৯ বলে করেছেন ৫২ রান। সঙ্গে হাফিজের ৪২ বলে ৬৪ রানের ইনিংসটা তো ছিলই। গতকাল বাংলাদেশের ম্যাচটা হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল প্রথম ছয় ওভারেই। পাওয়ার প্লেতে শারজিলের উইকেট হারালেও ওভার প্রতি রান উঠেছিল ৯.১৬ গড়ে। ৬ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর ৫৫/১। এরপর বড় স্কোর করা পাকিস্তানের জন্য সহজ হয়ে যায়। তারপর ১০ ওভারে ৯০ এবং ২০ ওভার শেষে ২০১ রান।  ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেন, ‘আহমেদ শেহজাদ ও হাফিজ ঝুঁকিয়ে যে কাজটা করেছিল তাতে সফল হয়েছে। ছয় ওভার পর তাদের হাতে ম্যাচটি চলে যায়। তবু আমরা আরও ভালো কিছু করতে পারতাম। ১৬০ কিংবা ১৭০ হলে আমরা ভিন্ন ফল করতে পারতাম। কিন্তু ২০০ সব সময়ই কঠিন।’ পাকিস্তান বড় সংগ্রহ করার পরও নাকি নেতিবাচক ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক ছিলেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘নেতিবাচক মনোভাব ছিল না। আমরাও আমাদের মতো করে চেষ্টা করেছি। ওরা যখন প্রথম ছয় ওভারে যে শটগুলো খেলছিল, আমরা সেভাবে প্রেসারটা নিতে পারিনি। তখন থেকেই আমরা পিছিয়ে গিয়েছি। আমার মনে হয় সবাই ইতিবাচক ছিল।’  ইডেনে উইকেট বুঝতেই ভুল করেছিলেন মাশরাফি। শুরুতে ঘাস দেখে মনে করেছিলেন উইকেটটি পেস সহায়ক হবে। কিন্তু হয়ে গেছে উল্টো। উইকেটটি ছিল রানে ভরপুর। মাশরাফি বলেন, ‘প্রথম যখন উইকেট দেখছিলাম তখন একটু ঘাস ছিল। মনে হচ্ছিল উইকেটে বল একটু ধরবে। আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ছিল। পাকিস্তান খুব ভালো শুরু করেছে। পরবর্তীতে তাদের আত্মবিশ্বাস খুব ভালো থাকবে। ব্যাঙ্গালুরু আমাদের খুব তাড়াতাড়ি অ্যাডজাস্ট করতে হবে।’ গতকাল আসলে দিনটিই বাংলাদেশের ছিল না। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই খারাপ করেছে বাংলাদেশ। মাশরাফি বলেন, ‘বোলিং কিংবা ব্যাটিংয়ে দুই জায়গায় আমরা আপ টু মার্ক ছিলাম না। তবে আমি ব্যাটসম্যানদের বিষয়ে কিছু বলব না। কারণ ২০০ রান করতে গেলে অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। আমির ও ইরফানকে চেস করা যেকোনো উইকেটে খুব কঠিন। তবে প্রথম চার ওভারে আমরা খুব ভালো পজিশনে ছিলাম। কিন্তু পরবর্তিতে সাব্বির আউট হওয়ায় আমরা খুব খারাপ পজিশনে চলে আসি। তাই আর ম্যাচে ফিরতে পারিনি আমরা।’

পাকিস্তান ইনিংস : ২০১/৫, ২০ ওভার; বাংলাদেশ ইনিংস: ১৪৬/৬, ২০ ওভার।

ইংল্যান্ড ইনিংস : ১৮২/৬, ২০ ওভার; ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস : ১৮৩/৪, ১৮.১ ওভার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর