বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

শচীনের শহরে ‘রাজা’ কোহলি

শচীনের শহরে ‘রাজা’ কোহলি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমিফাইনাল। ভারতবাসী চেয়ে থাকবে কোহলির ব্যাটিংয়ের দিকেই —ফাইল ফটো

ক্রিকেটকে ভারতীয়রা ধর্ম-জ্ঞান মনে করেন। আর টেন্ডুলকার হচ্ছে সেই ধর্মের ঈশ্বর। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় মুম্বাইয়ের ক্রিকেট উন্মাদনা অনেকটা ভিন্ন। এখানকার সাধারণ মানুষ শচীন ছাড়া অন্য কারও জন্য খুব একটা বেশি উচ্ছ্বাসে ভাসেন না। কিছুদিন আগেও এখানে ক্রিকেট বলতে শচীনকেই বুঝতো মানুষ। কিন্তু ব্যাটিং জিনিয়াসের অবসরের পর রোহিত শর্মা কিংবা অজিঙ্কা রাহানে মুম্বাইয়ের ক্রিকেট ঐতিহ্যের বাহক হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু রোহিত-রাহানের পারফরম্যান্সে জোয়ার-ভাটা স্থানীয় মানুষদের হতাশ করেছে। শচীন টেন্ডুলকারকে ‘মহানায়ক’ চিন্তা করে এখানকার মানুষরা যতটা সুখ অনুভব করেন তার ছিটেফোঁটাও পান না  রোহিত কিংবা রাহানকে সমর্থন করে। তবে রোহিত শর্মার দুই দুটি ওয়ানডে ডাবল সেঞ্চুরির পর এখানকার মানুষ আনন্দে উত্ফুল্ল হয়ে পড়েছিলেন। এরপর মহারাষ্ট্রবাসী ক্রিকেট নিয়ে আনন্দের স্রোতে ভেসে যাওয়ার সুযোগ পাননি। ভারত ভালো খেললে ভালো লাগে বটে, তবে মহারাষ্ট্রের কোনো ক্রিকেটারের হাত ধরে যদি সেই সাফল্য আসে তাহলে মুম্বাইবাসীর আনন্দ যেন আর ধরে না!

দিল্লির সঙ্গে মুম্বাইয়ের একটা স্নায়ু যুদ্ধ রয়েছে। যেখানে দিন দিন মুম্বাইয়ের উন্নতির গ্রাফটা উপরের দিকে উঠছে সেখানে ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ নগর দিল্লি পিছিয়ে পড়ছে। এই লড়াই অর্থ-বিত্ত, সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্রিকেটেও ছিল। রাজধানী শহর দিল্লি অথচ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) মুম্বাইয়ে। কিছুদিন আগে মাঠের ক্রিকেটেও আধিপত্য ছিল মুম্বাইয়ের। শচীনের ছায়ায় পড়ে থাকতে হতো বিরেন্দর শেবাগকে। কিন্তু এখন দিন বদলে গেছে। ভারতের জাতীয় দলে দিল্লির প্রভাবই বেশি। এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের প্রধান দুই অস্ত্র ব্যাটিংয়ের প্রাণ বিরাট কোহলি এবং বোলিংয়ের ভরসা পেসার আশিস নেহরার বাড়ি তো দিল্লিতেই। আর ওপেনিংয়ে শেখর ধাওয়ান তো আছেই। ভারতীয় ক্রিকেট দলের চালিকা শক্তি এখন দিল্লির হাতে।

তবে সময় বদলে গেছে। শেষ ম্যাচে বিরাট কোহলি যে চমক দেখিয়েছেন এখন স্নায়ুর লড়াই ভুলে মুম্বাইবাসীও কোহলি বন্দনায় ব্যস্ত। এখানকার সবার মুখেই তার প্রশংসা। শচিনের শহরে যেন এখন ‘রাজা’ কোহলি। ৫১ বলে অপরাজিত ৮২ রানের স্বপ্নিল এক ইনিংস। মৃতপ্রায় ম্যাচকে একাই যেন প্রাণ দিয়েছেন কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে হারলেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে যেত ভারতের। শেষ মুহূর্তে যখন জয়ের জন্য দরকার ১৯ বলে ৪৯ রান তখন কে ভেবেছে এই ম্যাচে ভারত জিতবে? কিন্তু কোহলি ছিল বলেই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছিল ভারত। কোহলির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে অসি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ বলেন, ‘ম্যাচটা আমাদের হাতেই ছিল। কিন্তু কোহলি শেষের দিকে সব কিছু এলোমেলো করে দেয়। সে এতো চমৎকারভাবে ফিনিশিং দিয়েছেন তা বলার মতো নয়।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর