বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

লয়েডের পাশে স্যামি

ক্রীড়া ডেস্ক

লয়েডের পাশে স্যামি

ক্লাইভ লয়েড। তিনি সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের অন্যতম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৯৭৫ আর ১৯৭৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেই নয়, একজন দুরন্ত ক্রিকেটার হিসেবে তার নাম ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত। তার নেতৃত্বে খেলেছেন ভিভ রিচার্ডস, গর্ডন গ্রিনিজ, অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, মাইকেল হোল্ডিং, কলিন ক্রফটদের মতো ক্রিকেটার। এদের সবাই ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করেছেন।

ড্যারেন স্যামি। সদ্য টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। এর আগেও তিনি টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন অধিনায়ক হিসেবে। ২০১২ সালে। একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার হিসেবে ক্লাইভ লয়েড বহুদূর এগিয়ে আছেন ড্যারেন স্যামির চেয়ে। তবে দুটি বিশ্বকাপ শিরোপাই বর্তমান ক্যারিবীয় অধিনায়ককে দাঁড় করিয়েছে লয়েডের পাশে। লয়েড যেমন দুটি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তেমনি ড্যারেন স্যামিও। তা ছাড়া আরও একটা ক্ষেত্রে দুজনের মধ্যে মিল আছে। যেমন লয়েড বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া (১৯৭৫) ও ইংল্যান্ডকে (১৯৭৯) হারিয়ে। ড্যারেন স্যামি বিশ্বকাপ জিতেছেন শ্রীলঙ্কা (২০১২) ও ইংল্যান্ডকে (২০১৬) হারিয়ে। দুজনের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডের নাম আছে! কেবল এসবই নয়, একজন নেতা হিসেবে এরই মধ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে প্রশংসিত হয়েছেন ড্যারেন স্যামি। সদা হাস্যমুখ তার। বুদ্ধিদীপ্ত। যে কোনো পরিস্থিতিতে শান্ত। লয়েড অবশ্য একটু মেজাজি ছিলেন। স্যামির মতো এতটা নিরীহ নন তিনি।

একটা দিক থেকে ড্যারেন স্যামি হয়তো ক্লাইভ লয়েডের চেয়েও এগিয়ে গেছেন। লয়েড দলে পেয়েছিলেন বহু নামি-দামি ক্রিকেটার। যাদের নিয়ে পুরো ক্রিকেট দুনিয়াই গর্ব করে। কিন্তু ড্যারেন স্যামির হাতে একজন ভিভ রিচার্ডস কিংবা এবং অ্যান্ডি রবার্টস কোথায়! স্যামি এমন এক দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দিয়েছেন, যা কেবল রূপকথার গল্পতেই মানিয়ে যায়! এক গেইল ছাড়া ক্যারিবীয় দলে তারকাখ্যাতি আছে কার! লারা-ওয়ালসদের যুগ চলে যাওয়ার পর ক্যারিবীয় ক্রিকেট কূপের অন্ধকারেই নিক্ষিপ্ত হয়েছিল! সেই অন্ধকার থেকে ড্যারেন স্যামিই আলোতে নিয়ে এসেছেন দলটাকে। এদিক থেকে বিচার করলে স্যামি মর্যাদায় হয়তো এগিয়ে যাবেন লয়েডের চেয়েও! ক্লাইভ লয়েডকে ছাড়িয়ে যেতে অবশ্য আরও একটা বিশ্বকাপ জিততে হবে ড্যারেন স্যামিকে। অন্তত আরও একটা ফাইনাল তো খেলতে হবেই। ১৯৮৩ সালের ফাইনালও খেলেছেন লয়েড অধিনায়ক হিসেবেই। যদিও সে ফাইনাল তিনি হেরেছিলেন কপিল দেবের ভারতের কাছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে নতুন যুগেরই সূচনা করেছে। চার বছরের মধ্যে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের নজির কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়ারই ছিল। সেই পুরনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। নেই ওয়ালস ভাইদের মতো বোলার। নেই লারার মতো নান্দনিক ব্যাটসম্যান। এক ক্রিস গেইলই ছিলেন ক্যারিবীয় ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন। কিন্তু স্যামুয়েলস, ব্র্যাথওয়েট আর সিমন্সরা সম্মিলিতভাবে পুষিয়ে দিয়েছেন তারকার অভাব।

এমনকি ক্রিস গেইলও তো এবারের বিশ্বকাপে খুব একটা ভালো খেলতে পারেননি। ড্যারেন স্যামি প্রায় তারকাহীন একটা দল নিয়ে বিশ্বসেরার গৌরব পেলেন। ক্যারিবীয় ক্রিকেট যে নতুন যুগের সূচনা করেছে, তা কত দিন ক্রিকেট ভক্তদের আবদার মেটাতে পারবে কে জানে! তবে ড্যারেন স্যামিরা বর্তমান নিয়েই খুশি। অতীত আর ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা ভাবতে চান না তারা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর