শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা

সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল, মনজুর কাদের ও লোকমান হোসেন এ পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সালাম টানা তৃতীয়বারের মতো বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়ে গেলেন। বাকি পদে প্রার্থী থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়বে। প্রশ্ন উঠেছে ৩০ এপ্রিল আদৌ বাফুফের নির্বাচন হচ্ছে কি? কেননা শেষ মুহূর্তে এসে গুঞ্জনের ছড়াছড়ি। নির্বাচনে এসব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এবারের গুজবের মাত্রাটা বেশি বলেই মনে হচ্ছে। টুটুলের মতো শক্তিশালী প্রার্থী হঠাৎ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরই গুজব যেন ভাইরাস আকার ধারণ করে। সালাউদ্দিনবিরোধী প্যানেল বাঁচাও ফুটবল ফোরামের এক প্রভাবশালী সংগঠক বলেন, সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে নির্বাচনে সমঝোতা হয়ে গেছে। তাই সালামকে আমরা ছাড় দিলাম। তিনি বলেন, সালাউদ্দিনকে মাইনাস করেই আমরা ওপরে মহলের নির্দেশে এগিয়ে যাচ্ছি। চার সহ-সভাপতিও ঠিক হয়ে গেছে। আর এই চারজন হচ্ছেন-কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, সামসুল হক এমপি, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু ও নজির আহমেদ। সদস্য পদে ১৫টি আসনেও সমঝোতা চলছে।

সালাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পরই গুজব ছড়িয়ে পড়ে কাজী সালাউদ্দিনসহ তার প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। বুধবার বাফুফে ভবনে যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল তাতে মনে হচ্ছিল ঘটনা সত্য। কিন্তু টুটুল ছাড়া হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় নিশ্চিত হওয়া যায় নির্বাচন হচ্ছে। সন্ধ্যায় সালাম মুর্শেদীসহ সালাউদ্দিনরা প্রেস ব্রিফিংও করেন। সালাম বলেন, ‘আমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া মানে এ নয় যে আমি অন্যপক্ষে যোগ দিয়েছি। আমি সালাউদ্দিনের প্যানেলেই আছি এবং আশা করছি আমরাই জিতব। কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘কোনো মহল আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না। আমি সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি এবং আমার প্যানেলের সবাই নির্বাচন করবে। নিজেদের অবস্থান নড়েবড়ে টের পেয়ে একটি মহল নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে। যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’

সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সদস্য পদে একাধিক প্রার্থী আছে বলে ৩০ এপ্রিল ব্যালটে সিল মারতে হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন হচ্ছে কিনা এ নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। কেননা গতকালও কাদের প্যানেলের এক প্রার্থী জানালেন, ‘নিয়মানুযায়ী এখন আর কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন না ঠিকই কিন্তু এটা নিশ্চিত থাকতে পারেন সালাউদ্দিনকে বিদায় নিতেই হবে। কারণ এটা উচ্চ মহলের নির্দেশ। সহ-সভাপতি ও সদস্য পদেও সমঝোতা হয়ে গেছে। ফুটবলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সরকারি উচ্চমহল দারুণ ক্ষুব্ধ। তাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হোক। কাদেরের প্যানেল থেকে জোরালোভাবে সমঝোতার কথা বলা হচ্ছে। অথচ গতকাল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে সালাউদ্দিন প্যানেল সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী আহ্বায়ক চট্টগ্রাম মেয়র, জেলা ও বিভাগীয় ফোরামের সভাপতি আ জ ম নাছির বলেন, কোনো সমঝোতা নয়। নির্বাচন হবেই এবং আমার সমর্থন থাকবে এই প্যানেলে। তবে এখানে সালাউদ্দিন ও সালামকে দেখা যায়নি। এই প্যানেলের সদস্য পদে এক প্রার্থী জানালেন, কোনো মহল নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে না। তাছাড়া যারা এ কথা বলছেন তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দেখে অবাক হচ্ছি। মনোনয়নপত্র তো টুটুলসহ ১১ জন প্রত্যাহার করেছেন। অধিকাংশ পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। সুতরাং সমঝোতা হয় কীভাবে? তাদের বোঝা উচিত ফিফা বাফুফের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে। এখানে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে পরিণতি কি হবে তা কি তাদের জানা নেই। দুই পক্ষের ভিন্ন বক্তব্য, আসলে বাফুফের নির্বাচনে পর্দার আড়ালে কি হচ্ছে বোঝা মুশকিল। পরিবেশ ছিল বেশ উৎসবমুখর। হঠাৎ করে প্রার্থীদের মধ্যে থমথমে ভাব। ৩০ এপ্রিল কি যে হবে সেটা কেউ পরিষ্কার করে বলতেও পারছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর