শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফিফার পর্যবেক্ষণ : সতর্ক প্রার্থীরা

কাল নির্বাচন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফিফার পর্যবেক্ষণ : সতর্ক প্রার্থীরা

বহু প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন আগামীকাল। ১৯৯৮ সাল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে ফেডারেশনগুলোর কমিটি গঠন হচ্ছে। তবে বিসিবি ও বাফুফে নির্বাচন ঘিরে আলাদা উত্তেজনা দেখা যায়। ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ওয়ানডে, টেস্ট বা টি-২০ ম্যাচ জেতাটা বাংলাদেশের কাছে এখন স্বাভাবিক ঘটনাই বলা যায়। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান। অল্প বয়সে বোলিংয়ে তিনি যেভাবে জ্বলে উঠছেন তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। সব মিলিয়ে প্রশংসায় ভাসছে ক্রিকেট। অন্যদিকে ফুটবলে হতাশা ছাড়া কিছুই নেই। জাতীয় দলের পারফরম্যান্স এতটা নাজুক অবস্থা যে, ফুটবল নিয়ে ক্রীড়ামোদীরা কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

সংকটাপন্ন অবস্থা, কয়েক বছর ধরে শুধু ব্যর্থতা আর ব্যর্থতা। ভালো কোনো খবর নেই ফুটবলের। এরপরও নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা  ঠিকই দেখা যাচ্ছে। এতটা উত্তাপ কখনো দেখা যায়নি। নির্বাচনে এমন পরিস্থিতি, একে অপরের মধ্যে যেভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে তাতে সংঘাতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এএফসি ও ফিফা বাফুফের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতিনিধি দল রিপোর্ট দেবে নির্বাচনে সুষ্ঠু না অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। যদি অসন্তোষজনক রিপোর্ট যায় তাহলে বাংলাদেশের কপালে কী জুটবে বলা মুশকিল। ২০০২ সালে নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দেওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। ফিফা এমন এক সংগঠন তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই ফাইনাল। অভিযোগ আসছে, কাউন্সিলরদের নাকি ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে কাউন্সিলরদের বলা হচ্ছে তারা যেন ভোট দিতে ঢাকায় না আসেন। কেউ কেউ আবার বলছেন, অভিযোগ করলে তো হবে না। উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে হবে। কথাটির যুক্তি আছে। তবে কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যা অদৃশ্য। তবে কোনো কাউন্সিলর যদি হুমকিতে ভোট দিতে না পারেন আর অভিযোগ ফিফার কাছে করা হয় তা ফুটবলের জন্য ভালো হবে না।

কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদ আর মনজুর কাদেরের নেতৃত্বাধীন বাঁচাও ফুটবল পরিষদ— এ দুই প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দুই প্যানেলে শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কাজী সালাউদ্দিন দেশের ফুটবলে সবচেয়ে পরিচিত মুখ। দুই মেয়াদে আট বছর তিনি বাফুফের সভাপতি। এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিপরীত প্যানেলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুল হাসান খান। ফুটবল সংশ্লিষ্ট তো বটেই ক্রীড়াঙ্গনে তিনি পরিচিত নন। এরপরও সভাপতি পদে কে জিতবেন বলা যাচ্ছে না। সালাউদ্দিন নিজেই বলেছেন, চ্যালেঞ্জের মুখে আমি। সহসভাপতি ও সদস্য পদেও কারা জিতবে বলা যাচ্ছে না। প্রার্থীরা ভোট পেতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখে ক্রীড়ামোদীরাও সন্তুষ্ট। লড়াই করে যোগ্যরা জিতে আসুক এটা সবারই কাম্য। কিন্তু ভয়ভীতি বা হুমকি এ ধরনের ঘটনা কেউ আশা করে না।

ভোট মানেই উত্তেজনা, তা না হলে নির্বাচন জমে না। তার মানে আবার এই না যে জোর করে সমর্থন আদায় করা। যারা প্রার্থী তাদের বোঝা উচিত ফুটবল আর অন্য নির্বাচনের পার্থক্য রয়েছে। জোর করে জিতলেও লাভ হবে না। ফিফা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করবে। অনিয়ম ধরা পড়লে একেবারে নিষিদ্ধ। সুতরাং উত্তাপ যতই থাকুক এমন কিছু করা ঠিক হবে না যাতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। ফুটবলের নির্বাচনে তাই সরকারকেও সতর্ক থাকতে হবে। দুই প্যানেলে অভিজ্ঞ সংগঠক রয়েছেন যারা ভালোমতো জানেন ফিফা কতটা কঠিন। হারজিৎ থাকবেই। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ফিফা সন্তুষ্ট। আর তারা খুশি মানে বাংলাদেশের ফুটবলেরই লাভ।

সর্বশেষ খবর