শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

বায়ার্নকে হারিয়ে এগিয়ে গেল অ্যাটলেটিকো

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বায়ার্নকে হারিয়ে এগিয়ে গেল অ্যাটলেটিকো

বায়ার্নের জালে গোল। তাই উচ্ছ্বাসে মেতেছেন অ্যাটলেটিকোর ফুটবলাররা —এএফপি

বার্সেলোনা নেই। নেই মেসি, নেইমার, সুয়ারেজ। দল ও এসব ফুটবলারের অনুপস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে তারকা অভাব দেখেছিলেন অনেক ফুটবলপ্রেমী। যদিও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আর্জেন রোবেনদের মতো তারকা ফুটবলার খেলছেন। তারপরও অনেকেই চিন্তিত ছিলেন শিল্প আর নান্দনিকতার ছোঁয়া দেখতে না পাওয়ার। কিন্তু অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচটি কিন্তু সব ভাবনাকে পেছনে ফেলে। দুই দলের ফুটবলাররা গতিশীল, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ফুটবল খেলে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে ফুটবল দুনিয়াকে। বিশেষ করে সল নিগুয়েজ মুগ্ধতা ছড়িয়ে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় যেভাবে গোল করেন, তাকে ভবিষ্যৎ তারকা বলাই যায়! এই এক গোলেই নিগুয়েজ অভাব পূরণ করে দিয়েছেন মেসি, নেইমারদের। সল নিগুয়েজের চোখ নিংড়ানো গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দ্বিতীয় লেগে নামবে দিয়াগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ডাগ আউটে উতোইজত আচরণ করায় তিন ম্যাচে নিষিদ্ধ হয়েছেন সিমিওনে। ফলে বায়ার্নের মাঠে দ্বিতীয় লেগে সিমিওনেকে মাঠের বাইরে বসে দল পরিচালনা করতে হবে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আরেক সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। 

১৯৭৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার স্বাদ প্রায় পেয়েই গিয়েছিল স্পেনিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো। কিন্তু ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ারের নেতৃত্বে বায়ার্ন সেবার স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নামিয়ে এনেছিল অ্যাটলেটিকোকে। গত ৪২ বছর ধরে সেই দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছে স্পেনিশ ক্লাবটি। এবার সুযোগ এসেছে স্বপ্ন পূরণ করার। তার আগে চার দশক ধরে বয়ে বেড়ানো কষ্টটিকে লাঘব করার সুযোগও পেয়েছে সিমিওনে বাহিনী। ক্যালদেরনের নিজ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে জিতে প্রতিশোধ প্রায় নিয়েই নিয়েছে। দ্বিতীয় লেগে ড্র করতে পারলেই প্রতিশোধের শতভাগ পূরণ হবে।

ম্যাচের একমাত্র গোলটি হয় প্রথমার্ধে। ১০ মিনিটে ক্যালদেরনের ৬০ হাজার দর্শককে তাতিয়ে, মুগ্ধ করে অসাধারণ ক্ষীপ্রতায় গোলটি করেন ২১ বছর বয়সী সল নিগুয়েজ। মাঝমাঠে বল ধরে নিগুয়েজ দ্রুতগতিতে ইনসাইড-আউটসাইড ডজে প্রথমে বোকা বানান থিয়াগো আলকানতারাকে। এরপর জাবি আলোনসো ও হুয়ান বার্নাটকে। সবার শেষে ডেভিড আলাবাও পেছনে ফেলে যখন ঢুকে পড়েন বায়ার্নের অরক্ষিত রক্ষণভাগে, তখন নিগুয়েজের সামনে শুধু ম্যানুয়েল ন্যুউয়ার। বিশ্বসেরা গোলরক্ষক দ্রুত গোলবার ছেড়ে ওপরে উঠে আসেন। যাতে করে নিগুয়েজ অ্যাঙ্গেল কম পান। কিন্তু দুরন্ত প্রতিভার নিগুয়েজ সুযোগটিকে ব্যর্থ না করে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে গোটা দলকে উৎসব, উচ্ছ্বাসে মাতান (১-০)। গোলটি করে সিমিওনে বাহিনী ফিরে যায় তার পুরনো রক্ষণাত্মক কৌশলে। বিপরীতে তেতে ওঠে বায়ার্ন দলটির ল্যাটিন স্ট্রাইকার ভিদাল একের পর এক চেষ্টা করে যান গোল করতে। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি। শুধু ভিদাল নন, কোম্যান, রোবেনরাও চেষ্টা করতে থাকেন সমতা ফেরাতে। কিন্তু অ্যাটলেটিকোর রক্ষণভাগ কোনোভাবেই ভাঙতে পারেনি বায়ার্নের আক্রমণভাগ। তবে ৫৪ মিনিটে আলাবার শট গোলরক্ষক ওবলাককে হারালেও অ্যাথলেটিকোর গোলপোস্টকে পরাস্ত করতে পারেনি। ফলে সমতাও ফেরাতে পারেনি বায়ার্ন মিউনিখ। উপরন্তু মাঝে মধ্যে পাল্টা আক্রমণ করে বায়ার্নকে বিব্রত করে অ্যাটলেটিকে। শেষ পর্যন্ত রক্ষণাত্মক কৌশলের সঙ্গে আক্রমণাত্মক কৌশলে পেরে না ওঠায় ম্যাচের ফল ১-০ থাকে। ম্যাচ শেষে সল নিগুয়েজ দলের জয়ে অবদান রাখায় খুশি, ‘অ্যাটলেটিকো জেতায় আমি খুশি। এই গোলটি আমার ক্যারিয়ার সেরা। গোলটি দলের জয়ে অবদান রাখায় আমি ভীষণ খুশি।’

সর্বশেষ খবর