শুক্রবার, ৬ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচনে ‘হ্যাটট্রিক’

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নির্বাচনে ‘হ্যাটট্রিক’

ফুটবল ক্যারিয়ারে কাজী সালাউদ্দিনের হ্যাটট্রিকের সংখ্যা কত— এর হিসাব মেলানো মুশকিল। এবার মাঠ ছেড়ে করলেন অন্য এক হ্যাটট্রিক। টানা তিনবারের মতো বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হলেন তিনি। শনিবার র‌্যাডিসন হোটেলে অনুষ্ঠিত ভোটে সালাউদ্দিন ৮৩-৫০ ব্যবধানে কামরুল আশরাফ খানকে পরাজিত করেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। দেশের ফুটবল ইতিহাসে সালাউদ্দিনই একমাত্র ব্যক্তি যিনি টানা তৃতীয়বার সভাপতি হলেন। অর্থাৎ হ্যাটট্রিক করে নতুন এক ইতিহাস গড়লেন এই ফুটবল ব্যক্তিত্ব। তবে এবারের মতো আলোড়ন কোনো ফেডারেশনের নির্বাচনে হয়নি। সালাউদ্দিনকে হারাতে অন্য প্যানেল জোর চেষ্টা চালায়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল তাতে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন ক্রীড়াঙ্গনে অচেনা মুখ হলেও কামরুল দেশের ফুটবলের নতুন অভিভাবক হতে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে সালাউদ্দিনই বিজয়ের নিশানা ওড়ালেন। শুধু সালাউদ্দিন একা নন, এক সহ-সভাপতি, তিন সদস্য ছাড়া সব কটি আসনে বিজয়ী সম্মিলিত পরিষদ। অন্যদিকে বাঁচাও ফুটবল প্যানেল থেকে সদস্যপদে শেখ মো. আসলাম, বিজন বড়ুয়া ছাড়া কেউ জিততে পারেননি।

টানা তিনবার সভাপতি হয়ে অন্য এক হ্যাটট্রিক করলেন সালাউদ্দিন। তবে তিনি একা নন, অনেকেই এ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। দেশের সাবেক নন্দিত ফুটবলার সালাম মুর্শেদী টানা তিনবার বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালে ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি হলেও এবার তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান। মনজুর কাদের, লোকমান হোসেন ভূঞা ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল এ পদের জন্য মনোনয়নপত্র কিনলেও পরে তিনজনই প্রত্যাহার করে নেন। সহ-সভাপতি পদে এবার প্রার্থী ছিলেন ১০ জন। এর মধ্যে কাজী নাবিল আহমেদ এমপি সর্বোচ্চ ৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার বাদল রায় ৭৩, মহিউদ্দন আহমেদ মহি ৭২ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল ৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে নাবিল ও বাদল রায় টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হলেন। সদস্যপদে ১৫ আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৩২ জন। জাতীয় দলের বেশ কজন সাবেক অধিনায়ক নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু জয়ী হন ইলিয়াস হোসেন, আরিফ হোসেন মুন ও শেখ মো. আসলাম। সদস্যপদে আসলাম টানা তৃতীয়বার নির্বাচিত হলেন। অভিজ্ঞ সংগঠক হারুনুর রশিদ ও ফজলুর রহমান বাবু ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সত্যজিত দাস রুপুও হ্যাটট্রিক অর্থাৎ উপর্যুপরি তৃতীয়বার নির্বাচিত হলেন। হারুন অবশ্য দীর্ঘদিন বাফুফের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।

তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন সংগঠক আমিরুল ইসলাম বাবু। এ নিয়ে তিনি টানা চতুর্থবার নির্বাহী সদস্যপদে নির্বাচিত হলেন। প্রয়াত সংগঠক সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুও টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার পরও বাবু ব্যতিক্রম, ২০০৪ সালে সর্বোচ্চ, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ২০১২ সালে সর্বোচ্চ, এবার সদস্যপদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। শুধু সদস্য নয়, এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান বাবু। অভিজ্ঞ সংগঠক শওকত আলী খান ২০১৬-এর নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১১৪ ভোট পেয়ে সদস্যপদে নির্বাচিত হন। বাবু বলেন, ‘ভোটারদের কাছে একটাই কথা বলেছি— যদি আপনারা মনে করেন ফুটবল উন্নয়নে কাজ করতে পারব তাহলে আপনারা ভোট দিয়েন। আমার ওপর আস্থা রেখেছেন তারা। বার বার আমাকে নির্বাচিত করছেন। কথা দিচ্ছি, সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে ফুটবল উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’ এবার নির্বাচনে দুই সংসদ সদস্য পরাজিত হয়েছেন। সভাপতি পদে নরসিংদীর এমপি কামরুল আশরাফ খান ও সহ-সভাপতি পদে চট্টগ্রামের এমপি আলহাজ সামসুল হক চৌধুরী। নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স। সদস্যপদে এই সংগঠক পান ১৮ ভোট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর