সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

পেশাদার লিগে পেশাদারিত্ব নেই!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পেশাদার লিগে পেশাদারিত্ব নেই!

পেশাদার ফুটবল লিগে পেশাদারিত্ব নেই! এএফসির গাইড লাইন অনুযায়ী ২০০৭-২০০৮ মৌসুম থেকে দেশে পেশাদার লিগ শুরু হয়। একেবারে অগোছালো অবস্থায় এই লিগ মাঠে নামে। আসলে হবেইবা কীভাবে? পেশাদার লিগ খেলাতো চাট্টিখানি কথা নয়। তবে তৎকালীন বাফুফে সভাপতি এসএ সুলতান বলেছিলেন, শুরুতে একটু ঝামেলা হবে। দেখবেন সময় গেলে ক্লাবগুলো পেশাদারিত্ব মেনেই লিগে অংশ নেবে। বাস্তবে কি তার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে? শিডিউল ঠিক থাকলে ১৫ জুলাই পেশাদার লিগের পর্দা উঠার কথা। এটি নবম আসর। অর্থাৎ এর আগে আটটি লিগ হয়েছে। অথচ পেশাদার লিগের পেশাদারিত্ব চোখে পড়ছে না।

বাফুফে এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভেন্যু বাড়ানোর। ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়া এবার রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশালে পেশাদার লিগ হওয়ার কথা। নিঃসন্দেহে এটা ভালো উদ্যোগ। প্রথমদিকে ফেনী, খুলনা ও গোপালগঞ্জে ভেন্যু ছিল। কিন্তু ক্লাবগুলোর আপত্তির কারণে পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী বলেছেন, এবার আর আপত্তি চলবে না। বাফুফের বেঁধে দেওয়া ভেন্যুতে খেলতেই হবে। আসলে বাফুফের কারণে এতদিন লিগ হতো শুধু দুই জেলাতেই। তারা যদি কঠোর হতো এতদিনে অনেক জেলাতেই লিগ আয়োজন করা যেত। পেশাদারিত্বের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্লাবের নিজস্ব মাঠে লিগ আয়োজন করা সম্ভব নয়। কিন্তু বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়ামকে ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া যেত। ফেডারেশনের দায়িত্বহীনতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন বাধ্য করা হচ্ছে, কিন্তু এর পেছনে কারণও আছে। গত বছর লিগে অংশ নেওয়া দলগুলোর জন্য ২৫ লাখ করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। এবার নাকি নতুন ভেন্যুতে খেলতে রাজি হওয়ায় অনুদানের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ টাকা দিয়ে পেশাদারিত্ব দেখানো হবে। সাইফ পাওয়ার টেক এবার লিগের স্বত্ব কিনে নিয়েছে। স্পন্সর নিয়ে বাফুফে যে দুশ্চিন্তায় ছিল তা দূর হয়েছে।

সাইফ পাওয়ার টেক এগিয়ে আসায় বাফুফের ফান্ড মজবুত হচ্ছে। এতে অনুদান বাড়তে ফেডারেশনের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু এতে কি পেশাদারিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে? পেশাদার লিগে ঢাকার অধিকাংশ ক্লাব অংশ নিচ্ছে। তাই আলাদা ভেন্যু করা সম্ভব ছিল না। ম্যাচ হতো বঙ্গবন্ধু ও এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে। এ ক্ষেত্রে বাফুফের উচিত ছিল ঢাকার দলগুলোকে লটারি করে অন্য জেলায় ভেন্যু ঠিক করে দেওয়া। কড়া আইন করলে বাইরে লিগ খেলতে বাধ্য হতো। এখন বাধ্য করা হচ্ছে তা আবার অনুদান বাড়িয়ে। পেশাদার লিগের শর্ত অনুযায়ী প্রতিটি ক্লাবের জিম ও নিজস্ব অনুশীলন মাঠ থাকা দরকার। যেখানে জাতীয় দলের নিজস্ব জিম নেই। সেখানে ক্লাবগুলোর জিমতো স্বপ্নেও ভাবা যায় না। আর অনুশীলন মাঠ কয়টা ক্লাবের আছে। নবম আসরে এসেও পেশাদার লিগের প্রকৃত পেশাদারিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর