শনিবার, ২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

মেরিনার্সের স্বপ্ন পূরণ

ভিআইপি বক্সে মেরিনার্সের সমর্থকদের ভাঙচুর

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মেরিনার্সের স্বপ্ন পূরণ

গ্রিন ডেল্টা প্রিমিয়ার হকির শিরোপা জিতে মেরিনার্স ইয়াংসের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস —বাংলাদেশ প্রতিদিন

স্বপ্নটা বহু দিনের। অবশেষে তা বাস্তবে রূপ নিল। প্রিমিয়ার বিভাগ হকি লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হলো মেরিনার্স ইয়াংস। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস লিখল আরামবাগের ক্লাবটি। কিন্তু নিজেদের ইতিহাসের প্রথম শিরোপাটা একেবারে নিষ্কলুষ হলো না। মারামারি, ভাঙচুর করে কলঙ্কের দাগ এঁকে নিল। মেরিনার্সের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণটা ছিল এ রকম- জিতলে জলবৎ তরলং। হারলে বিদায়। ড্র করলে চ্যাম্পিয়ন। মাত্র এক পয়েন্টের এমন সহজ অথচ কঠিন সমীকরণের ম্যাচে পুরান ঢাকার দল ঊষা ক্রীড়াচক্রকে ৩-২ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার হকি লিগের প্রথম শিরোপা জিতে নিল মেরিনার্স। ২০০৬ এবং ২০১০ সালে শিরোপা জিততে ব্যর্থ দলটি এবার ১৬ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো। রানার্সআপ ঊষার পয়েন্ট ৪০, তৃতীয় স্থানে আবাহনীর পয়েন্ট ৩০, ২৯ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডান চতুর্থ এবং ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাব পঞ্চম ও সমান পয়েন্ট পেয়ে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ষষ্ঠ হয়েছে।

হকি মাঠে মারামারি এখন নিত্যকার ঘটনা। দুই দলের খেলোয়াড়রা হরহামেশাই মারামারিতে লিপ্ত হন। কিন্তু গতকালের ঘটনা ছাপিয়ে গেছে অতীতকে। ওমানি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে প্রভাবশালী কর্মকর্তার নেতৃত্বে মেরিনার্সের সমর্থকরা হকি স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। মেরিনার্সের এক কর্মকর্তা বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেকের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত হন এবং সমর্থকরা সাধারণ সম্পাদকের রুমেও ভাঙচুর করেন। ক্লাবটির কর্মকর্তা ও সমর্থকদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মাঠে মারামারি হতেই পারে। তাই বলে মাঠের বাইরে এমন ভাঙচুর, মারামারি, ভাবাই যায় না। মেরিনার্সের কর্মকর্তারা যেভাবে মারামারি করেছেন তা লজ্জাজনক। হকি ফেডারেশন ঈদের পর বৈঠকে বসে ক্লাবটির বিপক্ষে অ্যাকশনে যাবে।’ ঘটনার সূত্রপাত ২০ মিনিটে। খেলায় তখন ঊষা ২-০ গোলে এগিয়ে। শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় উত্তেজিত মেরিনার্সের কর্মকর্তা ও সমর্থকরা। হাফলাইন বরাবর মেরিনার্সের ইশতিয়াককে ফাউল করেন ঊষার নিলয়। তখন ওমানি আম্পায়ারের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত পাকিস্তানি স্ট্রাইকার মোহাম্মদ তৌফিককে সবুজ কার্ড দেখান রেফারি। এতে ক্ষিপ্ত দলটির কর্মকর্তা ও সমর্থকরা গ্যালারিসহ ভিআইপি বক্সে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় খেলা প্রায় ২০ মিনিট বন্ধ ছিল।

খেলায় প্রথম গোল করে ঊষা। ১৬ মিনিটে ঊষাকে এগিয়ে নেন নিলয় (১-০)। ১৮ মিনিটে গোলসংখ্যা দ্বিগুণ করেন পুষ্কর খিসা মিমো (২-০)। দ্বিতীয় গোলের দুই মিনিট পর মাঠে মারামারি হয়। পুনরায় খেলা শুরু হলে ব্যাকফুটে চলে যায় ঊষা। ২৬ মিনিটে মেরিনার্সের পক্ষে গোল ব্যবধান কমান পাকিস্তানি স্ট্রাইকার ওয়াকাস শরিফ (১-২)। এরপর আর গোল হয়নি প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে সতর্কতার সঙ্গে খেলা শুরু করে দুই দল। ৫০ মিনিটে সমতা আনে মেরিনার্স। ইশতিয়াকের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে আরশাদ সমতা আনেন (২-২)। ওই গোলের পর আরও মরিয়া হয়ে ওঠে মেরিনার্স। খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে ৭৮ মিনিটে উলিয়াম গেরহার্ডের শিষ্যরা আরও একটি গোল করে ইতিহাস রচনা করেন (৩-২)।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর