রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

কঠোর অবস্থানে ফেডারেশন

হকি মাঠে তাণ্ডব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কঠোর অবস্থানে ফেডারেশন

দেশের ঘরোয়া হকির সবচেয়ে মর্যাদার আসর ঢাকা প্রিমিয়ার  লিগ শেষ হয়েছে। প্রায় তিন বছর পর সব দলের অংশগ্রহণে লিগ অনুষ্ঠিত হলো। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটা আসর উপভোগ করল দর্শকরা। ক্লাব কাপ ও লিগ শেষ হওয়ায় ফেডারেশনের কর্মকর্তারা এখন চাপ মুক্ত বলা যায়। তবে পুরোপুরি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছেন কি? লক্ষ্য করলে দেখা যাবে লিগের অধিকাংশ ম্যাচেই হট্টগোল হয়েছে। হকি মাঠে গণ্ডগোল নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবার যা হয়েছে তা পূর্বপরিকল্পিতই মনে হয়েছে। বড় কোনো ভুল নয়, অথচ কথায় কথায় বিশেষ এক দলের খেলোয়াড়রা আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যান। ধাক্কাধাক্কি করাও হয়েছে। যা আগে দেখা যায়নি। এজন্য অবশ্য হকি ফেডারেশনকেও দায়ী করা যায়।  হট্টগোল দেখেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করেছে। কোনো কোনো খেলোয়াড়কে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ যেন ছিল লোক দেখানো।

লিগের শেষ খেলায় যা হয়েছে তা ঘরোয়া হকির ইতিহাসে বড় ধরনের কলঙ্কও বলা যায়। মেরিনার্স-ঊষার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। টান টান উত্তেজনা ম্যাচে কে যে জিতবে বলা মুশকিল ছিল। বড় দুই দল মোহামেডান-আবাহনীকে পেছনে ফেলে শিরোপা লড়াইয়ে মেরিনার্স। হকির সুপরিচিত দল, কিন্তু ট্রফি জেতা যেন তাদের স্বপ্নে পরিণত হয়েছিল। সত্যি বলতে কি নতুন একটা দল চ্যাম্পিয়ন হোক অনেকেই চেয়েছিল। তাহলে লিগে একঘেয়েমি দূর হবে। ড্র করলেই মেরিনার্স চ্যাম্পিয়ন। অথচ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে ঊষাকে হারিয়েই মেরিনার্স প্রথমবারের মতো লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু গৌরবের দিনেও কালিমা লেপে দিয়েছে ক্লাবটির একশ্রেণির উচ্ছৃঙ্খল সমর্থক। শুক্রবার মাঠে খেলোয়াড়রা প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করলেও গ্যালারিতেও সমর্থকরা যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা হকির ইতিহাসে বড় লজ্জা বলা যায়। ম্যাচে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরই মেরিনার্সের সমর্থকরা ভাঙচুর শুরু করে। এমনকি ফেডারেশনের সাধারণ  সম্পাদক আবদুস সাদেকের কক্ষেও ভাঙচুর চালানো হয়। ফেডারেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। যা হয়েছে কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।

ক্লাব কাপে মেরিনার্স-ঊষার গ্রুপ পর্ব ম্যাচেও হট্টগোল করা হয়। অ্যাম্পায়ারকে লাঞ্ছিত করার অপরাধে মেরিনার্সের বল বয়কে মাঠে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। ফেডারেশন থেকে ক্লাবগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল ভবিষ্যতে হট্টগোল করলে ছাড় দেওয়া হবে না। বড় ক্লাব বা তারকা খেলোয়াড় হলেও তাকে শাস্তি পেতে হবে। বিশেষ করে ফেডারেশন সভাপতি ছিলেন বেশ ক্ষুব্ধ। শুক্রবার যা ঘটছে তা হট্টগোল নয়, বড় ধরনের তাণ্ডব। তাহলে ফেডারেশন এখন কী করবে? ঈদের পর ফেডারেশনের যে জরুরি সভা হবে সেখানে সিদ্ধান্ত নিবে শাস্তির ধরনটা কেমন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা দল নয়, কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব। ভিডিও ফুটেজ আছে কোন কর্মকর্তার ইন্ধনে মেরিনার্সের উচ্ছৃঙ্খল দর্শকরা ভাঙচুর করে। তাকে বড় ধরনের শাস্তি পেতেই হবে। কোনোভাবেই ফেডারেশন এবার ছাড় দেবে না?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর