বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নতুন কোচের নতুন চ্যালেঞ্জ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নতুন কোচের নতুন চ্যালেঞ্জ

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে নতুন কোচ বেলজিয়ামের সেইন্টফিট

কালো পোলো টি শার্ট ও হলুদ ট্রাউজার পরিহিত দীর্ঘদেহী টম সেইন্টফিট যখন কথা বলছিলেন, পাশে দাঁড়িয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তখন মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাচ্ছিলেন। দুই পাশে চেয়ারে বসে মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে শুনছিলেন মামুনুলরা। বেলজিয়াম বংশোদ্ভূত টম সেইন্টফিট বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ। কাল দায়িত্ব নিয়ে ফুটবলারদের মনে এঁকে দিলেন নতুন স্বপ্ন। এঁকে দিলেন নতুন এক দিগন্ত। যা এতদিন দেখে আসছিলেন দেশের অগণিত ফুটবলপ্রেমী।

এশিয়ান কাপের প্লে অফে ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচের জন্য দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় সেইন্টফিটকে। ম্যাচ দুটির ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে নতুন কোচের ভবিষ্যৎ। ভালো করেই জানেন সেইন্টফিট। তবে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নাও থাকতে পারেন বেলজিয়াম বংশোদ্ভূত ভদ্রলোক। ১৮ জুলাই ‘সুপার ঈগল’ নাইজেরিয়ার সঙ্গে যদি বনিবনা হয়ে যায়, তাহলে সেখানেই থেকে যেতে পারেন। তবে নাইজেরিয়ার কোচ হবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি, ‘নাইজেরিয়ার ফুটবল ফেডারেশন তিনজনের যে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে আমার নাম রয়েছে জেনেছি। আপনারা যতটুকু জানেন, আমিও তার বাইরে নই। গত দুই মাস আমার চাকরি ছিল না। তখন ক্লাব ও দেশগুলোতে আমার বায়োডাটা পাঠাই। তারই ফল এটা। তবে নাইজেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন এখনো আমাকে কিছু জানায় নি।’ বাফুফের সঙ্গে চুক্তি কতদিনের হবে, সেটা বলেননি সেইন্টফিট, ‘আমি বিমানে থাকাকালীন চুক্তিপত্র পাঠায় বাফুফে। আমি দেখতে পাইনি। এখন ভালো করে দেখে হয়তো ২-৩ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকতা সারতে পারি।’

গতকাল সকালে ঢাকায় পা রাখেন। এরপর সোজা বাফুফে ভবনে চলে আসেন এবং সাক্ষাৎ করেন বাফুফে সভাপতির সঙ্গে। সেখানে আলাপ-আলোচনা শেষে কথা বলে ফুটবলারদের সঙ্গে। প্রথম আলোচনায় তিনি নিজের পরিকল্পনার কথা জানান। আলোচনায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তার প্রথম ও মূল শর্ত নিয়ম-শৃঙ্খলা, ‘একজন ফুটবলারের সামর্থ্যের স্কোর ৯ হওয়ার পরও যদি সে অনিয়ন্ত্রিত হন, আমি তার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিব ৫ সামর্থ্যের শৃঙ্খল ফুটবলারকে। ফুটবলারদের এসব মানতে হবে। সাফল্যের মূল চাবিকাঠি শৃঙ্খলা।’

ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ দুটি ৬ সেপ্টেম্বর ও ১১ সেপ্টেম্বর। ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখেই এখন সব পরিকল্পনা সেইন্টফিটের, ‘আমার মূল লক্ষ্য ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করা। আশা করি বাংলাদেশ বাছাই পর্বের এই চ্যালেঞ্জ পার হবে।’ দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই ফুটবলারদের মন জয় করেন গোছানো কথা বলে। শুধু দলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ছবিই আঁকেননি নতুন কোচ, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বলে উদ্বুদ্ধ করেন ফুটবলারদের, ‘দেশের প্রতিনিধিত্ব বিশাল ব্যাপার। দেশ, দেশের পতাকা ও দেশের মানুষ আর দেশের জার্সির মানসন্মান ও মর্যাদার কথা মাথায় রেখে খেলতে হবে এবং তৈরি করতে হবে জয়ের ক্ষুধা। ভালো খেলে যদি বাছাইপর্বে খেলার সুযোগ তৈরি করা যায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের দলগুলোর বিপক্ষে ভালো খেললে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’

প্রাথমিক স্কোয়াডে ৩২ জন খেলোয়াড়কে ডাকা হয় ক্যাম্পের জন্য। জ্বরের জন্য উপস্থিত হননি নাজীব নেওয়াজ জীবন ও শাহেদুল আলম শাহেদ। বক্তিগত সমস্যার কারণে আসতে পারেননি মোনায়েম খান রাজু।

ডাক পেয়েছেন যারা

রাসেল মাহমুদ লিটন, শহিদুল আলম সোহেল, আশরাফুল ইসলাম রানা, মাজহারুল ইসলাম হিমেল, রায়হান হাসান, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, তপু বর্মন, ইয়ামিন মুন্না, মামুন মিয়া, শাকিল আহমেদ, আরিফুল ইসলাম, রেজাউল করিম, প্রাণতোষ কুমার দাস, জাফর ইকবাল, ওয়ালি ফয়সাল, জামাল ভুঁইয়া, মামুনুল ইসলাম মামুন, সোহেল রানা, মো. শাহেদুল আলম শাহেদ, মাসুক মিয়া জনি, ইমন মাহমুদ বাবু, হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, কাওসার আলী রাব্বি, তৌহিদুল আলম  তৌহিদ, মো. আবদুল্লাহ, জুয়েল রানা, রুবেল মিয়া, জাহিদ হোসেন, ও সৈয়দ রাশেদ তুর্য্য

সর্বশেষ খবর