শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাগ্যবান সেইন্ট ফিট!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভাগ্যবান সেইন্ট ফিট!

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নতুন কোচ সেইন্ট ফিট —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফুটবলে মান যতই হতাশাজনক হোক। বাংলাদেশ বোধ হয় একটা দিক থেকে অনেকের চেয়ে এগিয়ে। আর তা হলো কোচ বদল। ১৯৭২ থেকে এ পর্যন্ত লোকাল ও বিদেশি মিলিয়ে বাংলাদেশ কত কোচ বদল করেছে এর হিসাব মেলানোটা বেশ কষ্টকর। কোচ আসে কোচ যায় কিন্তু ফুটবলের উন্নয়ন ঘটে না। ১৯৯৩ সালে সাফ গেমসে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় অস্ট্রেয়ার সোয়াবকে। ফুটবলে কোনো পদক জিততে পারেনি সেবার বাংলাদেশ। ক্ষুব্ধ হয়ে বাফুফে কর্মকর্তারা কোচকে বহিষ্কার করেন। যাওয়ার আগে সোয়াবও ক্ষুব্ধ হয়ে বলে যান সুন্দর ভবিষৎ থাকার পরও শুধুমাত্র অযোগ্য কর্মকর্তাদের কারণে বাংলাদেশ ফুটবলে এগুতে পারবে না। সত্যিই এগুতে পারেনি, দিনের পর দিন অধঃপতনের দিকে ফুটবল এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ফুটবল এতটা করুণ হাল হবে ভাবাই যায় না। আন্তর্জাতিক ফুটবলে লজ্জাই যেন নিত্যসঙ্গী।

সাফল্য বলতে ফুটবলে বড় কিছু আসেনি। সাফ গেমসে সোনা আর সাফ ফুটবলে একবার ট্রফি জেতাটাই বড় প্রাপ্তি। তবে বাংলাদেশের ফুটবলে সত্যিকারে সুদিন যদি বলতেই হয় আশি দশকই বুঝাবে। কল্পনা করা যায় চ্যাম্পিয়ন ইরান দলকে হারিয়ে ঢাকা মোহামেডান এশিয়ান ক্লাব ফুটবলে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল। চূড়ান্ত পর্বে উত্তর কোরিয়া ও কাতার চ্যাম্পিয়নকেও রুখে দিয়েছিল। কষ্ট লাগে সেই বাংলাদেশের আজ কোথায় অবস্থান। কোচ নাসের হেজাজি বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছেন। জাতীয় দলের কোচও করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাকে বিদায় নিতে হয়। সাফল্য পেতে যে সময় ও দীর্ঘ মেয়াদের প্রশিক্ষণের দরকার আছে তা কর্মকর্তারা বুঝতে চান না। তারা চায় তাত্ক্ষণিক সাফল্য। কোচ যাচ্ছে আর আসছে ফুটবলের চেহারা কিন্তু একই থেকে যাচ্ছে।

ডাচ্ কোচ লোডডিক ক্রুইফকে নিয়ে কি খেলাটাই না খেলল ফুটবল ফেডারেশন। দুবার বহিষ্কার করার পরও তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু লাভ আর হয়নি, ফুটবলের মান তলানিতেই থেকে গেছে। অথচ ফুটবল বিশ্লেষকদের বক্তব্য হচ্ছে ক্রুইফকে ঠিকভাবে রাখা গেলে ফুটবলের চেহারা বদলাতে পারত। ক্রুইফ অধ্যায় শেষ, নতুন কোচ হয়েছেন বেলজিয়ামের টম সেইন্ট ফিট। ফুটবলে উন্নত দেশ বেলজিয়ামের কোচ তিনি। যদিও জাতীয় দলের সঙ্গে কোনোদিন তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু বাফুফে বলছে এমন হাই-প্রোফাইল কোচ খুব কমই পাওয়া যায়। আসলে এই বিষয়টা বাফুফের মুখস্ত হয়ে গেছে। নতুন কোনো বিদেশিকে পেলেই হাই-প্রোফাইল বলে চালিয়ে যেতে চায়। সেইন্ট ফিটের বেলায়ও তাই হচ্ছে। তিন দিন ধরে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ করাচ্ছেন। পাঁচ দিন প্রশিক্ষণ করে দেশে ফিরে আবার আসবেন। অধিনায়ক মামুনুল দুইদিন কাছে পেয়েই নতুন কোচের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন কোচ বন্ধুভাবাপন্ন কিন্তু আপোষহীন। ডিসিপ্লিনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আসলে নতুন কোচ এলে খেলোয়াড়রা এ ধরনের বক্তব্য দিয়েই থাকেন। একটা দিক দিয়ে সেইন্ট ফিটকে ভাগ্যবানই মনে হচ্ছে। কেননা জয় দিয়ে সেইন্ট ফিটের মিশন শুরু করার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা প্রতিপক্ষ দুর্বল ভুটান। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ও ১০ অক্টোবর ভুটানে-লড়বে। দুই ম্যাচ জিতে বাছাইপর্বে যাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। টানা দুই ম্যাচ বাংলাদেশ অনেক দিন জেতেনি। এখন সেইন্টের প্রশিক্ষণে তা হয়ে যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর