মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুই আবাহনী সমানে সমান

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দুই আবাহনী সমানে সমান

চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ঢাকা আবাহনীর দুর্গে চট্টগ্রাম আবাহনীর আক্রমণ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের ঐতিহ্যবাহী দুই আবাহনীর লড়াই। ম্যাচের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা। ঐতিহ্যগতভাবে দুদল বড় ভাই আর ছোট ভাই হলেও ম্যাচে ছিল না তার সামান্যতমও রেশ। কেউ কাউতে ছাড় দেয়নি ম্যাচ। ছিল শারীরিক শক্তির প্রদর্শনও। শত প্রচেষ্টার পরও সফল হয়নি কোনো আবাহনীই। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের সমতায় ফিরে শেষ হয় দুই আবাহনীর লড়াই। ড্র হলেও দর্শকরা উপভোগ করে টুর্নামেন্টের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি। দিনের প্রথম     ম্যাচে শিরোপা প্রত্যাশী মোহামেডানকে রুখে দিয়েছে পুরনো ঢাকার দল রহমতগঞ্জ। ১-১ গোলে ড্র হয়েছে  ম্যাচটি।

ম্যাচের ৪ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে ঢাকা আবাহনীর বিদেশি স্টাইকার অ্যান্ডু টার্ক লক করলে ছোট বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা সানডে পা লাগানো আগেই চট্টগ্রামের রেজাউল করিম কর্নারের বিনিময়ে দলকে বিপদ মুক্ত করেন। ১০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে চট্টগ্রাম আবাহনীর। পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে ডি বক্সে সোহেল রানা দর্শনীয় শর্ট ক্রস ছুয়ে বের হয়ে যায়। এক মিনিট পর আবার সুযোগ আসে চট্টগ্রামের। এবার জোরালো শর্ট সাইড বার ঘেঁষে যায়। ৩৪ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষকের ভুলে এগিয়ে যায় ঢাকা আবাহনী। এ সময় ডানপ্রান্ত দিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর সীমানায় ঢুকে মামুন মিয়া ক্রস করেন বল পিষ্ট করার জন্য চট্টগ্রামের গোলরক্ষক রানা বেরিয়ে এলেও ফ্লাইট মিস করায় সুযোগে সানডের নিখুঁত হেডে গোল করে এগিয়ে দেয় ঢাকা। ঢাকা ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরই জ্বলে ওঠে চট্টগ্রাম। এরপর একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। তবে দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে গোল আদায় করা সম্ভব হয়নি। ৪০ মিনিটে জাহিদের কর্নার কিকে উদুকা বেক হেড অল্পের জন্য ক্রসবার ছুঁয়ে যায়। পরের মিনিটেই জাহিদের লব থেকে সেন্ট প্রুকসের হেডের বল গোলে ঢোকার মুহূর্তে ঢাকার গোলরক্ষক সোহেল বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। মুহুর্মুহু আক্রমণে ঢাকার রক্ষণভাগকে অস্থির করে তুললেও কোনোভাবেই গোল পায়নি চট্টগ্রাম। ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় চট্টগ্রাম। বিরতি থেকে ফিরেই আক্রমণ ধারা অব্যাহত রাখে চট্টগ্রাম। ৫৬ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পায় চট্টগ্রাম। সোহেল রানা ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে জোরালে শর্ট নেয়। এ সময় ঢাকার পরিতোষের গায়ে লেগে নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় চট্টগ্রাম। ৭৫ মিনিটে অসাধারণ সাইড ভলিতে গোল করে চট্টগ্রামের দর্শকদের মাতিয়ে তোলে রুবেল মিয়া। ডানপ্রান্ত থেকে মামুনুলের কর্নার কিক থেকে বল পেয়েই গোল করতে ভুল করেননি রুবেল। তার গোলে ম্যাচে ১-১ সমতায় ফেরে চট্টগ্রাম। ৮৫ মিনিটে ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ঢাকা। এন্ডু টার্কের কর্নার থেকে বল পেয়ে হেড করেন সানডে। অসাধারণ দক্ষতায় দলকে রক্ষা করেন চট্টগ্রামের গোলরক্ষক আশরাফুল। অতিরিক্ত সময়ে ফের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় চট্টগ্রাম। রুবেল মিয়ার নেওয়া জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন শাকিল। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে শেষ হয় ম্যাচ।

ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা আবাহনীর কোচ জর্জ কোটান বলেন, ‘দুই আবাহনীর ম্যাচটা অসাধারণ হয়েছে। ভালো খেলেও আমরা জিততে পারিনি।’ চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। কাজে লাগাতে পারিনি। স্বাগতিক হিসেবে মাঠের পরিবেশ অনুকূলে ছিল কিন্তু আমরা তা কাজে লাগাতে পারিনি। পরবর্তী ম্যাচে আরও ভালো করার চেষ্টা থাকবে।’

দিনের প্রথম ম্যাচটি ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। জয় পাওয়ার জন্য দুই দলই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ করে খেলেছে। গোল দুটি হয় দুই অর্ধে। ম্যাচে ১৭ মিনিটে দুর্দান্ত ভলিতে রহমতগঞ্জকে এগিয়ে দেন বিদেশি স্ট্রাইকার সিউ জোনাপি। এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পুরান ঢাকার দলটি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে মোহামেডান। অবশেষে ৮০ মিনিটে বহু আকাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় মতিঝিলপাড়ার দলটি। মোহামেডানকে হারের হাত থেকে বাঁচিয়ে ১ পয়েন্ট উপহার দেন ইসমাইল বাঙ্গুরা।

সর্বশেষ খবর