শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিগে শিরোপা জেতার অন্যতম দাবিদার। কিন্তু পর পর দু ম্যাচ হেরে অনেকটা কক্ষচ্যুত বিগ বাজেটের এ দল। দেশি বিদেশি তুখোড় খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া প্রতিরোধ্য এক দল। প্রথম ম্যাচে উত্তর বারিধারার কাছে হারলেও কেউ কেউ বলেছিলেন অঘটন। প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঢাকা মোহামেডানের সঙ্গে ড্র করে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। কিন্তু শেখ রাসেলের মতো বিগ বাজেট এবং তুখোড় খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলের সামনে ম্যাচের আগে কাগুজে কলমে অনেকটা ‘আন্ডারডগ’ই ছিল রহমতগঞ্জ। কিন্তু ম্যাচে শেষে বিজয়ের হাসি হেসে মাঠ ছাড়ে রহমতগঞ্জ। ম্যাচ জুড়েই বল নিয়ন্ত্রণে ছিল শেখ রাসেলের। দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে নষ্ট হয়েছে অনেক সহজ সুযোগ।
ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে শেখ রাসেল। প্রথমার্ধের সিংহভাগ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল শেখ রাসেলের দখলে। তাদের মুহুর্মুহু আক্রমণে অস্থির ছিল রহমতগঞ্জের রক্ষণভাগ। চারটি সহজ সুযোগ পেলেও দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে গোলবঞ্চিত হয় শেখ রাসেল। ১৮ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় শেখ রাসেল। বামপ্রান্ত থেকে আক্রমণ করেন পল। তার দেওয়া থ্রু পাস ছোট বক্সে পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি মিন্টু শেখ। তার নেওয়া দুর্বল শট রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক আল আমিন ফিস্ট করে কর্ণারের বিনিময়ে। ২৭ মিনিটে রাজুর নেওয়া কর্ণার কিক থেকে ডি বক্সের মধ্যে পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি রানা। তার নেওয়া শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। দু মিনিট পর রহমতগঞ্জের রক্ষণদুর্গে ফের শেখ রাসেলের পরিকল্পিত আক্রমণ। ডানপ্রান্ত থেকে পলের দেওয়া থ্রু পাস ছোট বক্সে পেয়েও সহজতম সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি রানা। পরপর দুটি সহজ সুযোগ মিস করার পর রানার পরিবর্তে মধ্য মাঠের খেলোয়াড় সাহেদকে মাঠে নামান কোচ মারুফুল। ৪৩ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় রহমতগঞ্জের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার পল এমিলি। কিন্তু তার দুর্বল শটের কারণে ফের গোলবঞ্চিত হয় শেখ রাসেল। ৪৬ মিনিটে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে রহমতগঞ্জ। মাঝ মাঠ থেকে দিদারুল একক প্রচেষ্টায় ঢুকে পড়ে শেখ রাসেলের রক্ষণদুর্গে। কিন্তু শেখ রাসেলের গোলরক্ষক লিটন অসম্ভব দক্ষতায় রক্ষা করেন দলকে। পরের মিনিটে আবার পরিকল্পিত আক্রমণ শেখ রাসেলের। পলের থ্রু পাস থেকে জোরালো শট নেন রুম্মন। এবার কর্ণারের বিনিময়ে রহমতগঞ্জকে রক্ষা করেন আল আমিন। ৫০ মিনিটে শেখ রাসেলের আরেকটা পরিকল্পিত আক্রমণ। ইকাঙ্গার নেওয়া জোরালো শট গোলরক্ষক ফিস্ট করলে তা চলে আসে পলের কাছে। তার নেওয়া শটটি ক্রস বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৭৬ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে রহমতগঞ্জের ফরোয়ার্ড জোনাপির বাড়ানো বল ডি বক্সের ভিতর থেকে সতীর্থ মিডফিল্ডার মেহবুব হাসান নয়নের দর্শনীয় জোরালো শট ক্রসবার ছুঁয়ে জালে প্রবেশ করলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ। শেখ রাসেল গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠলেও উল্টো কাউন্টার অ্যাটাকে ম্যাচের ৮৭ মিনিটে কর্ণার থেকে ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে দুর্দান্ত ভলি শটে রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার আলাউদ্দিন গোল করলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় ২-০। ওই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে শেখ জামাল ৫-৩ গোলে উত্তর বারিধারাকে পরাজিত করে। বিজয়ী দলের রকিব ২, শিহাব, এনামুল, ল্যান্ডিং ও বিজিতের পক্ষে তিয়াগো, সেন্টু ও মনির ১টি করে গোল করেন।