শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

হানিফ মোহাম্মদের চিরবিদায়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হানিফ মোহাম্মদের চিরবিদায়

১৯৫৮ সালে ব্রিজ টাউনে ফলোঅনে পড়ে পাহাড়সম দৃঢ়তায় যে ইনিংসটি খেলেছিলেন ‘লিটল মাস্টার’ হানিফ মোহাম্মদ, ক্রিকেট বিশ্বে আজও তা বিস্ময়। ৩৩৭ রানের ইনিংসটি খেলতে লিটল মাস্টার বল খরচ করেছিলেন ৬০৩টি। সেটা বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হচ্ছে তিনি ক্রিজে ছিলেন ৯৭০ মিনিট বা ১৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট। মাঠে টিকে থাকার যে অদম্য ইচ্ছা ও লড়াই করার জন্য যে সাহস, আজ সেটা বিরল বর্তমান ক্রিকেটারদের মাঝে। সেই ‘লিটল মাস্টার’ লড়াই করে পারলেন না মৃত্যুর সঙ্গে। হেরে গেলেন। অবশ্য চির শান্তির দেশে পাড়ি জমানোর আগেও অবশ্য লড়াই করেছেন হানিফ মোহাম্মদ। ৬ মিনিট হৃদযন্ত্র বন্ধ থাকার পরও অমিত সাহসী হানিফ ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারেননি। ৮১ বছর বয়সে ক্রিকেট বিশ্বকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন এই ভুবন ছেড়ে। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার ‘লিটল মাস্টার’ ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন ২০১৩ সাল থেকে। ১৯৫৮ সালে ব্রিজটাউনে স্যার  গ্যারি সোবার্সদের ৯ উইকেটে ৫৭৯ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। হানিফের স্কোর ছিল মাত্র ১৭ রান। ৪৭৩ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে হানিফের ৩৩৭ রানে ভর করে ম্যাচ বাঁচায় পাকিস্তান ৩১৯ ওভারে ৮ উইকেটে ৬৫৭ রান তুলে। পাকিস্তান তথা  উপমহাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকানো হানিফ মোহাম্মদ পরের বছর আরও একটি রেকর্ড গড়েন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৪৯৯ রান করেন। ৫০০ রান করতে যেয়ে রান আউট হন তিনি। অবশ্য ১৯৯৪ সালে ৫০১ রানের ইনিংস খেলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি নিজের করে নেন ব্রায়ান লারা। পাকিস্তানে ক্রিকেটে মোহাম্মদ পরিবারের মতো এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি অন্য কোনো পরিবার। হানিফ মোহাম্মদের তিন ভাই ওয়াজির মোহাম্মদ, সাদিক মোহাম্মদ ও মুস্তাক মোহাম্মদ পাকিস্তানের পক্ষে খেলেছেন। আরেক ভাই রাইস মোহাম্মদ পাকিস্তানের পক্ষে না খেললেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পরিচিত মুখ ছিলেন। হানিফের ছেলে শোয়েব মোহাম্মদও খেলেছেন পাকিস্তানের পক্ষে। পাকিস্তানের অভিষেক টেস্টসহ ৫৫ টেস্টে হানিফের রান ৪৩.৯৮ গড়ে ৩৯১৫। সেঞ্চুরি ১২টি এবং হাফ সেঞ্চুরি ১৫টি। ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম) টেস্ট খেলেছেন ৫টি।

সর্বশেষ খবর