রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম

উঠে গেল আশরাফুলের নিষেধাজ্ঞা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম

‘নিষেধাজ্ঞার তিন বছর আমার কেমন কেটেছে, এটা একমাত্র আমি জানি। জানেন আমার আল্লাহ। প্রতিদিনই আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম, যেন আমাকে শক্তি দেন, ধৈর্য দেন। তিন বছরের নিষেধাজ্ঞার প্রতিদিন আমি শুধু দিন গুনতাম, কবে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে’— ঘরোয়া ক্রিকেটে তার ওপর আরোপিত তিন বছরের নিষেধাজ্ঞার উঠে যাওয়ার পর হাঁপ ছেড়ে বললেন মোহাম্মদ আশরাফুল। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুলের ওপর থেকে গতকাল তিন বছরের নিধেধাজ্ঞা উঠে গেছে। নিষেধাজ্ঞা উঠলেও আগামী দুই বছর কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, বিপিএল কিংবা আইসিসি অনুমোদিত টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলতে পারবেন না আশরাফুল। তারপরও ফের ক্রিকেটে ফিরতে পারায় আনন্দের বান ঢেকেছে আশরাফুলের মনে।

বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের পক্ষে ম্যাচ পাতিয়েছিলেন আশরাফুল। আসর শেষ হতেই ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিপক্ষে। ২০১৩ সালের ৩১ মে তার বিপক্ষে আনীত অভিযোগের বিপক্ষে প্রথম তদন্ত করে বিসিবি। একই বছরের ৪ জুন ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ স্বীকার করেন আশরাফুল। ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি এন্টি করাপশন ট্রাইবুনাল শুনানির কাজ শুরু করে। শুনানি চলাকালীন আশরাফুল বিসিবির কোনো অনুমতি না নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে অংশ নেন। যাতে তিনি ভীষণভাবে সমালোচিত হন। ট্রাইব্যুনাল কমিটি দীর্ঘদিন তদন্ত করে অবশেষে ২০১৪ সালের ১৮ জুন ৮ বছর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আশরাফুলকে।

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ক্রিকেটার ম্যাচ পাতানোয় নিষিদ্ধ হন। তবে নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ২২ জুলাই, ২০১৪ সালে আবেদন করেন আশরাফুল। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিসিবি ডিসিপ্লিনারি কমিটি নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে ৫ বছরে নিয়ে আসে এবং তাতে ২ বছর ছিল সাসপেনসন। গতকাল উঠে গেছে ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে আশরাফুল বলেন, ‘কতটা ভালো লাগছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। অসম্ভব ভালো লাগছে এই ভেবে যে, আমি আবার ক্রিকেট খেলতে পারব।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে পারলেও ২০১৮ সালের আগে পারবেন না জাতীয় দলের পক্ষে খেলতে। পারবেন না বিপিএল কিংবা আইসিসি অনুমোদিত কোনো ধরনের টি-২০ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে। ২০১৮ সালে আশরাফুলের বয়স হবে ৩৪। ওই বয়সে জাতীয় দলে ফেরা অসম্ভবই বলা যায়। সেটা জেনেও আশার কথা শুনিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, ‘আমি যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করতে পারি, তাহলে হয়তো ক্রিকেট বোর্ড হয়তো কনসিডার করতে পারে। তখন সুযোগ থাকবে জাতীয় দলে ফেরার। আমি আশাবাদী।’ আশরাফুল আশাবাদী হলেও তাতে জল ঢেলে দিলেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন, ‘তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা উঠেছে আশরাফুলের। এখনো ২ বছরের রয়েছে। ওই সময়ে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, বিপিএল কিংবা আইসিসি অনুমোদিত কোনো টি-২০ ম্যাচ খেলতে পারবে না। তার নিষেধাজ্ঞা উঠলেও আমরা আইসিসির কাছে একটি সনদপত্র চেয়েছি। সেটা পেলেই আশরাফুল খেলতে পারবে।’

এখনই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ না পেলেও পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরকে দেখে অনুপ্রাণিত আশরাফুল। এখন শুধুই অপেক্ষা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর