শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাঠে তারকারা ম্লান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মাঠে তারকারা ম্লান

দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ফেবারিট জিতবে ফুটবলে এক সময় এটাই ছিল স্বাভাবিক। মাঝে মধ্যে অবশ্য অঘটন ঘটত। কিন্তু অধিকাংশ ম্যাচে দাপটের সঙ্গে খেলত ফেবারিটরা। ফুটবলে এখন সে অবস্থা নেই। বিগ বাজেটে তারকানির্ভর দল গড়ার পরও দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে  সেই ভয়ঙ্কর রূপটা দেখা যাচ্ছে না। আর বড়-ছোট দলের পার্থক্য সেভাবে চোখে পড়ছে না। পেশাদার লিগে কয়েক বছর ধরে একই পরিণতি। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানের কথা বাদই দিলাম। ২০০২ সালের পর তারা লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারছে না। অনেক দিন ধরে ভালো খেলোয়াড়ও দলে টানছে না। অচেনা তরুণদের নিয়েই তারা মাঠে নামছে। সম্ভবত পর্যাপ্ত ফান্ডের অভাবে মোহামেডানের মতো দল তারকা ফুটবলার নিতে পারছে না। ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঞা আবার বিষয়টির সঙ্গে একমত নন। তার কথা ক্রিকেট ও হকিতে মোহামেডান কি শক্তিশালী দল গড়ছে না। ফুটবলে আমরা তারকা ফুটবলার আনবো কোন যুক্তিতে। পেশাদার লিগের শুরুতে টানা তিন বছর আমরা সেরা দল গড়েছি। অর্থ খরচ করেছি, কিন্তু ট্রফি কী উপহার দিতে পেরেছে তারকারা। অপরাজিত রানার্সআপ হয়েছে। অথচ শিরোপা অধরাই রয়ে গেছে। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখবেন কয়েক বছর ধরে আমরা তরুণদের নিয়ে দল গড়ছি। পয়েন্ট টেবিলে আমাদের অবস্থান হয়তো সম্মানজনক পর্যায়ে থাকছে না। কিন্তু নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে পারছি। এতে উপকৃত হচ্ছে ফুটবল।’ পেশাদার লিগে এবার শেখ রাসেল, ঢাকা আবাহনীর পাশাপাশি চট্টগ্রাম আবাহনীও শক্তিশালী দল গড়েছে। শেখ জামালকেও গুরুত্ব দিতে হবে। শিরোপা জেতার সম্ভাবনা এই দলগুলোরই রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব দলের তারকারা সেভাবে কী জ্বলে উঠছেন? বরং ছোট দলের অচেনা তরুণদের পারফরম্যান্স চোখে পড়ছে। আরামবাগে নামকরা কোনো খেলোয়াড় নেই। এ দলই কিনা ফেবারিটদের পেছনে ফেলে ফেডারেশন কাপে রানার্সআপ হয়েছে। লিগে ফেবারিটরা দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রাধান্য বিস্তার করতে পারছে না। শুধু হাড্ডাহাড্ডি লড়াই নয়, জয় পেয়ে চমকও সৃষ্টি করছে। তারকা আর অচেনা খেলোয়াড়দের মধ্যে পারফরম্যান্সের তেমন পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কেন এমন হচ্ছে, এ ব্যাপারে সাবেক তারকা ফুটবলার সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির বললেন, কারণ একটাই ফুটবলার সংকট। দীর্ঘদিন ধরে যারা জাতীয় দলে খেলছেন তাদেরকে তারকা বলা হয়। আর ফুটবলে মান না থাকার পরও কিছু দল শিরোপা জিততে এদের আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক দিচ্ছে। এদের ধারণা হয়ে গেছে খারাপ খেললেও তাদের ডিমান্ড কমবে না বরং বাড়বে। বাস্তবে তো তাই দেখা যাচ্ছে। আর অচেনা খেলোয়াড়রা ভবিষ্যতে মোটা অংকের পারিশ্রমিক পেতে নিজেদের উজার করে দিচ্ছেন। মাঠে এখন চেনাই যায় না বড় বা ছোট দলকে। সত্যি বলতে কী যাদেরকে আমরা তারকা বলছি তারা মাঠে মনোযোগী নন। জেলায় জেলায় যদি নিয়মিত লিগ হতো নতুন খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া যেত। এতে করে ফুটবলের চেহারা পাল্টে যেত। হাতে গোনা কয়েকজন খেলোয়াড়ের ওপর ভরসা রাখাতে ফেবারিট দলগুলো  সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছে না।

 নির্বাচনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে চেয়ারে বসছে ঠিকই। বাফুফে কর্মকর্তাদের এদিকে কোনো খেয়াল নেই। তবুও ফুটবলকে ভালোবেসে কিছু প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী দলগুলোর পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছেন। এই অর্থ স্বচ্ছভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এখন যা শোনা যাচ্ছে তা সত্যিই লজ্জার।

সর্বশেষ খবর