মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

টার্গেট এখন বিশ্বকাপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছোট ছোট মেয়ে। পরিবারে নানান সমস্যায় জর্জরিত। সামাজিক বাধাও কম নয়। একেক জনের কাঁধে দায়িত্ব অনেক। তবে এসব সমস্যা বোঝা হয়ে বাধা দিতে পারেনি ওদের। দুরন্ত ওরা! নির্ভীক ওরা! সব বাধাকে উপেক্ষা করে ফুটবলকে ধ্যান-জ্ঞান মেনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের কর্দমাক্ত মাঠে কী চমৎকার খেলল বাংলাদেশের মেয়েরা। একে একে পাঁচটা ম্যাচ জিতে গ্রুপের সেরা হয়ে নিশ্চিত করল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্ব। চারদিক থেকে ছুটল প্রশংসার বন্যা। সভা-সমিতিতে এবার সংবর্ধনার পালা।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানালেন, ঈদের ছুটিতে মেয়েরা বাড়ি চলে যাচ্ছে। ঈদের পর ফিরে এলে ১৭ সেপ্টেম্বর তাদেরকে বড় আকারে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ওখানেই কী থেমে থাকবে মেয়েদের এ অর্জন! মেয়েদের জন্য আলাদা মাঠ নেই। অনুশীলনের সুযোগটাও কমই। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েই তারা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার প্রত্যয় নিয়ে গড়ে তুলছে নিজেদের। কিরণ বললেন, ‘আমাদের সুযোগ সীমিত। এর মধ্য থেকেই সেরাটা বের করতে হবে।’ দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনার কথাও জানালেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১২ ফুটবল থেকে বেশ কিছু ফুটবলার (১০০/১৫০ জন) তুলে এনে দীর্ঘ মেয়াদে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বাফুফে। চার বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণের পর এখান থেকেই তৈরি হবে কৃষ্ণা রানীদের পরবর্তী প্রজন্ম। কিরণ আশান্বিত হয়ে বলেন, ‘আমরা ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখি।’ সময় আছে। সুযোগও আছে। মেধা যে আছে, এর প্রমাণ দিয়েছেন কৃষ্ণা রানীরা। কিন্তু তাদের এ দুরন্ত গতি থেমে যাবে না তো!

বর্তমান অনূর্ধ্ব-১৬ দলটা দারুণ। ওদের পাসিং, রিসিভিং আর ড্রিবলিং দেখলে মনে হয় কতদিনের পেশাদার ফুটবলার ওরা! আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দাপট দেখানোর একদম উপযুক্ত। আর গোল করার ক্ষমতাও অসাধারণ। বাছাই পর্বের পাঁচটা ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা করেছে ২৬ গোল! কৃষ্ণা রানী একাই করেছেন ৮টা। এ দলের ভবিষ্যৎ কী! মাহফুজা আক্তার কিরণ অনেক বড় স্বপ্নের কথা জানালেন। ছেলেদের আগে একদিন মেয়েরাই বিশ্বকাপ খেলবে। এমন স্বপ্ন তো বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষেরই। কৃষ্ণা রানীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পূরণ করতে পারলে ওরাই হয়তো একদিন বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে বিশ্বকাপের মহামঞ্চে!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর