মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হঠাৎ অবসর মামুনুলের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হঠাৎ অবসর মামুনুলের

জাতীয় ফুটবল দলের এমনিতেই ভরাডুবি। আন্তর্জাতিক আসরে কোনোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। যে মালদ্বীপকে নিয়ে এক সময় ছেলেখেলা খেলত, তাদের কাছেই কিনা মালেতে প্রীতিম্যাচে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে। ফুটবলের মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে এতেই প্রমাণ মিলে। আজ বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুর্বল ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ লড়বে এশিয়ান কাপ প্লে অফ ম্যাচে। ১০ অক্টোবর থিম্পুতে অ্যাওয়ে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ফুটবল এতটা সংকটাপন্ন অবস্থা যে ভুটানকে হারাতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অথচ এক সময় ভুটান মাঠে নামার আগে অনুরোধ রাখত তাদের যেন কম গোল দেওয়া হয়। ফুটবলে ভুটানও এগিয়ে গেছে। শুধু পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

ফুটবলে এমন করুণ পরিণতির জন্য অনেকে বাফুফেকে দায়ী করেছেন। জাতীয় দলের বেশ কজন সাবেক ফুটবলারের বক্তব্য দেশে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় নেই বলে ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারপরও মানসম্পন্ন বা তারকা বলতে যাদের বুঝায় তাদের মধ্যে মামুনুল ইসলাম অন্যতম। নিঃসন্দেহে একজন উঁচুমানের খেলোয়াড়। ২০০৬ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলে যাচ্ছেন। ২০১২ সাল থেকে ফুটবলে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মামুনুল। অথচ হঠাৎ গতকাল তিনি ঘোষণা দিলেন জাতীয় দল থেকে অবসরের। মামুনুলের এমন সিদ্ধান্তে ফুটবলপ্রেমীরা বিস্মিত।

গতকাল ভুটানের বিপক্ষে যে জাতীয় দল ঘোষণা করা হলো সেখানে মামুনুলের নাম নেই। অর্থাৎ তাকে ছাড়াই ভুটানের বিপক্ষে আজ বাংলাদেশ মাঠে নামবে। ইনজুরির কারণে মামুনুলকে নিয়ে যাওয়া হয়নি মালদ্বীপে। ভুটানের বিপক্ষে বাদ পড়ার পর অনেকে তাই ধরে নিয়েছিলেন মামুনুলকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি বেলজিয়াম কোচ সেইন্টফিট। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে মামুনুল যখন ঘোষণা দিলেন জাতীয় দল থেকে সরে যাওয়ার। আর এতেই প্রশ্ন তৈরি হয় তাকে ঘিরে। অবসর প্রসঙ্গে মামুনুল বলছেন, পরিবেশ-পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করেছে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। তাহলে কি আপনার বাদ পড়ার পেছনে কোনো রহস্য রয়েছে। মামুনুল আবেগ ভরা কণ্ঠে বললেন আসলে অনেক কিছু বলার ছিল। কিন্তু ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ বলে এই মুহূর্তে মুখ খুলতে চাই না। তবে এতটুকু বলব মাঠে নামার জন্য আমি পুরোপুরি ফিট ছিলাম। কোনোভাবেই ইনজুরি ছিলাম না। তাছাড়া আগের দিন আমাকে জানান হয়েছে আমি দলে থাকছি।

তাহলে বাদ পড়লেন কেন? এ ব্যাপারে আমার কোনো কিছু বলার নেই। তবে ফিট থাকার পরও আমাকে যখন খেলতে দেওয়া হচ্ছে না তখন আমি ধরেই নিয়েছি জাতীয় দলে আমার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে। সুতরাং অবসর নেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। কথা বলতে বলতে এক সময় কেঁদেও ফেললেন দেশের এই নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। বললেন, আমি গর্বিত জাতীয় দলে খেলেছি এবং অধিনায়কত্ব করেছি। কিন্তু আফসোস থাকবে আমি আর কোনোদিন মাঠে গাইতে পারব না জাতীয় সঙ্গীত। পরতে পারব না ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া লাল-সবুজের জার্সি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর