শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোনালদিনহোর আর এক বছর

ক্রীড়া ডেস্ক

রোনালদিনহোর আর এক বছর

পেলে ফুটবল জাদুকর। ম্যারাডোনা ফুটবল শিল্পী। রোনালদিনহো ফুটবল সৈনিক। পেলে ৬০ ও ৭০ দশক ফুটবল বিশ্বকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। ম্যারাডোনা ৮০ ও ৯০ দশক এবং রোনালদিনহো ৯০ দশক থেকে দ্বাবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ফুটবলপ্রেমীদের মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন ফুটবলশৈলীর অপরূপ প্রদর্শনে। ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন, বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব পর্যায়ের সব শিরোপা জিতেছেন। জিতেছেন বিশ্বসেরা ফুটবলারের খেতাব। কি দাপুটে ফুটবলার ছিলেন রোনালদিনহো। কি প্রভাব ছিল তার ফুটবলবিশ্বে। সেই রোনালদিনহো এবার অনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বললেন ফুটবলকে। জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আগেই। এখন সরে দাঁড়ানোর কথা বললেন পেশাদার ফুটবল থেকে। তার সরে দাঁড়ানোয় ফুটবল বিশ্ব হারাবে এক শৈল্পিক ফুটবলারকে।

২০০২ সালে প্রথম যখন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে নামেন, তখন রোনালদিনহোর বয়স মাত্র ১৮। ব্রাজিলে তখন তারকার ছড়াছড়ি। খেলছেন ‘দ্য ফেনোমেনন’ রোনালদো। রয়েছেন রিভালদো, দুঙ্গার মতো ফুটবল তারকারা। তারপরও নিজস্ব ঢঙে, নিজস্ব স্বকীয়তায়, দুর্লভ স্কিল ফুটবল খেলে জাত চিনিয়েছেন নিজের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রায় ৪০ মিটার দূর থেকে ফ্রি কিকে যে গোল করেছিলেন, সেটা বিস্মিত করেছে সবাইকে। ওই বিশ্বকাপের পর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। গ্রেমিও থেকে আসেন ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইনে। তিন বছর খেলেছেন দলটিকে এবং ৫২ ম্যাচে গোল করেন ২১। সেন্ট জার্মেইনে যোগ দিয়ে পরিণত করেন নিজেকে। তিন মৌসুমে ৫৫ ম্যাচে গোল করেন ১৭টি। এরপরই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় যোগ দিয়ে। ২০০৩-২০০৮ সাল পর্যন্ত খেলেছেন বার্সায়। তার ফুটবল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময় পার করেছেন স্প্যানিশ ক্লাবটিতে। ১৪৫-৭০, দলটিতে থাকাকালীন তিনি জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। বিশ্ব ক্লাব কাপের শিরোপা। হয়েছেন বিশ্বসেরা ফুটবলার। পাঁচ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে তিনি ১৭০ ম্যাচে গোল করেছেন ৭০টি। বার্সার সোনালি সময়ের অংশীদার রোনালদিনহো এসি মিলানে। দুই বছর ইতালিয়ান ক্লাবে খেলে ফিরে আসেন ব্রাজিলে এবং ফ্লুমিনেসে খেলেই বিদায় নিলেন পেশাদার ফুটবল থেকে।

ক্লাব ফুটবলে যতটা উজ্জ্বল, ঠিক ততটাই উজ্জ্বল জাতীয় দলেও। ব্রাজিলের পক্ষে বিশ্বকাপ খেলেছেন দুটি ২০০২ ও ২০০৬। চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ২০০২ সালে। জাতীয় দলের পক্ষে ৯৭ ম্যাচে গোল সংখ্যা ৩৩টি। শুরু এবং মাঝের সময়কার রোনালদিনহো যতটা উজ্জ্বল ছিলেন ক্যারিয়ারে, ততটাই বিবর্ণ শেষ বেলায়। এখন বয়স ৩৬। বয়সের সঙ্গে লড়াই করে পেরে উঠছেন না বলে বিদায় বললেন ফুটবলকে। এর অবশ্য কারণও আছে। বার্সেলোনার প্রচারণার কাজে দূত হয়ে উত্তর আমেরিকায় কাজ করবেন এখন থেকে। এখন সেখানেই সময় দিতে চাইছেন বেশি। অবসরের ঘোষণায় রোনালদিনহো বলেন, ‘বুড়ো হয়ে গেছি অমি। ৩৬ বছর বয়সে ২৬ বছরের তরুণদের মতো খেলা সম্ভব নয়। কীভাবে শেষটা টেনে দেওয়া যায় ভাবছি। আর এক বছরের মতো খেলার ইচ্ছা আছে।’

ব্রাজিল এখন তারকা শূন্য। এক সময় ব্রাজিলের হয়ে মাঠ মাতানো রোনালদিহোর সেই সৌকর্য আর দেখা যাবে না। ফুটবলপ্রেমীরা মিস করবেন সেসব চোখধাঁধানো স্কিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর