শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ওয়ানডেতে পরিবর্তন আসছে

আইসিসি নতুন যে প্রস্তাব এনেছে তা পাস হলে বড় দলগুলো ছোট দলের বিরুদ্ধে খেলতে বাধ্য। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ভালো হবে বাংলাদেশের জন্য

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ওয়ানডেতে পরিবর্তন আসছে

আইসিসির দ্বিস্তর ক্রিকেটনীতির পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বড় লাভ হয়েছে ছোট দলগুলোর। বাংলাদেশের মতো দলগুলোর জন্য এটি ভালো খবর। এবার ওয়ানডেতেও আরেকটি সুখবর পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আইসিসি ওয়ানডে ক্রিকেটেও আনতে যাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। একই রকম পরিবর্তন আসবে টি-২০ ক্রিকেটেও। পরিবর্তন আসছে টেস্টেও।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী আইসিসির ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া ১৩টি দল অন্তত তিন বছরে একবারের জন্য হলেও একে অন্যের বিরুদ্ধে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলবে। নতুন নিয়মকে ২০২৩ সালের অলিখিত বাছাই পর্বও বলা যায়। এ সিরিজগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করেই বাছাই করা হবে কারা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। তবে ফলের হিসাবে শেষ বছরে দেখা যাবে যারা সেসব দল বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নিতে পারবে না তাদের নিজেদের মধ্যে প্লে-অফ খেলার ব্যবস্থা থাকবে। শুধু ওয়ানডেতে নয়, টি-২০-তেও এ নিয়ম চালু হতে পারে। এ ছাড়া আইসিসির নতুন প্রস্তাবে এখনকার মতো এফটিপি (ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম) তো থাকছেই। তবে পরিবর্তন আসছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও। প্রতি দুই বছর পর পর র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা দুই দল একে অন্যের মুখোমুখি হবে। সেখান থেকেই নির্ধারণ করা হবে চ্যাম্পিয়ন। আর এই টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে। ২০১৯ সালের দিকে এই সংস্করণ চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নতুন নিয়মে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ম্যাচের সংখ্যা কমিয়ে তিন ম্যাচ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কেন পাঁচ ম্যাচের সিরিজে অনেক সময় প্রথম তিন ম্যাচেই সিরিজের ফল নির্ধারণ হয়ে যায়। তখন পরের দুই ম্যাচে কোনো আকর্ষণ থাকে না। তাই তিন ম্যাচের সিরিজ করার কথা ভাবছে আইসিসি।

ক্রিকেটে বড় দলগুলো ছোট দলের বিরুদ্ধে খেলতে চায় না। কেননা ছোট দলগুলোর বিরুদ্ধে জয় পেলে খুব একটা লাভ নেই! তবে হারলে থাকে র্যাংকিংয়ে অবনমনের ভয়। এ কারণেই অনেক বড় দল ছোট দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলতে আগ্রহী নয়। কিন্তু আইসিসি নতুন যে প্রস্তাব এনেছে তা পাস হলে বড় দলগুলো ছোট দলের বিরুদ্ধে খেলতে বাধ্য।

নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ভালো হবে বাংলাদেশের জন্য। অনেক বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের মতো দলগুলো যত ম্যাচ খেলবে তত বেশি ভালো করবে।

নতুন নিয়ম সম্পর্কে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন চৌধুরী গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটি এখনো কার্যকর হয়নি। কেবল প্রস্তাব হিসেবে আছে। আইসিসি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। তবে বাংলাদেশের জন্য এটি ভালো হবে কিনা তা নিয়ে এখনো ভাবার সময় আসেনি।’

বাংলাদেশ ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত দাপটের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। তারপর ঘরের মাঠে দারুণভাবে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজ জেতে। তার পরও ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে আর কোনো ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে পারেননি টাইগাররা। নিয়মিত না খেললে মাঠের পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়তে পারে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ যে দাপটের সঙ্গে ওয়ানডে খেলেছে দীর্ঘ বিরতির কারণে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। বিরতির পর ক্রিকেটারদের আগে ফর্ম ফিরে পেতেও সময় লাগতে পারে। কিন্তু বিরতি দিয়ে ওয়ানডে খেলা নাকি বিসিবির পরিকল্পনার অংশ ছিল বলে জানান নিজাম উদ্দীন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের পরিকল্পনারই অংশ ছিল। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে বেশি বেশি টি-২০ ম্যাচ খেলা আমাদের পরিকল্পনায় ছিল। আর সে কারণেই অনেক দিন ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়নি। তবে ভারত সফরটি হয়ে গেলে গ্যাপটা এত বেশি হতো না।’

এখন ছোট দলগুলোকে বড় দলের সঙ্গে খেলতে চাইলে তাদের মর্জির ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হয়। কিন্তু নতুন নিয়ম হলে তখন ছোট দলগুলোর সঙ্গে খেলতে বাধ্য বড় দলগুলো। র্যাংকিংও উন্নতি করার সুযোগ থাকবে ছোট দলগুলোর। তবে প্রস্তাবটি কার্যকর হবে কিনা সেজন্য আইসিসির পরবর্তী সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর