বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুশফিককে দোষ দিতে নারাজ মাশরাফি

আসিফ ইকবাল

ম্যাচ বাঁচাতে কিংবা জেতাতে দরকার ছিল মাত্র একটি ম্যাজিক স্পেল! সেই স্পেলটি করে নায়ক হতে পারতেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, কিংবা তাইজুল ইসলাম, অথবা তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এরা কেউই পারেননি। হেরে গেছেন আজগর স্ট্যানিকজাই, মোহাম্মদ নবীর দৃঢ়তার কাছে। প্রতিদিন রবিবার নয়, ভাবনায় হার মানা যায়! তাই বলে আফগানিস্তানের মতো আইসিসি সহযোগী দেশের বিপক্ষে হার, এটা মানা যায় না কোনোভাবেই। মানতে পারছে না বলে গোটা দলের বিষোদগার চলছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। হারের জন্য অনেকে আবার সরাসরি আঙ্গুল তুলছেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের দিকে। মুশফিকের সহজ একটি স্টাম্পিং মিস জয়ের রাস্তা থেকে পুরোপুরি ছিটকে দিয়েছে বাংলাদেশকে। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা হারের জন্য মুশফিকের স্টাম্পিং মিসকে কোনোভাবেই দায়ী করতে রাজি নন। অবশ্য দিনের শুরুতে তামিম, সৌম্য, মাহমুদুল্লাহ, সাকিবদের বাজে ব্যাটিং ম্যাচকে অমসৃণ পথে টেনে তোলে। শুরুর ওই ভুল শোধরানোর আর কোনো পথ খুঁজে পাননি মাশরাফিরা। ২ উইকেটে হেরে লজ্জায় পড়তে হয়। ২০১৪ সালে এশিয়া কাপে আফগানিস্তান আরও একবার হারিয়েছিল বাংলাদেশকে।

আগের ম্যাচে ২৬৫ রান করে ৭ রানের কষ্টার্জিত জয় পেয়েছিলেন মাশরাফিরা। সে হিসাবে ২০৮ রান একেবারেই মামুলি। হয়েছেও তাই। এই রান নিয়ে লড়াই করলেও হারের লজ্জা থেকে বাঁচতে পারেনি। হারটাকে আবার ত্বরান্বিত করেছে মুশফিকের বাজে কিপিং। একাই তিনি নাজিবুল্লাহকে জীবন দিয়েছেন দুবার। তিনবার জীবন পাওয়া নাজিব আরও একবার বেঁচে যান সৌম্য সরকারের বদান্যতায়। দলীয় ৩৯.৩ ওভারে মাশরাফির বলে নাজিবের ক্যাচ নিতে পারেননি মুশফিক। দলের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১৭০ এবং নাজিবের শূন্য। ৪৪.২ ওভারে ডিপ কাভারে সাকিবের বলে নাজিব ফের জীবন পান সৌম্যর বলে। নাজিব তখন ১০ এবং দলের স্কোর ৬ উইকেটে ১৮৬। প্রথম দুটি মিস কাভার করে ফেলেছিল টাইগাররা। কিন্তু ৪৬.৫ ওভারে অভিষিক্ত মোসাদ্দেক সৈকতের বলে যে সহজ স্টাম্পিং মিস করেন মুশফিক, তা আর পূরণ করতে পারেনি মাশরাফিবাহিনী। দলের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১৯৬। স্টাম্পিং মিস করেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। হারের জন্য উইকেটরক্ষক মুশফিককে দায়ী করতে রাজি নন মাশরাফি, ‘মুশফিক স্টাম্পিং করলে ম্যাচটির রেজাল্ট হয়তো অন্যরকম হতো। জানি হারের জন্য অনেকেই মুশফিকের স্টাম্পিং মিসকে দায়ী করছেন, আমি তা মনে করি না। আমরা ভালো খেলিনি।’

প্রথম ম্যাচে তাসকিনের ম্যাজিকাল স্পেলে ৭ রানের ঘাম ঝরানো জয় পেয়েছিল টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডে জিততে জিততে হেরে যায় আফগানিস্তান। কাল ২ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় নিয়ে সিরিজে সমতা এনেছেন স্ট্যানিকজাই, নবীরা। ২০১৪ সালে স্ট্যানিকজাইয়ের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৩২ রানে জিতেছিল আফগানিস্তান। গতকালও স্ট্যানিকজাই ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন। ম্যাচসেরা নবী ১০ ওভারের স্পেলে ১৬ রানের খরচে ২ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রান করেন ৪৯। আফগানিস্তানের দুরন্ত পারফরম্যান্সে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি ব্যবধান নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ম্যাচজয়ী দলটি জিতে নেবে সিরিজ। গতকাল হারের পর সিরিজে নিজেদের টিকে থাকাকে অনেক বড় ভাবছেন টাইগার অধিনায়ক, ‘আমরা যে সিরিজে এখনো টিকে আছি, সেটাই অনেক বড়। প্রথম ম্যাচ জিতেছি হারতে হারতে। সিরিজ জিততে হলে অসাধারণ ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের।’ ম্যাচটি জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। একই সঙ্গে ওয়ানডে ক্রিকেটে জয়ের সেঞ্চুরিও পালন করত। কিন্তু তা হয়নি। তবে সুযোগ এখনো হাতছাড়া হয়নি। শনিবার জিতলেই সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি ওয়ানডেতে জয়ের সেঞ্চুরি করবে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর